ক্রিকেট মাঠে ভালো করতে ক্রিকেটাররা নানা পন্থা অবলম্বন করেন। কেউ অনুশীলনে জোর দেন, কেউবা ফিটনেস মেইনটেনে যত্নশীল হন। তবে ভালো পারফরম্যান্স করতে মাইন্ড ট্রেনিংয়ের কথা কি কেউ শুনেছেন? তাসকিন আহমেদ থেকে শুরু করে সাব্বির রহমান কিংবা সৌম্য বা নুরুল হাসান সোহান–২২ গজের ব্যর্থতা কাটাতে সবাই ছুটছেন এক মাইন্ড ট্রেনারের কাছে। কে তিনি?
সাব্বির রহমান, নুরুল হাসান কিংবা সৌম্য সরকার–সাম্প্রতিক সময়ে ফর্মহীনতায় ভুগতে থাকা এসব ক্রিকেটারকে দেখা গেছে এক ব্যক্তির সঙ্গে। ক্রিকেট মাঠের ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলতে যারা কিনা দ্বারস্থ হয়েছেন মাইন্ড ট্রেনারের।
শুরুটা হয় তাসকিন আহমেদকে দিয়ে। সম্প্রতি যিনি বল হাতে দুর্দান্ত এক প্রত্যাবর্তন করেছেন বাইশ গজে। তার এ ফিরে আসার গল্পের পার্শ্বনায়ক সাবিত রায়হান। পেশায় যিনি একজন মাইন্ড ট্রেনার। তাসকিনের সফলতা দেখে যার কাছে ছুটে যাচ্ছেন আরও অনেক ক্রিকেটার।
সাবিত ইন্টারন্যাশনালের ফাউন্ডার সাবিত রায়হান বলেন, ‘কাজ শুরু হয় তাসকিন আহমেদের সঙ্গে। পেশাগতভাবে তার সঙ্গে আমাদের লম্বা সময় ধরে কাজ চলে। পরবর্তীকালে তাসকিনের রেফারেন্সেই বাকিরা এসেছেন। মাইন্ড ট্রেনিং তাদের সাহায্য করেছে।’
শুধু তাসকিন নন, সোহান কিংবা সাব্বিররাও ফল পাচ্ছেন মাইন্ড ট্রেনিংয়ে। চলতি ডিপিএলে মাইন্ড ট্রেনিংয়ের কোর্স করেই সফল হয়েছেন তারা। হাঁকিয়েছেন সেঞ্চুরি। যদিও ক্রিকেটারদের এমন সাফল্যের বড় কৃতিত্ব তাদের দক্ষতা আর পরিশ্রমকেই দিতে চান সাবিত।
সাবিত রায়হান বলেন, ‘তারা মাঠ থেকে বের হয়েই ফোন করেছেন। তারা যে উপকার পেয়েছেন, তা আমার সঙ্গে শেয়ার করেছেন। যদি দক্ষতা না থাকে, কৌশল জানা না থাকে, তখন মাইন্ড ট্রেনিং আপনাকে ভালো পারফর্ম করতে সাহায্য করবে না।’
সম্ভাবনার আলো ফুটিয়ে আবির্ভাব করলেও সময়ের পরিক্রমায় হারিয়ে গেছেন অনেক ক্রিকেটার। দক্ষতা থাকলেও মাঠে তার প্রতিফলন না দেখাতে পারায় মেনে নিতে হয়েছে করুণ পরিণতি। মূলত মানসিকভাবে পিছিয়ে থাকা কিংবা আত্মবিশ্বাসের অভাবই এসবের মূল কারণ।
সাবিত রায়হান আরও বলেন, ‘একজন খেলোয়াড় গত মাসে দারুণ পারফর্ম করে এলেন; কিন্তু এ মাসে এসে লাগাতার তার পারফরম্যান্স খারাপ হচ্ছে, তার মানে কি এক মাসে তার স্কিল হারিয়ে গেছে? তাহলে সমস্যা কোথায় হচ্ছে? তো ওই জায়গাটাই হচ্ছে মাইন্ডের জায়গাটা। কোনো একটা জায়গায় হয়তো আতঙ্কিত হচ্ছে, কোনো একটা জায়গায় হয়তো প্রত্যাশার চাপ চলছে, হয়তো দুচিন্তা কোথাও তার মনে চেপে আছে, যেটা সে নিজে নিজে বের করতে পারছে না। এ ক্ষেত্রে মাইন্ড ট্রেনিং কার্যকর হয়।’
হতাশা-ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলতে, মনোবিদদের দ্বারস্থ হতে দেখা যায় বিদেশি অ্যাথলিটদের। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমন কিছু খুবই বিরল। ক্রিকেটারদের সেরাটা পেতে মনোবিদ নিয়োগের ব্যাপারে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নিজেদের ভাবনার কথা জানালেও তা বাস্তবায়িত হয়নি এখনো। তাসকিন-সোহানদের এমন প্রত্যাবর্তনের পর সেই ভাবনা আলোর মুখ দেখে কি না, সেটাই এখন দেখার।