রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধ নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভিডিওকলে সোমবার কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ সময় দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দেন। এ সময় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর রাশিয়া থেকে তেল ও গ্যাস কেনার ব্যাখ্যা দেন যুক্তরাষ্ট্রকে।
এস জয়শঙ্কর বলেন, দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা রাখতে জ্বালানির সরবরাহ অব্যাহত রাখতে হবে। এ মুহুর্তে হঠাৎ করে ইউরোপ থেকে জ্বালানি আনা খুবই ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ। এ কারণে ভারত থেকে কমমূল্যে অপরিশোধিত তেল আমদানি করছে।
ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কোয়াড নামে একটি জোট গঠন করেছে। এই জোটে থাকা দেশগুলোর মধ্যে ভারত ছাড়া বাকি সব দেশ রাশিয়ার তীব্র সমালোচনা করেছে। এ নিয়ে মার্কিন সমালোচনার মধ্যে পড়ে ভারত। অবশেষে সোমবার বিষয়টি খোলাসা করে বলল ভারত।
এছাড়া বৈঠকে বাইডেনকে মোদি বলেছেন, তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বারবার অনুরোধ করেছেন তারা যেন সরাসরি আলোচনায় বসেন।
তাছাড়া বাইডেনের সঙ্গে আলোচনায় মোদি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের দ্বন্দ্ব উদ্বেগজনক। তিনি নিরীহ বেসামরিক লোকদের হত্যারও নিন্দা জানিয়েছেন।
মোদি এ ব্যাপারে বাইডেনকে বলেন, আমরা আশা করি চলমান আলোচনা রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি নিয়ে আসবে। এছাড়া আমরা ইউক্রেনের জনগণের নিরাপত্তা ও অব্যাহত মানবিক সাহায্যের বিষয়ের ওপর জোর দিচ্ছি।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে ভারত রাশিয়া থেকে বিশেষ ছাড়ে কমপক্ষে ১৩ মিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কিনেছে।
এর আগে মার্চে তথাকথিত ‘কোয়াড’ জোটের আলোচনায় এ দুই নেতা রুশ হামলার বিষয়ে যৌথ নিন্দা প্রকাশে ব্যর্থ হয়েছিলেন। কোয়াডভুক্ত দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, ভারত অস্ট্রেলিয়া ও জাপান।
এদিকে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবে ভোট দিতে ভারত অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। এ প্রেক্ষিতে এপ্রিলের প্রথম দিকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভ নয়াদিল্লীতে মোদির সাথে সাক্ষাতকালে যুদ্ধ নিয়ে ভারতের অবস্থানের প্রশংসা করেন। তবে বাইডেন গত ২১ মার্চ বলেছেন, মার্কিন মিত্রদের মধ্যে ভারতই ব্যতিক্রমভাবে রুশ হামলার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে একটি দ্বিধান্বিত অবস্থান নিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়া এখনও ভারতের অস্ত্রের বৃহত্তম যোগানদাতা এবং ভারত বৃহত্তম ক্রেতা।