ইউক্রেন দখলে এসে দেশটির সেনাবাহিনী ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে খেই হারিয়ে ফেলেছে আধুনকি সমরাস্ত্র সজ্জিত রাশিয়ার বিশাল বাহিনী। সেনা-নৌ-বিমান মিলিয়ে মাত্র ২ লাখ ৪৬ হাজার ৪৪৫ সশস্ত্র সদস্যের রণকৌশলে মুখ থুবড়ে পড়েছে রুশ বাহিনীর পদাতিক দক্ষতা। সোমবার পর্যন্ত টানা ৭৫ দিনের লড়াইয়েও কাবু করতে পারেনি ইউক্রেন বাহিনীকে। পশ্চিমা বিশ্লেষকরা বলছেন, চরম এই রণব্যর্থতার মধ্যে রাশিয়ার গোয়েন্দা তথ্য ও সেনা নেতৃত্বের অপটুতা প্রকাশ পেয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্রে নজিরবিহীন কৌশলগত অদক্ষতা সেটা আরও বেগবান করেছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার এ হতাশজনক পরিস্থিতি গোটা বিশ্বকেই অবাক করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা। খবর বিবিসির।
চলমান এ যুদ্ধে প্রায় ২৫০০ সেনা (মতান্তরে ৩৫০০-৪০০০) হারানোর পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্রও ধ্বংস হয়েছে বলে বিবিসি সূত্রে জানা গেছে। ইউক্রেন বাহিনীর পালটা হামলার মুখে এ পর্যন্ত ৬৭৫টি পদাতিক যুদ্ধযান হারিয়েছে রাশিয়া। ট্যাঙ্ক হারিয়েছে ৬১২টি। সাঁজোয়া যুদ্ধযান ৩৪৭টি। সেলফ-প্রোপেলড ও টউড কামান ধ্বংস হয়েছে ১৬৩টি। আর্মারড পার্সোনেল ক্যারিয়ার (সশস্ত্র সৈন্যবাহী যান) ১০৮টি। ড্রোন হারিয়েছে ৫৮টি। ৩৯টি হেলিকপ্টার ও ২৬টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে। যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস হয়েছে ৬টি। রুশ সমরাস্ত্রের এই ক্ষয়ক্ষতির নির্ভরযোগ্যতার বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিডিও ও ছবি দেখে এসব ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে। রাশিয়া ও ইউক্রেন নিয়মিত প্রতিপক্ষের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য দিয়ে আসছে। রাশিয়ার এ ক্ষয়ক্ষতি নিয়েও ভিন্ন তথ্য রয়েছে পশ্চিমা গণমাধ্যমে। কোথাও বলা হচ্ছে সশস্ত্র সৈন্যবাহী যানই ধ্বংস হয়েছে ১৫২৩টি। সেলফ-প্রোপেলড ৩৯৭টি। যুদ্ধজাহাজ ৮টি। বিশ্লেষকরা বলছেন, দুপক্ষই একে অপরের ক্ষয়ক্ষতি বাড়িয়ে দেখছেন। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও নতুন যুদ্ধকৌশলে প্রশিক্ষিত রুশ বাহিনীর ইউক্রেন রণকৌশলে তাদের সাবেক রেড আর্মির বিবর্ণ চেহারাই ফুটে উঠেছে। বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ বাহিনীর আক্রমণেও একই ধরনের ভুল দেখা যাচ্ছে। যোগাযোগ ও সরঞ্জামের মতো আধুনিক যুদ্ধের প্রধান উপাদান অদক্ষ হাতে পরিচালনা করা হয়েছে। সর্বোপরি, অপ্রত্যাশিতভাবে এ সংঘাতে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়া একটি সেনাবাহিনী ভুলগুলো থেকে সামান্যই শিক্ষা নিয়েছে বলে মনে করছেন পশ্চিমা বিশ্লেষকরা।