ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর একের পর এক বিশাল সমাবেশের মধ্য দিয়ে নিজের দলের অবস্থান ও শক্তির জানান দিচ্ছেন পাকিস্তানের সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান।
বৃহস্পতিবার লাহোরে এক বিশাল সমাবেশে তিনি ভাষণ দেন। ওই সমাবেশে দেওয়া ভাষণে রাজধানী ইসলামাবাদে আসতে নেতাকর্মীসহ সাধারণ জনগণকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন ইমরান খান। খবর ডনের।
এর আগে ইমরান খান বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে একটি ভার্চ্যুয়াল সমাবেশের আয়োজন করেছিলেন। মাত্র কয়েক মিনিটেই সে সমাবেশে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ যোগ দেয়।
সারা বিশ্ব থেকে প্রায় ৫ লাখ টুইটার ব্যবহারকারী (৪ লাখ ৪৬ হাজারের বেশি) ইমরান খানের সঙ্গে স্পেসেসের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছেন, এটি টুইটারের একটি অডিও লাইভ সুবিধা। তাতে যোগদানকারী ব্যবহারকারীর গড় সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৬৫ হাজার।
প্রোগ্রামটি অন্যান্য প্ল্যাটফর্মেও লাইভ-স্ট্রিম করা হয়েছিল যেখানে হাজার হাজার মানুষ ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে যোগ দেন।
বৃহস্পতিবার পিটিআইয়ের বহুল আলোচিত এই সমাবেশে লাহোরের গ্রেটার ইকবাল পার্কে নারী-পুরুষ, শিশু, বয়োজ্যেষ্ঠসহ হাজারো মানুষ অংশ নেন।
তারা স্লোগানে স্লোগানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রতি সমর্থন জানান। ‘বিদেশি প্রভুদের’ পাকিস্তানে ছড়ি ঘোরানোর প্রতিবাদ জানান। সার্বভৌমত্ব ও আত্মসম্মানবোধের প্রতি সমর্থন জানান।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান লাহোর সমাবেশে তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ইসলামাবাদে সমাবেশে অংশ নিতে ফোনের জন্য অপেক্ষা করুন।
বৃহস্পতিবার লাহোরের মিনার-আই-পাকিস্তানে ভাষণ দেওয়ার সময় তার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে সমর্থকদের এ আহ্বান জানান তিনি।
মিনার-ই-পাকিস্তানের পাদদেশে বিশাল এই সমাবেশে নতুন সরকারকে আক্রমণ করে বক্তব্য দেন ইমরান খান। তিনি বলেন, আমরা কখনো এই আমদানি করা সরকারকে মেনে নেব না।
বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকসহ যারা বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব থেকে মুক্তি চান, তাদের সবাইকে সর্বত্র প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান এবং ইসলামাবাদে আসতে তার ডাকের জন্য অপেক্ষা করতে বলেন ইমরান খান।
এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে দেওয়া ভাষণে ইমরান খান বলেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা যদি ভাবতে থাকেন যে লাহোর সমাবেশের পর কী ঘটবে, তাহলে তাদের কাছে তার বার্তা হচ্ছে পিটিআইয়ের প্রকৃত কাজ সবে শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেনাবাহিনী ও পুলিশের প্রতি সম্মান জানিয়ে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি কোনো সংঘাত চান না।
ইমরান খান বলেন, শুধু পিটিআই নেতাদের নয়, সব পাকিস্তানিকেই সমাবেশে অংশ নিতে আহ্বান জানাবেন তিনি। ইমরান খান আরও বলেন, গ্রামে, শহরে যে যেখানে থাকুন সবাই প্রস্তুত থাকুন। আন্দোলন ফলপ্রসূ হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে ইমরান খান বলেন, শিগগির নির্বাচন দিতে হবে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা ধারণা করছেন, ঈদুল ফিতরের পর ব্যাপক আন্দোলন শুরু করতে পারে পিটিআই।