নভেম্বর ৫, ২০২৪ ৬:৩০ পূর্বাহ্ণ
শরীর সুস্থ রাখার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম, আহার ও বিশ্রাম দরকার। তবে বর্তমান প্রজন্ম এগিয়ে গেছে অনেক ক্ষেত্রে। অত্যাধুনিক স্মার্ট ডিভাইস, জীবনমানের উন্নয়ন ও পরিবর্তন সবই হচ্ছে সময়ের সঙ্গে। আর এসবের কারণে রাত জাগার প্রবণতাও বাড়ছে দিন দিন। রাতে ঘুম কম হলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হলে রাত জাগার ‘বদঅভ্যাস’ পরিবর্তন করতে হবে।
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, টানা কয়েকদিন রাত জাগলে শরীর ভেতর থেকে ভাঙতে শুরু করে। শরীরে বাসা বাঁধে নানারকম রোগ-ব্যাধি। এমনকি কমে যায় আয়ুও। আর কী কী ক্ষতি হতে পারে চলুন জেনে নিই সেই সম্পর্কে-
চেহারার সজীবতা হারায়
এত এত সৌন্দর্যবর্ধনকারী পণ্য ব্যবহার করার পরও চোখের চারপাশে কালো দাগ বা ডার্ক সার্কেল, ব্রণ, ত্বকে শুষ্কতার সমস্যায় ভুগছেন? একটু খেয়াল করে দেখবেন আপনার ঘুমের রুটিন ঠিক আছে কি না। দৈনিক কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা পরিপূর্ণ ঘুম আদৌ কি হচ্ছে? নিয়মিত সঠিক সময়ে ঘুমিয়ে পড়ুন। কেননা অতিরিক্ত রাত জাগা ও পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার কারণেই এই সমস্যাগুলো দেখা দেয়।
কাজের গতি হারিয়ে যায়
রাতে পরিপূর্ণ ঘুম না হলে ঘুম ঘুম ভাব সারা দিন বিরাজ করে। এমন হলে মস্তিষ্কে চাপ পড়ে। ফলে কাজে উদ্দীপনা থাকে না। কাজে মনোযোগও আসে না। কমে যায় কাজের গতি।
মানসিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটে
পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ায় মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে। তখন সব কাজেই বিরক্তি আসে এবং ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে কারও সঙ্গে সহজে ভালো ব্যবহার করা যায় না। এতে বিভিন্ন সম্পর্কের অবনতি হয়, যার প্রভাব পারিবারিক ও মানসিক—উভয় ক্ষেত্রেই লক্ষণীয়। যারা প্রায়ই রাত জাগেন, তাদের উদ্বিগ্নতা, অবসাদ ও বাইপোলার ডিজঅর্ডারে ভোগার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এমনকি রাতে না ঘুমানোর সঙ্গে আত্মহত্যার প্রবণতারও সম্পর্ক রয়েছে বলে গবেষকেরা জানান।
বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা
পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ায় অরুচি বেড়ে যায় রাত জেগে যারা কাজ করেন, তাদের অনেকেই অনেক বেশি চা-কফি পান করেন, যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আবার অনেকের রাত জাগার সঙ্গী ধূমপান। নিকোটিন শরীরের জন্য কত ক্ষতিকর, তা বলার অপেক্ষা রাখে না নিশ্চয়ই। ঘুমের সময় ঠিক না থাকলে খাওয়ার সময়ও এলোমেলো হয়। যেমন আপনি যদি রাতের খাবার রাত আটটায় খেয়ে রাত দুইটা-তিনটায় ঘুমাতে যান, অবশ্যই আপনি ক্ষুধা নিয়ে ঘুমাতে যাবেন।
দীর্ঘ সময় না খেয়ে থেকে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তৈরি করছেন আপনি নিজেই। আবার রাত দুইটা-তিনটায় যদি আপনি খাবার খান, তাহলে হজম প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে, যার ফলে বদহজম খুব সাধারণ সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। দেহঘড়ির পরিবর্তনের প্রভাব যেমন দৈনন্দিন কাজে পড়ে, তেমনি কিন্তু কমে যায় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। ফলে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগের মতো ঝুঁকিপূর্ণ রোগগুলো শরীরে বাসা বাঁধে অনায়াসেই।
বেঁচে থাকতে হলে সুস্থতা খুবই প্রয়োজন
হয়তো রাত জেগে আপনি অনেক ভালো আয় করছেন কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে অসাধারণ সময় পার করছেন। কিন্তু শরীরের হরমোনগুলোর ভারসাম্যহীনতা করছে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি। প্রতিদিন নিয়মমতো পর্যাপ্ত ঘুম আপনার শরীর, মন ভালো রাখবে। আশপাশের সব কাজও সুন্দরভাবে হতে সহায়তা করবে।