চার ইসরাইলিকে বাঁচাতে ২১০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা!

চার ইসরাইলিকে বাঁচাতে ২১০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা!

আন্তর্জাতিক

জুন ৯, ২০২৪ ১০:০১ পূর্বাহ্ণ

গত ৭ অক্টোবর হামলা চালিয়ে নোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যাল থেকে আড়াই শতাধিক ইসরাইলিকে জিম্মি করে হামাস। সম্প্রতি মধ্য গাজায় অভিযান চালিয়ে তাদের মধ্য থেকে চারজনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।

শনিবার রাফাহসহ মধ্য ও উত্তর গাজার বেশ কয়েকটি স্থানে আকাশ, স্থল ও নৌপথে চালানো ওই যৌথ অভিযানে ২১০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) উদ্ধারকৃতদের নাম-পরিচয়ও সামনে এনেছে। তারা হলেন- নোয়া আরগামানি (২৫), আলমোগ মেইর জান (২১), আন্দ্রেই কোজলভ (২৭) এবং শ্লোমি জিভ (৪০)।

গাজায় হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের আট মাসের মাথায় জিম্মি উদ্ধারের এই বিরল ঘটনা ঘটলো। গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা সীমান্ত সংলগ্ন ওই সঙ্গীত উৎসব এবং দক্ষিণ ইসরাইলের অন্যান্য অঞ্চলে হামলা চালায় হামাস। এসময় তারা ২৫১ জনকে জিম্মি করে। যাদের মধ্যে ১১৬ জন এখনও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বন্দি রয়েছে এবং ৪১ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী৷ওই সময় চীনা বংশোদ্ভূত ইসরাইলি নাগরিক নোয়া আরগামানিকেও উৎসব থেকে অপহরণ করা হয়।

নভেম্বরে অবশ্য সপ্তাহব্যাপী একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয় হামাস। ওই সময় ইসরাইলি কারাগারে বন্দি ২৪০ ফিলিস্তিনির মুক্তির বিনিময়ে ১০৫ জিম্মিকে ছেড়ে দেয় সংগঠনটি।

আইডিএফ জানিয়েছে, ইসরাইল সিকিউরিটি এজেন্সি এবং ইসরাইল পুলিশের যৌথ অভিযানে মধ্য গাজার নুসিরাতের দুটি পৃথক স্থান থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।

উদ্ধারকৃতদের বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে আইডিএফ জানায়, তারা ভালো রয়েছে। তবে তাদের আরও চিকিৎসামূলক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ‘শেবা’ তেল-হাশোমার মেডিকেল সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এদিকে হামাস শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, অভিযানে শিশুসহ অন্তত ২১০ জন নিহত এবং আরো বেশ কিছু মানুষ আহত হয়েছেন। আল-আকসা হাসপাতালের কর্মীরা আহতদের চিকিৎসা করতে হিমশিম খাচ্ছেন।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষে থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে জানানো হয়েছে, ‘বেশ কয়েকজন আহত মানুষ লুটিয়ে পড়ে আছেন এবং চিকিৎসকরা তাদের সাধারণ চিকিৎসা ক্ষমতা দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।’

এদিকে দ্য হোস্টেজ ফ্যামিলি ফোরাম নামে ইসরাইলি জিম্মিদের পরিবারের প্রতিনিধিত্বকারী একটি গ্রুপ ওই চার জিম্মিকে উদ্ধার প্রক্রিয়াকে একটি ‘অলৌকিক বিজয়’ বলে উল্লেখ করেছে এবং ‘বীরত্বপূর্ণ অপারেশন’র জন্য আইডিএফকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।

গ্রুপটি বলেছে, ‘ইসরাইল সরকারকে অবশ্যই হামাসের হাতে বন্দি ১২০ জিম্মিকে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি মনে রাখতে হবে।’

এদিকে নুসিরাতের সামরিক অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়া বলেছেন, ‘ইসরাইল হামাসের ওপর তার পছন্দ চাপিয়ে দিতে পারবে না। হামাস অবশ্যই ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তা অর্জন না করা পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তি করবে না।’

সূত্র: বিবিসি ও আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *