আমাদের দৈনন্দিন খাবারের নানা পদে ধনেপাতার ব্যবহার দেখা যায়। মূলত মসলার ব্যবহারের বিকল্প হিসেবে ধনেপাতা বেশি ব্যবহার হয়, যা রান্নার স্বাদ বাড়ায় বহু গুণ। এমনকি শুধু স্বাদে নয়, ধনেপাতা স্বাস্থ্যগুণেও অনন্য। প্রতিদিন ধনেপাতা খেলে অনেক রোগ থেকেই রক্ষা পাওয়া যায়। কিন্তু যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে কি ধনেপাতা খাওয়া স্বাস্থ্যকর?
ধনেপাতায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন কে ও প্রোটিন পাওয়া যায়। ধনেপাতা এমন এক সবজি, যা সবসময় খাবারের সুঘ্রাণ ও স্বাদ বাড়াতে সাহায্য করে। তবে আমাদের অনেকেরই জানা নেই ধনেপাতার রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ।
এ ছাড়া ডাল, তরিতরকারিজাতীয় খাবারের থেকে মুড়ি মাখা, আলুভর্তা, ফুচকার মতো মুখরোচক খাবারে ধনেপাতার জুড়ি মেলা ভার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীরের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী এই ধনেপাতা। এ সবজিটি অনেক রোগ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সুস্থ রাখে মস্তিষ্কও। এমনকি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের জন্য ধনেপাতা অনেক বেশি উপকারী।
যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে তারা যেসব কারণে ধনেপাতা খাবেন:
১. হৃদ্রোগের আশঙ্কা কমাতে কাজে আসতে পারে ধনেপাতা। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এই পাতা শরীর থেকে অতিরিক্ত সোডিয়াম বের করে দিতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, ধনেপাতায় থাকে এমন কিছু উপাদান, যা ক্যালসিয়াম, আয়রন ও অ্যাসিটাইল কোলিনের সঙ্গে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে কমায় উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা, ভালো রাখে হৃদ্যন্ত্র।
২. ধনেপাতায় রয়েছে টারপিনিন, কয়ারসেটিন ও টোকোফেরলের মতো নানা ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্টগুলো জারণঘটিত ক্ষতি হ্রাস করতে ও প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে।
৩. ধনেপাতার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধশক্তি বাড়াতেও সহায়তা করে। অনেকের মতে, ধনেপাতা হজমশক্তি ভালো রাখতে ও খিদে বাড়াতে সহায়তা করে।
৪. সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা বলছে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও কাজে আসতে পারে ধনেপাতা। ইঁদুরের ওপর করা কিছু গবেষণা বলছে, এই পাতা খেলে শরীরে উৎসেচকের ভারসাম্য বজায় থাকে। আর তার প্রভাবেই ঠিক থাকে গ্লুকোজের মাত্রা।
৫. ধনেপাতার জীবাণুনাশক গুণ রয়েছে। ধনেপাতা সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। তবে মনে রাখতে হবে, সবার শরীর সমান নয়, তাই ব্যক্তিভেদে একেকটি খাবারের প্রতিক্রিয়া একেক রকম হতে পারে। ফলে কোনো খাবার নিয়মিত খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া উচিত।
সূত্র: আনন্দবাজার