জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর সাবেক নেতা আবু বকর আল-বাগদাদির স্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ইরাকের আদালত।
বুধবার (১১ জুলাই) ইরাকের বিচার বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে। আইএস এর সঙ্গে কাজ করা এবং ইয়াজিদি নারীদের নিজ বাড়িতে আটকে রাখার জন্য তার বিরুদ্ধে এই সাজা ঘোষণা করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি বিচারিক সূত্র বলেছে, তুরস্কে আটক হওয়া এ নারীকে ইতিমধ্যে ইরাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
ইরাকের সুপ্রিম জুডিশিয়াল কোর্টের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশের (আইএসের আরেক নাম) সঙ্গে কাজ করা এবং ইয়াজিদি নারীকে বাড়িতে আটকে রাখার অপরাধে আবু বকর আল–বাগদাদির স্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন কার্খের ফৌজদারি আদালত।’
ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়, আইএসের প্রয়াত নেতার এ স্ত্রী ইয়াজিদিদের আটকে রেখেছিলেন। পরে ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় সিনজার জেলায় আইএস যোদ্ধারা তাদের অপহরণ করেন।
একটি বিচারিক সূত্র বাগদাদির ওই স্ত্রীর নাম আসমা মোহাম্মদ বলে জানিয়েছে। প্রয়াত আইএস নেতা বাগদাদি একাধিক বিয়ে করেছিলেন।
২০১৪ সালে সিরিয়া ও ইরাকের কিছু অংশের দখল নিয়ে সেখানে খিলাফত ঘোষণা করেন বাগদাদি। এর পাঁচ বছর পর ২০১৯ সালের অক্টোবরে ওয়াশিংটন ঘোষণা করে, সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মার্কিন সেনাদের এক অভিযানে বাগদাদি নিহত হয়েছেন।
২০১৪ সালে উত্তর ইরাকের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হওয়ার সময় আইএসের সদস্যরা অমুসলিম ইয়াজিদিদের আলাদা করে চিহ্নিত করেছিল। এর পর পরিকল্পিতভাবে হাজার হাজার ইয়াজিদি পুরুষকে তারা হত্যা করে এবং নারীদের যৌনদাসত্বে বাধ্য করে।
সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য হওয়ার অভিযোগে ইরাকের আদালতে দণ্ডবিধির আওতায় কয়েক বছরে কয়েক শ মানুষকে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আইএসে যোগদানের অভিযোগে ইরাকে ৫০০ জনের বেশি বিদেশি নারী ও পুরুষকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে ইরাক ঘোষণা দেয়, তারা বাগদাদির পরিবারকে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পেরেছে। বিচারিক একটি সূত্র এএফপিকে বলেছে, তুরস্কে আটক হওয়ার পর বাগদাদির স্ত্রীকে ইরাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে সন্তানেরাও ফিরেছেন।
ওই সময় সৌদি মালিকানাধীন টিভি চ্যানেল আল আরাবিয়াতে বাগদাদির স্ত্রীর এক সাক্ষাৎকারও প্রচারিত হয়। সেখানে বাগদাদির স্ত্রীর নাম আসমা মোহাম্মদ বলে উল্লেখ করা হয়।
২০১৯ সালের নভেম্বরে তুরস্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা ২০১৮ সালের জুনে বাগদাদির এক স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে। তুরস্কের সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে ওই নারীর নাম আসমা ফাউজি মোহাম্মদ আল কুবায়সি বলে জানানো হয়।
২০১৭ সালে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত বাহিনীর কাছে পরাজিত হয় আইএস। এর দুই বছর পর সিরিয়ায়ও তাদের পতন ঘটে।
তবে আইএস সদস্যরা এখনো এ দুই দেশের বেসামরিক নাগরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালায়।
সূত্র: বিবিসি