ইরানে ইসরাইলের তাড়াহুড়ো ও ব্যর্থ হামলা নিয়ে যা বলল পিআইজে

ইরানে ইসরাইলের তাড়াহুড়ো ও ব্যর্থ হামলা নিয়ে যা বলল পিআইজে

আন্তর্জাতিক

নভেম্বর ৪, ২০২৪ ৫:০৯ পূর্বাহ্ণ

ফিলিস্তিনি ইসলামি জিহাদ (পিআইজে) আন্দোলনের প্রতিনিধি নাসের আবু শরিফ দাবি করেছেন, ইরানে ইসরাইলের সাম্প্রতিক আক্রমণটি দ্রুত এবং অপরিকল্পিত ছিল, যা সফল হতে পারেনি।

তিনি বলেন, ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ইসরাইলি হামলাটি প্রতিহত করেছে এবং আক্রমণকারীদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে দেয়নি।

গত শনিবার (২৬ অক্টোবর) ভোররাতে ইরানের কয়েকটি প্রদেশ ও স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় ইসরাইল। এতে ইরানের চারজন সেনা শহিদ হন বলে জানায় দেশটির কর্তৃপক্ষ।

ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী জানায়, আক্রমণটি শুরু হলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং ইসরাইলি হামলা ব্যর্থ করে দেয়। যদিও এতে আংশিক কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং সেই ক্ষতির মাত্রা মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

একই সঙ্গে ইরান এই হামলার যথাযথ প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। এর আগেও প্রতিশোধ হিসেবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ-টু’ চালায় ইরান। গত ১ অক্টোবরের সেই হামলায় ইসরাইল অধিকৃত অঞ্চলে দখলদারদের সামরিক ও গোয়েন্দা ঘাঁটিগুলোতে প্রায় ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়।

এই আক্রমণটি চালানো হয়েছিল ফিলিস্তিনি এবং লেবানিজ প্রতিরোধ নেতাদের হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এবং ইরানের একজন কৌশলগত কমান্ডারের মৃত্যুর প্রতিক্রিয়া জানাতে।

এর প্রায় ২৫ দিন পর গত শনিবার ভোর রাতে ইরানে বিমান হামলা চালায় ইসরাইল।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলেছে, ১ অক্টোবরের হামলার প্রতিশোধমূলক আক্রমণটি ইরানের কৌশলগত সামরিক সাইটগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। বিশেষত, ড্রোন এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উত্পাদন এবং উৎক্ষেপণ সাইটগুলোকে।

এ বিষয়ে আইপিজে প্রতিনিধি আবু শরিফ বলেন, ইসরাইলের আক্রমণটি একটি সামরিক পদক্ষেপ ছাড়াও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও বহন করে। যার লক্ষ্য ছিল ইরানকে ভয় দেখানো এবং আন্তর্জাতিক মহলে ইসরাইলি শক্তি প্রদর্শন।

তিনি বলেন, বাস্তবে ইসরাইল এই হামলায় উল্লেখযোগ্য কোনো সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। কারণ ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা এই হামলার বিরুদ্ধে সময়মতো সতর্কতার সঙ্গেই প্রস্তুত ছিল।

নাসের আবু শরিফ আরও জানান, এই ব্যর্থ হামলা ইরানের প্রতিরক্ষা বা আক্রমণাত্মক ক্ষমতাকে কোনোভাবে কমিয়ে দিতে পারেনি এবং ইসরাইলি আক্রমণের প্রেক্ষিতে ইরান তার শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রস্তুত।

ফিলিস্তিনি ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের এই নেতা উল্লেখ করেন, ‘ইরানের প্রতিরোধকামী নেতৃত্ব অবশ্যই এ ধরনের আগ্রাসনের যথাযথ ও প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া জানাবে’।

ইসরাইলের আক্রমণ প্রসঙ্গে পিআইজে প্রতিনিধি আরও বলেন, ‘ইসরাইলের মিত্ররা, যারা এই অভিযানকে সমর্থন দিয়েছে বা নীরব থেকে চেয়ে চেয়ে দেখেছে, তাদের এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পরিবর্তে নিরাপত্তা দুর্বল করার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল হতে হবে’।

আবু শরিফ তার বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেন, লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর নতুন নেতা হিসেবে শেখ নাইম কাসেমের নিয়োগ এই প্রতিরোধ শক্তির দৃঢ়তা এবং যুদ্ধের জন্য তাদের প্রস্তুতি আরও বাড়ানোর ইঙ্গিত বহন করে।

তিনি বলেন, ‘এই নিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রকে একটি বার্তা পাঠায় যে, নিষেধাজ্ঞা এবং চাপ হিজবুল্লাহর ইচ্ছাশক্তিকে দুর্বল করতে পারবে না। বরং নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে প্রতিরোধ শক্তি আরও বড় বিজয়ের জন্য প্রস্তুত’।

সূত্র: মেহের নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *