প্রথা ভেঙে জীবনসঙ্গী খুঁজছেন পাকিস্তানি তরুণ-তরুণী

প্রথা ভেঙে জীবনসঙ্গী খুঁজছেন পাকিস্তানি তরুণ-তরুণী

আন্তর্জাতিক

আগস্ট ৩১, ২০২৪ ৬:৪৯ পূর্বাহ্ণ

রক্ষণশীল প্রথা ভেঙে নিজেদের জীবনসঙ্গী নিজেরাই খুঁজছেন পাকিস্তানি তরুণ-তরুণীরা। বিয়ের বিষয়টিকে সহজ করতে সম্প্রতি লাহোরে বিবাহযোগ্য তরুণ-তরুণীদের এক সম্মেলনের আয়োজন করেছিল যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি বিয়ে ব্যবস্থাপনা অ্যাপ ‘মুজ’।

অ্যাপটির দাবি, তারা ইসলামি আদব-কায়দা মেনেই বিয়ের আলাপ এগিয়ে নেয়। অ্যাপটি মুসলিমদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এতে ব্যবহারকারীর সম্মতি ছাড়া স্পষ্ট ছবি দেখানো হয় না এবং শুধু উভয়পক্ষের সব শর্ত মিলে গেলেই তারা দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারেন।

অ্যাপটি তৈরির মূল উদ্দেশ্য ছিল যেন বিবাহযোগ্যরা নিজের মনের মতো করে তাদের জীবনসঙ্গী বেছে নিতে পারেন। পাশাপাশি বিবাহের বিষয়টি আরও সহজ করা। বিশেষ করে দেশটির রক্ষণশীল সমাজকে পাশ কাটিয়ে সারা জীবনের সঙ্গীকে বেছে নেওয়া। অ্যাপটির মাধ্যমে পরিচয়পর্ব শেষে ইভেন্টের মাধ্যমে সরাসরি দেখা করতে পারেন পাত্র-পাত্রীরা।
নিজের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় প্রকাশ না করে আইমেন নামে ৩১ বছরের এক নারী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তার ভাইয়ের পরামর্শে তিনি অ্যাপটি ব্যবহার করা শুরু করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি টানা দুই সপ্তাহ অ্যাপটি ব্যবহার করি। এরপর আমি এই ইভেন্টের বিজ্ঞাপন দেখতে পাই। তখন আমি ভাবলাম, কেনো আমি কিছু লোকের সঙ্গে সরাসরি পরিচিত হওয়া থেকে বিরত থাকব?’

আইমেন আরও জানান, তার মা তার সঙ্গে আসতে চেয়েছিলেন কিন্তু তিনি অসুস্থতার কারণে আসেননি।

২৭ বছর বয়সি মুয়াজ জানান, তিনি এক বছর ধরে ‘মুজ’ ব্যবহার করছেন এবং অ্যাপটির মাধ্যমে জীবনসঙ্গী খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘অনেকের সঙ্গেই আমার মেলে। কিন্তু তাদের সবার আলাদা আলাদা চাহিদা আছে।’

মুয়াজ জানান, এ অ্যাপের অধিকাংশ নারী ব্যবহারকারীই শুরু থেকেই তাদের বাবা-মাকে সঙ্গে রাখার ব্যাপারে বেশি আগ্রহী।

নূর-উল আইন চৌধুরী নামে আয়োজকদের একজন জানান, অনলাইনে এ ইভেন্টটি ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে যে এখানে ‘হুক আপ সংস্কৃতি’ প্রসার করা হচ্ছে। তবে তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এ আয়োজন মূলত অবিবাহিতদের একসঙ্গে বসার জন্য ছিল এবং যাতে সবাই নিরাপদে এ অনুষ্ঠান শেষ করতে পারে; সেদিকে আমাদের কড়া দৃষ্টি ছিল।’

প্রায় ২৪ কোটি মানুষের দেশ পাকিস্তানে তরুণ-তরুণীদের বিয়ের বিষয়টি বাবা-মায়েরাই সমাধা করে থাকেন। তারা নিজ নিজ সন্তানদের জন্য তাদের পছন্দসই-মানানসই সঙ্গী নির্বাচন করেন।

সাধারণত, নিজ নিজ সম্প্রদায় এবং এমনকি নিজের পরিবারের বর্ধিত অংশের মধ্যেই বিয়ের রেওয়াজ প্রচলিত আছে দেশটিতে। দেশটিতে ডেটিং অ্যাপ বা বিয়ের অ্যাপগুলোকে এখনো নিষিদ্ধ বিষয় হিসেবেই ধরা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ব্রিটেনে প্রথমবার চালু হয় মুজ। দেশটিতে উল্লেখযোগ্য মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে। পাকিস্তানেও অ্যাপটির ব্যবহারকারী ১৫ লাখের বেশি। তবে এ অ্যাপের সবচেয়ে বেশি ব্যবহারকারী আফ্রিকার দেশ মরক্কোতে।

সূত্র: রয়টার্স

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *