ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের উত্তরে একটি গ্রামে রুশ হামলা প্রতিহত করা হয়েছে সৃষ্ট বন্যার মাধ্যমে। এর ফলে রুশ বাহিনী কিয়েভ অভিমুখে আর অগ্রসর হতে পারেনি। ইউক্রেনীয় বাহিনীর অভিনব প্রতিরোধের মুখে পড়ে তারা।
সোমবার (১৬ মে) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ইউক্রেন বাহিনী যুদ্ধ শুরুর দিকে দেমিদিভে ইরপিন নদীর বাঁধ খুলে দিয়ে গ্রামে ও হাজার একর এলাকায় বন্যা সৃষ্টি করে। এর ফলে রুশ বাহিনী তাদের ট্যাংক নিয়ে বিশাল প্রতিরোধে পড়ে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, ইউক্রেনীয় বাহিনীর এই কৌশল বুঝতে পারে রুশ বাহিনী। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে তারা কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানী কিয়েভ থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দূরে ইরপিন নদী। এটির দৈর্ঘ্য ১৫২ কিলোমিটার। ইরপিনের বাঁধ খুলে দিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত করে ইউক্রেন সেনাবাহিনী। যদি তারা এলাকা প্লাবিত না করত তাহলে রুশ বাহিনীর জন্য কিয়েভ দখল করা সহজ হতো।
দিমিদিভের ষাটোর্ধ্ব বাসিন্দা ভলোদিমির আর্তেমচুক বলেন, নিঃসন্দেহে ইউক্রেনীয় বাহিনীর এ উদ্যোগ চমৎকার ছিল। রুশ বাহিনী যদি ইরপিন পার হয়ে এলাকায় ঢুকত না জানি কী হত!
৩৯ বছর বয়সী ওলেকসান্দর রিবলকো বলেন, কিছু কিছু জায়গায় এক তৃতীয়াংশের বেশি প্লাবিত হয়েছে।
ওই ঘটনার দুই মাস পর এখনও গ্রামটি পানির মধ্যে রয়েছে। লোকজন নৌকায় করে চলাচল করছে এবং যেসব জায়গায় পানি জমে নেই সেখানে ফুল ও শাকসবজি চাষ করা হচ্ছে।
তিন মাস ধরে ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান চলছে। এরমধ্যে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ জীবন হারিয়েছে, লাখ লাখ ইউক্রেনীয় পালিয়েছে এবং শহরগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ ও ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য মস্কো তাদের পদক্ষেপকে একটি ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে অভিহিত করেছে। অন্যদিকে ইউক্রেন ও পশ্চিমারা রাশিয়ার অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেছে। এ অভিযানকে যুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে।
ন্যাটো দাবি করেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ মস্কোর পরিকল্পনা মতো চলছে না। তারা কিয়েভ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা খারকিভের চারপাশ থেকে ফিরে আসছে। দনবাসে তাদের বড় আক্রমণ থমকে গেছে। রাশিয়া তার কৌশলগত উদ্দেশ্য অর্জন করতে পারছে না।