অবশেষে শেরপুরে রেললাইন

দেশজুড়ে

জুন ২৩, ২০২৪ ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ

ছামিউল আলম সোহান, শেরপুর সদর (শেরপুর)।।

অবশেষে শেরপুর জেলায় রেললাইন স্থাপন করা হচ্ছে। সম্প্রতি রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক জামালপুরের পিয়ারপুর স্টেশনে আন্তঃনগর তিস্তা ট্রেনের আনুষ্ঠানিক যাত্রাবিরতির উদ্বোধন শেষে এক জনসভায় রেলপথ স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন।

এতে শেরপুর জেলাবাসী তথা জেলার ওপর দিয়ে যাতায়াতকারী জামালপুর জেলার বক্সীগঞ্জ, কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারি ও রাজিবপুর উপজেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে।

ব্রিটিশ আমলে উপমহাদেশের বিভিন্ন প্রদেশে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার রাংটিয়া থেকে শেরপুর সদর হয়ে জামালপুর জংশন পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের চিন্তাভাবনা করা হয়। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর বিষয়টি স্থবির হয়ে যায়।

তবে সত্তর দশকের শেষদিকে রেল বিভাগ পুনরায় জামালপুর-রাংটিয়া রেললাইন স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু করে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সে উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি। শেরপুরে রেললাইনের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হলেও কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

৮ জুন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক জামালপুরের পিয়ারপুর স্টেশনে আন্তঃনগর তিস্তা ট্রেনের আনুষ্ঠানিক যাত্রাবিরতির উদ্বোধন শেষে মহারাজা শশীকান্ত স্কুল এ্যান্ড কলেজ মাঠে আয়োজিত এক জনসভায় পিয়ারপুর থেকে শেরপুরে রেলপথ স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন।

রেলওয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর জেলার পিয়ারপুর রেলস্টেশন থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর দিয়ে শেরপুর জেলা শহর পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার রেল লাইনের প্রাথমিক সম্ভাব্যতায় ৫৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এদিকে শেরপুরে রেললাইন হওয়ার খবরে জেলার সর্বস্তরের মানুষ সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। বর্তমানে শেরপুর থেকে ময়মনসিংহ হয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়ক পথে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার বিভিন্ন পণ্য পরিবহন করা হচ্ছে।

এছাড়া সড়ক পথে প্রতিদিন শতাধিক যাত্রীবাহী বাস চলাচল করলেও ২০০ কিলোমিটার দূরত্বের রাজধানী ঢাকা যেতে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা সময় লাগছে। অথচ দূরত্ব অনুযায়ী শেরপুর-ঢাকা সময় লাগার কথা ৩ ঘণ্টা। দীর্ঘ সময়ের জন্য যাত্রী সাধারণকে যেমন ভোগান্তি পোহাতে হয় তেমনি পণ্য পরিবহনেও নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

শেরপুরে রেললাইন স্থাপন করা হলে সাধারণ মানুষের যেমন ভোগান্তি কমবে তেমনি পণ্য পরিবহনের ব্যয় অনেকাংশে কমে যাবে।

রেলওয়ের ডিজি তোফাজ্জল হোসেন শেরপুরে নতুন রেললাইন স্থাপন সিদ্ধান্তের বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে জানান, শেরপুরে রেললাইন স্থাপন করার জন্য সব সার্ভে শেষ করা হয়েছে। এ সরকারের আমলেই শেরপুরে রেললাইন স্থাপনের কাজ শেষ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *