কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় শহিদ, আহত, পঙ্গু ও গ্রেফতার সবার স্মরণে আজ দেশব্যাপী ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুল কাদের প্রদত্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের সমর্থনকারী ছাত্র-জনতা কাউকে পেলেই গ্রেফতার ও নির্যাতন চালানো হচ্ছে। পরবর্তীতে বাছাই করে পাড়া মহল্লায় রেইড দিয়ে গণগ্রেপ্তারের নামে গ্রেফতার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। গুম করার হুমকি দিয়ে আদায় করছে মোটা অঙ্কের অর্থ। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়জন সমন্বয়কসহ অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে বুধবার গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয় থেকে ছেড়ে দিলেও এখনো ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আক্তার হোসেন, সমন্বয়ক আরিফ সোহেলসহ অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে কারাগার ও রিমান্ডে নির্যাতন করছে। জুলুম নির্যাতনে নিষ্পেষিত ছাত্র-জনতা মুক্তির প্রহর গুনছে। অসংখ্য ছাত্র-জনতা হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নিয়ে। অনেক ছাত্র ও সাধারণ মানুষ চোখ, কান, হাত, পা কিংবা শরীরের অন্য কোনো অঙ্গ হারিয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছে।’
কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে এতে বলা হয়, “আপনারা জানেন আমরা আমাদের কোনো ব্যক্তিস্বার্থের জন্য আন্দোলন করছি না। আমাদের আন্দোলন আপনার ও আপনার সন্তানের মুক্তির জন্য। কী অপরাধ ছিল আমাদের? সাংবিধানিক অধিকার চাওয়াটা কি আমাদের অপরাধ? কী অপরাধে শত শত ভাইকে হত্যা করা হলো? আমরা এর জবাব জানি না। কিন্তু এর জবাব ও বিচার না নিয়ে আমরা আমাদের আন্দোলনকে থামাব না। জাতির এই দুর্দিনে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অপরাধে শহিদ, আহত, পঙ্গু ও গ্রেফতার হওয়া সবার স্মরণে শুক্রবার দেশব্যাপী ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচি ঘোষণা করছি। গণহত্যা ও গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আজ জুমার নামাজ শেষে দোয়া, শহিদদের কবর জিয়ারত, মন্দির, গির্জাসহ সব উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে। শ্রমিক, পেশাজীবী, সংস্কৃতিকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, বুদ্ধিজীবী, আলেম-ওলামাসহ বাংলাদেশের সবস্তরের নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সফল করে তুলুন।”
শিক্ষকদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, ‘আগামীর বাংলাদেশ গড়ার কারিগর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকমণ্ডলীর ওপর ক্যাম্পাসের ভেতরে হামলা করেছে পুলিশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শ্রদ্ধেয় শিক্ষিকা শেহরীন আমিন মোনামী ও নুসরাত জাহান চৌধুরীর গায়েও হাত তুলেছে পুলিশের কিছু কর্মকর্তা। এই ঘৃণ্য হামলার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’