ডারবান টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার ‘দুঃখজনক’ স্লেজিং নিয়ে অনফিল্ড আম্পায়ারদের নির্বিকার আচরণে হতবাক বাংলাদেশ। এমনকি পুরো ম্যাচজুড়ে তাদের বেশ কিছু প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত এখন আলোচনার তুঙ্গে। এসব নিয়ে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করবে। এমনকি আইসিসির কাছে লিখিত অভিযোগের পরিকল্পনা বিসিবির।
ওয়ানডে সিরিজে আম্পায়ারিং নিয়ে এরই মধ্যে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে বাংলাদেশ। এবার টেস্টেও আম্পায়ারিং ও অন্য ইস্যু নিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাতে চায় তারা।
দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৫৩ রানে গুটিয়ে গিয়ে ২২০ রানে বাংলাদেশের হারের পর বিসিবি ক্রিকেট অপারেশন্সের প্রধান জালাল ইউনুস ক্রিকইনফোকে বলেন, ওয়ানডে সিরিজ শেষে আম্পায়ারিং নিয়ে এরই মধ্যে আমরা অভিযোগ দায়ের করেছি। আমাদের ম্যানেজার নাফীস ইকবালের সঙ্গে শুরুর দিকে বাজে আচরণ করেছিল ম্যাচ রেফারি কিন্তু যখন আমরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম তখন সে নরম হয়েছিল। এবার এই টেস্ট ম্যাচ নিয়ে আরেকটি অফিসিয়াল অভিযোগ দেব।
জালাল এবং টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ, নির্বাচক হাবিবুল বাশার ও সাকিব আল হাসানের সঙ্গে আম্পায়ারিং নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, স্লেজিং তো স্বাভাবিক। কিন্তু আম্পায়ারদের দেখে মনে হয়নি তারা এটাকে আমলে নিয়েছে। ম্যাচের আম্পায়ারিং তো আমাদের হাতে নেই, কিন্তু আমি মনে করি আইসিসির নিরপেক্ষ আম্পায়ার ফেরানোর ব্যাপারে ভাবা উচিত।
চতুর্থ দিন দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংসে আম্পায়ারিং ছিল ভুলে ভরা। প্রথম দুই সেশনে তা ছিল চোখে পড়ার মতো। ডিন এলগারের বিরুদ্ধে এলবিডব্লিউর আবেদন করেছিল বাংলাদেশ। আম্পায়ার মারাইস এরাসমাস তা প্রত্যাখ্যান করেন। বাংলাদেশ রিভিউ নিলে আম্পায়ার্স কলে বেঁচে যান প্রোটিয়া অধিনায়ক।
পরে ১৯তম ওভারে সারেল আরউইর বিরুদ্ধে এলবিডব্লিউর আবেদন করলে নট আউট দেন আম্পায়ার আড্রিয়ান হোল্ডস্টক। বাংলাদেশ রিভিউ নিয়ে তার সিদ্ধান্ত বদলায়। তারপর ২৬তম ওভারেও খালেদ আহমেদ কিগান পিটারসেনের বিরুদ্ধে এলবিডব্লিউর আবেদন জানালে নট আউট দেন আম্পায়ার। বাংলাদেশ রিভিউ নেয়নি, কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায় আউট ছিলেন প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান।
এছাড়া স্লেজিং তো ছিলই। চতুর্থ দিন সকালে ইবাদত হোসেন এলগারের দিকে বল ছুড়ে মারেন, যা তাকে আঘাত করলে দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। আম্পায়ার হোল্ডস্টক তাদের শান্ত হতে বলেন। দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে আম্পায়ারের কাছে স্লেজিংয়ের অভিযোগ জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেননি তারা।
জালাল বলেন, তারা জয়কে ঘিরে ধরেছিল যখন ব্যাট করতে নেমেছিল। তারা কিছু একটা বলছিল। সে পাল্টা জবাব দিতে পারেনি, কারণ সে জুনিয়র খেলোয়াড়। এটা ছিল দুঃখজনক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করে আম্পায়াররা আমাদের খেলোয়াড়দের সাবধান করে দিচ্ছিল, যখন আমরা স্লেজিং নিয়ে অভিযোগ করছিলাম।
তিনি আরো বলতে থাকেন, দুই দেশই স্লেজিং করেছিল। কিন্তু তারা যখন করছিল সেটা ছিল সীমাছাড়া। আমরা আম্পায়ারদের কাছে অভিযোগ করেছিলাম। এটা অগ্রহণযোগ্য। আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত আমাদের মেনে নিতে হবে, কিন্তু আইসিসির উচিত নিরপেক্ষ আম্পায়ার ফেরানো।