ঢালিউডের আলোচিত মডেল ও অভিনেত্রী সানাই মাহবুব। গত কয়েক দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দাম্পত্য সমস্যা ও বিচ্ছেদ নিয়ে আলোচনায় ছিলেন তিনি। বিভিন্ন সময় ইঙ্গিতের পর দাম্পত্য কলহ ও বিচ্ছেদের বিষয়ে ফেসবুকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজনের ডাক দিয়ে ভোল্ট পাল্টালেন সানাই।
এবার ফেসবুকেই নিজের ভেরিফায়েড পেজ হ্যাক হওয়ার কথা জানালেন তিনি। সেই পোস্টে স্বামীকে মারধর করার কথাও অস্বীকার করে সাংবাদিকদের দোষারোপ করেন সানাই। বৃহস্পতিবার (১ জুন) দিবাগত রাত ৩টা ৫১ মিনিটের দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এসব কথা জানান।
ভেরিফায়েড পেজে সানাই লেখেন, ‘আসসালামু আলাইকুম, পেজ হ্যাক হওয়ার কারণে আমি অ্যাকসেস পাচ্ছিলাম না। আর ওইদিকে আমাকে নিয়ে যে লেভেলের উল্টাপাল্টা নিউজ হচ্ছে। আচ্ছা, সাংবাদিক ভাইয়ারা আপনাদের কাছে তো আমার নাম্বার আছে, নিউজের আগে কি আপনারা একটাবার আমাকে ফোন করার প্রয়োজন মনে করেন নি? আমি কোন দুঃখে আমার স্বামী কে মারতে যাবো? আর কিডনি ড্যামেজ করে দিছি মানে? আসেন আপনারা সবাই মিলে পপুলার কিংবা ল্যাবএইডে গিয়ে আমার স্বামীর কিডনি পরীক্ষা করে দেখি, রিপোর্ট কি আসে। অন দ্য স্পট প্রমাণ হবে কিডনি ঠিক আছে কি না।
সানাই আরও লেখেন, ‘এগুলো আশ্চর্যজনক নিউজ আপনারা কিসের ভিত্তিতে করেন? আপনারা আসেন না ভাই, ওকে নিয়ে পপুলার বা ল্যাবএইডে গিয়ে একটা টেস্ট করাই তারপর না হয় রিপোর্ট এর ছবি দিয়ে নিউজ করলেন। রিপোর্ট তো ভুয়া বানানো যায়। কারণ আমার স্বামীর পরিচিত ডাক্তার আছে ডজন ডজন। তাই তার কিডনির পরীক্ষা আপনাদের উপস্থিতিতে ফেসবুক লাইভে থেকে করা হবে। দেখি কী রিপোর্ট আসে। ওপেন চ্যালেঞ্জ করলাম আমি। কীভাবে আপনারা এসব অযাচিত নিউজ করেন?’
এর আগে বুধবার (৩১ মে) রাতে কিছুক্ষণ পরপর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দুটি পোস্ট করেন সানাই। এতে দাম্পত্য কলহ, বিচ্ছেদ ও সংবাদ সম্মেলনের আয়োজনের কথা উল্লেখ করেন তিনি। সেই পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে সানাই মাহবুবের স্বামী আবু সালেহ মুসার সঙ্গে কথা বলার পর সংবাদ প্রকাশ করে ঢাকা পোস্ট। তবে সেই সংবাদ প্রকাশের পরপরই সানাই তার ভেরিফায়েড পেজ থেকে পোস্ট দুটি ডিলিট করে দেন।
বুধবার (৩১ মে) রাতে সানাই মাহবুবের স্বামী আবু সালেহ মুসা ঢাকা পোস্টকে বলেছিলেন, ‘একটু আগেই ভালো ছিল। হঠাৎ বটি নিয়ে এসে আমায় আঘাত করে। পরে ভাগ্য ভালো বাসা থেকে বাইরে চলে আসতে পারছি। আজকে ঝাড়ু দিয়া মাইরও দিছে, এর আগে লাথিও মারছে তবুও আমি কিছু বলি নাই। আজকে দুই তিনটা লাথি মারছে, আমার কিডনির সমস্যা করে দিছে। তারপরও আমি কিছু বলিনি। তার সঙ্গে আজ একটু কথা কাটাকাটি হইছে এজন্য ঝাড়ু দিয়া মাথায় মারছে। তারপর আমি একটা থাপ্পড় দিছি। সেও আমাকে দুইটা থাপ্পড় মারছে।’
আবু সালেহ মুসা বলেন, ‘আমাকে প্রায় মারে এভাবে। আমি এ নিয়ে কিছু বলি না, কারণ চাই সর্ম্পকটা টিকে থাকুক। সে আমাকে আজকে বলে এই তুই আমাকে চড় মারিস, তুই আমাকে চিনস। তখন আমি হাসতে হাসতে বলেছি, দুই তিন শ চড় মারছো আমি একটা মারলামই না হয়। তারপর সে চেয়ার দিয়ে আমার শরীরে মারছে, রান্নাঘরে গিয়ে বটি আনছে মারার জন্য আমি তাই দেখে পালানোর চেষ্টা করি। এমন সময় আমার হাতে বটি দিয়ে আঘাত করে। ভাগ্য ভালো আমি বটি ধরতে পারছি। না ধরলে আজকে আমি মার্ডার হয়ে যাইতাম।’
স্বামীর এমন অভিযোগের বিষয়ে তখন সানাই মাহবুবের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৭ মে পারিবারিক আয়োজনে কাউকে না জানিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে চেয়েছিল সানাইয়ের পরিবার। পরে ঠিকই জানাজানি হয়ে যায়। সানাইয়ের পৈতৃক নিবাস নীলফামারীতে। তার স্বামী মুসার বাড়িও একই জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের দক্ষিণ দুরাকুঠি এলাকায়। যদিও এর আগে ২০১৯ সালে সানাইয়ের একটি বিয়ের খবর শোনা যায়। সাবেক এক মন্ত্রীর সঙ্গে তার বাগদান হয়েছিল। সানাই নিজেও খবরটির সত্যতা নিশ্চিত করেছিলেন। তবে ওই বিয়ে সম্পর্কে পরবর্তীতে আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।