উত্তর কোরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে চীনা সীমান্তের কাছে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। সেখানের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে সামরিক হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট কিম জং উন উদ্ধার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে মাঠে নেমেছেন।
প্রকশিত ছবিতে দেখা গেছে, কিম জং উন একটি বিমানবন্দরের মাঠে কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষেণ করছেন। এরপর তিনি গাড়িতে করে বন্যার অবস্থা দেখতে রাস্তায় বের হন।
সংবাদপত্র রোডং সিনমুনের মতে, চীনের সীমান্তবর্তী সিনুইজু শহর এবং উইজু কাউন্টিতে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে কৃষিজমি এবং ঘরবাড়ি নিমজ্জিত হয়েছে। তবে প্রতিবেদনে হতাহতের কোনো পরিসংখ্যান উল্লেখ করা হয়নি।
এতে বলা হয়েছে, ‘১০টিরও বেশি বিমান পর পর ২০টির মতো রাউন্ড-ট্রিপ ফ্লাইট করে উত্তর কোরিয়ার চার হাজার ২০০ জনেরও বেশি বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়েছে।’
সংবাদপত্র রোডং সিনমুনের কিছু ছবিতে দেখা যায়, কিম তার কালো লেক্সাস গাড়িতে চড়ে বন্যার পানির মধ্যে দিয়েই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বেড়িয়েছেন।
আবার কেসিএন ছবিতে দেখিয়েছে, কিম একটি বিমানবন্দরে প্রচণ্ড বাতাসের মধ্যে কর্মকর্তাদের সঙ্গে এবং একটি কালো গাড়ির পেছনের জানালা থেকে বন্যার পরিমাণ পর্যবেক্ষণ করছেন। এই অভিযানে ১০টি হেলিকপ্টার এবং নৌবাহিনী ও সরকারি নৌকাও ব্যবহার করা হয়েছে।
কিম জং উন বলেন, ‘কর্মকর্তারা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়ে নিজেদের অসহায় এবং আশাহীন মনে করছেন। সক্রিয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরিবর্তে তারা দুর্যোগ মোকাবেলায় ভাগ্য বা বাহ্যিক সাহায্যের ওপর নির্ভর করছেন।’
উত্তর কোরিয়ায় রেকর্ড বৃষ্টিপাত দেখা গেছে। এই মাসের শুরুর দিকে কেসং শহরে এক দিনে ৪৬৩ মিমি (১৮.২ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার আবহাওয়া প্রশাসন জানিয়েছে, এটি উত্তর কোরিয়ায় গত ২৯ বছরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। উত্তর কোরিয়ায় বন্যা প্রায়ই গুরুতর ক্ষতি করে। কারণ, সেখানে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা খারাপ এবং জরাজীর্ণ অবকাঠামো রয়েছে।
২০২০ সালে টাইফুন এবং ভারি বৃষ্টিপাত কিমের মতে দেশের মধ্যে ‘একাধিক সংকট’ সৃষ্টি করেছিল।
এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ উত্তর কোরিয়ায় খাদ্য ঘাটতি এবং দুর্বল অবকাঠামোর মতো বিদ্যমান সমস্যাগুলোকে আরো জটিল করে তুলতে পারে।
সূত্র: বিবিসি