আজ ঈদের আনন্দ প্রতিটি ঘরে ঘরে। কিন্তু কোনো অসাবধানতায় যেন এই খুশি ফিকে না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখা বিশেষ জরুরি। পরিবারের প্রতিটি সদস্যের সুরক্ষায় তাই আসুন জেনে নিই কোন কোন লক্ষণ দেখলে উচ্চ মাত্রার প্রোটিন সমৃদ্ধ কোরবানির মাংস খাওয়া থেকে নিজে বিরত থাকবেন এবং পরিবারের অন্য সদস্যকেও মাংস খাওয়া থেকে বিরত রাখবেন।
শরীরে প্রয়োজনীয় উপাদানগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম খাবার হিসেবে প্রোটিনকে ধরা হয়। আর এই প্রোটিনের অন্যতম উৎস হলো মাংস। মাংস সাধারণত উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। তাই এই মাংস খাওয়ার সময় একটু সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে যদি ঘরে অসুস্থ সদস্য থাকে। খবর বিবিসি ও ইনসাইডার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত ৮টি উপসর্গ রয়েছে যেগুলো দেখলে মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে আপনাকে। কারণ, এসব উপসর্গে আমাদের শরীর মাংস প্রক্রিয়াকরণ বা পরিপাকে সামর্থ্য থাকে না। এগুলো হলো:
১. পেটে গ্যাস বা অ্যাসিডিটি: যদি হঠাৎই পেটে গ্যাস বা অ্যাসিডিটি সমস্যায় পড়েন, তবে এমন পরিস্থিতিতে মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকেতে হবে। কেননা, এ অবস্থায় মাংস খেলে আপনার বমিভাবের সঙ্গে অস্থিরতা এবং শারীরিক নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে।
২. অস্বস্তিভাব: বেশি মাংস খাওয়ার পর অনেকেরই অনাকাঙ্ক্ষিত অস্বস্তিবোধ শুরু হতে পারে। এই উপসর্গ পাকস্থলীর অসুস্থতাকে জানান দেয়। আর পাকস্থলী অসুস্থ থাকলে সঠিকভাবে মাংস হজমে ব্যর্থ হয়। তাই এ সময় ভুলেও মাংস খাওয়া যাবে না।
৩. বমিভাব: যদি আপনার বমিভাবের মতো লক্ষণ দেখেন, তবে এ সময় হজমে বেশি সময় প্রয়োজন হয় এমন কোনো খাবার গ্রহণ না করাই ভালো। বমিভাব এড়াতে সহজপাচ্য কোনো খাবারই বেছে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
৪. উচ্চ রক্তচাপ: ঈদের দিন যদি কারো উচ্চ রক্তচাপ বা হাই প্রেশার থাকে, তবে চিকিৎসকরা এসব রোগীকে যেকোনো মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন।
৫. কোষ্ঠকাঠিন্য: কোষ্ঠকাঠিন্য পাচনতন্ত্রের একটি ত্রুটি। যারা এ সমস্যায় আগে থেকেই ভুগছেন, তারা এ সময় কম পরিমাণে মাংস খাওয়ার চেষ্টা করবেন। কোনো কারণে যদি এ সমস্যা ঈদের এই সময়গুলোতে আরও বেশি পরিমাণে বেড়ে যায়, তবে এ পরিস্থিতিতে মাংস খেলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যে সমস্যা আরও বেড়ে যায়।
৬. কিডনির সমস্যা: কিডনি রোগীরা কোরবানির মাংস খেতে চাইলে অবশ্যই একজন দক্ষ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমিত মাংস খেতে পারবেন।
৭. অন্যান্য শারীরিক অসুস্থতা: যেসব রোগে মাংস খাওয়া মোটেও নিরাপদ নয় কিংবা ঝুঁকি রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও মাংস খাওয়ার একজন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
৮. অ্যালার্জি: যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাদের অবশ্যই কোরবানির মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কেন এই মাংস খাওয়ার ফলে তাদের শরীরে অ্যালার্জির তীব্রতা বেড়ে যায়। সমস্যা সৃষ্টি হয় ত্বক ও চোখের বিভিন্ন অংশে।
এ ছাড়া শরীরে ও নিশ্বাসে দুর্গন্ধ থাকলেও মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৩ আউন্স বা ৮৫ গ্রাম মাংস খাবার হিসেবে গ্রহণ করতে পারবে। তবে ব্রিটেনের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের মতে, কারোরই প্রতিদিন ৭০ গ্রামের বেশি এবং সপ্তাহে ৫০০ গ্রামের বেশি প্রোটিন খাওয়া উচিত নয়।