সৌদির মোহে পড়েননি বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা

সৌদির মোহে পড়েননি বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা

খেলা

সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৩ ১:০৫ অপরাহ্ণ

লোকে বলে টাকাই নাকি সব। টাকা থাকলে বাঘের চোখও নাকি মেলে। কে জানে হতেও পারে! তবে সবাইকে একপাল্লায় মাপাটা ঠিক হবে না। কেউ কেউ টাকা দিয়ে বাঘের চোখ কিনতে চাইলেও কেউ আবার টাকার চেয়ে ভালোবাসা, নিজের পছন্দকেই গুরুত্ব দেন। সেই দলে যেন কাতার বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নদের বাস।

সৌদির অর্থের ঝনঝনানির কাছে গোটা ইউরোপ যেন অসহায়। ‘লোভনীয়’ প্রস্তাবে রাজি হয়ে একের পর এক তারকা পাড়ি জমাচ্ছেন মরুর দেশটিতে। তবে উল্টো চিত্র আলবিসেলেস্তেদের বেলাতে। সবাই যখন মরুর দেশের পথে যাত্রা করছে, তখন আর্জেন্টিনার বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা সৌদি ক্লাবগুলোর প্রস্তাব ফিরিয়ে দিচ্ছেন। কিছুতেই সৌদির মোহে পড়েননি তারা।

যে তালিকায় সবশেষ নাম অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের তারকা ফরোয়ার্ড অ্যাঞ্জেল কোরেয়া। তাকে সৌদির একটি ক্লাব ‘লোভনীয়’ প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু এই আর্জেন্টইন তাদের প্রস্তাবে রাজি হননি। তার আগে বিশ্বকাপ সেরা গোলকিপার হওয়া অ্যাস্টন ভিলার এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে কিনতে চেয়েছিল প্রো লিগের ক্লাব আল ইত্তিহাদ। কিন্তু তিনিও সোজা জানিয়ে দেন, অ্যাস্টন ভিলাই তার কাছে সেকেন্ড হোম।

শুধু তাই নয়, সময়ের অন্যতম সেরা তারকা অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া যখন জুভেন্টাস ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তখন আমেরিকার মেজর সকার লিগের (এমএলএস) পাশাপাশি সৌদি প্রো লিগ থেকেও প্রস্তাব আসে। কিন্তু তিনি বেছে নন সাবেক ক্লাব বেনফিকাকে। যদিও বেনফিকা থেকে কয়েকগুণ বেশি বেতন পেতেন তিনি যদি সৌদিতে যেতেন। কিন্তু ডি মারিয়া টাকার চেয়ে ভালোবেসেছেন ফুটবলকে। কারণ তিনি অতীতকে মনে রেখেছেন। যে বেনফিকায় ক্যারিয়ারের শুরুর সময়টা কাটিয়েছেন। যেখানে ঝলক দেখিয়ে বিশ্বের সেরা সব ক্লাবের নজর কেড়েছেন সেখানেই শেষ পর্যন্ত ফিরলেন। বেনফিকাকে গুরুত্ব দেওয়ায় ক্লাবটিও তাকে জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে বরণ করে নেয়।

সৌদির ক্লাবগুলো থেকে একের পর প্রস্তাব আসতে থাকে। এরই মধ্যে ইউরোপ থেকে আরো কয়েকজন যোগ দেন সৌদির ক্লাবগুলোতে। কাতার বিশ্বকাপে মরক্কোর গোলপোস্ট আগলে রাখা গোলকিপার ইয়াসিন বোনো লা লিগা ছেড়ে চলে যান। লিভারপুল থেকে বায়ার্ন মিউনিখে গিয়ে সুবিধা করতে না পেরে সৌদির আল নাসরে যোগ দেন সাদিও মানে।

এত এত তারকা ফুটবলারের ইউরোপ ত্যাগের পরও গললো না আর্জেন্টিনার বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মন। রদ্রিগো ডি পল, নিকোলাস ওতামেন্ডি, পাওলো দিবালা, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, পারদেস এমনকি ইন্টার মিলানের মার্টিনেজকেও বাদ রাখেনি তারা। কিন্তু কেউই সৌদিতে যাওয়ার আগ্রহ দেখাননি।

প্রথম প্রস্তাব তো লিওনেল মেসিকে দেওয়া হয়। যখন লিও পিএসজি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। তখনি সৌদির আল হিলাল ৪০০ মিলিয়ন ইউরোর বিশাল প্রস্তাব পাঠায় মেসির জন্য। কিন্তু মেসি তার প্রথম প্রেম-বার্সায় ফিরতে চান। কাতালনরাও তাকে নিতে আগ্রহ দেখায়। শেষ পর্যন্ত মেসিকে নাকি কোনো প্রস্তাব দেয়নি জাভির বার্সা। তাই বাধ্য হয়ে আমেরিকার মেজর লিগে নাম লেখান। যদিও তার আগে আল হিলালকে না বলে দেন এই আর্জেন্টাইন সুপারস্টার।

এরপর মেসিকে না পেয়ে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে প্রস্তাব দেয় ক্লাবটি। তখন এমবাপ্পের সঙ্গে পিএসজির সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিলো না। শুরুতে পিএসজি কিলিয়ানকে বিক্রি করতে রাজি হলেও এমবাপ্পে তাদের ডাকে সাড়া দেননি। সবশেষ নেইমারকে দলে টানে আল হিলাল। আগামী ১ সেপ্টেম্বর গ্রীষ্মের দলবদলের উয়েফার জোন বন্ধ হলো। কিন্তু কোনো আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলারকে ‘হ্যাঁ’ বলাতে পারেনি সৌদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *