নভেম্বর ২, ২০২৪ ৪:৫৯ পূর্বাহ্ণ
মহাকাশে নভোচারী পাঠিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আধিপত্য তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমেরিকা ও রাশিয়া এক্ষেত্রে একাধিক সফলতা রয়েছে। তবে মাইলফলক ছোঁয়ার চেষ্টায় রয়েছে এশিয়ার দেশ চীনও।
বুধবার প্রায় ছয় ঘণ্টার বেশি দীর্ঘ এক সফর শেষে তিন নভোচারী নিয়ে মহাকাশে পাড়ি জমিয়েছে চীনা এক মহাকাশযান। যার মধ্যে রয়েছেন দেশটির সর্বকনিষ্ঠ প্রথম নারী মহাকাশ প্রকৌশলীও।খবর বিবিসির।
আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের পর নিজস্ব মহাকাশ স্টেশনও স্থাপন করেছে চীন। স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে চারটা নাগাদ ছয় ঘণ্টা ভ্রমণের পর তিয়াংগং স্পেস স্টেশনে পৌঁছেছেন এই তিন চীনা নভোচারী। আগামী ছয় মাস তারা মহাকাশেই থাকবেন।
গানসু প্রদেশের মঙ্গোলিয়ার জিউকুয়ান স্যাটেলাইট লঞ্চ সেন্টার থেকে সিনঝাউ স্পেসশিপটি মহাকাশে পাড়ি জমায়। চীনের ক্ষেত্রে এটি ছিল চতুর্দশ মহাকাশ অভিযান। এই দলে রয়েছেন ৪৮ বছরের কমান্ডার কাই জুঝে, ৩৪ বছরের সং লিংডং ও ৩৪ বছরের ওয়াং হাওজে।
ওয়াং চীনের প্রথম নারী স্পেসফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ারও। এছাড়া সং লিংডং এবং ওয়াং হাওজে হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে তরুণ মহাকাশচারী। নভোচারীরা চীনের নিজের তৈরি একটি মহাকাশ স্টেশনকে ছয় মাসের জন্য নিজস্ব ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার করবে। যেখানে তারা বিভিন্ন পরীক্ষা ও স্পেসওয়াক পরিচালনা করবেন।
বেইজিংয়ের লক্ষ্য, এ মিশনের অভিজ্ঞতা ও বুদ্ধিমত্তা সঞ্চয় করে পরবর্তীতে ২০৩০ সাল নাগাদ চাঁদে মানুষ পাঠানোর মিশন সঞ্চালন করা। শেনঝু ১৯-এর এই উৎক্ষেপণকে ‘বড় সাফল্য’ বলে ঘোষণা করেছে বেইজিং। এ বছর মহাকাশ অন্বেষণের লক্ষ্যে চীনের পরিকল্পিত একশটি উৎক্ষেপণের একটি এটি, যেখানে নতুন রেকর্ড গড়ে প্রতিদ্ব›দ্বী যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে দেশটি।
বিবিসি জানায়, এ মহাকাশযান উৎক্ষেপণের ঘটনা স্রেফ এক কিলোমিটার দূর থেকে প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পেয়েছে তাদের প্রতিবেদক। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তারা চীনের গানসু প্রদেশে অবস্থিত ‘জুইকুয়ান স্যাটেলাইট লঞ্চ সেন্টার’-এ প্রবেশ করার বিরল সুযোগ পেয়েছে।
এ উৎক্ষেপণ দেখতে হাজারের বেশি লোকজনকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ‘টাইকোনট (নভোচারীর চীনা শব্দ)’ দের নামে স্লোগান দিয়ে অভিবাদন জানাতে দেখা গেছে। তিয়াংগং স্পেস স্টেশনে ‘শেনঝু ১৯’ মিশনের নভোচারী দলটি আরও তিনজন নভোচারীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, যারা শেনঝু ১৮ মিশনে মহাকাশ স্টেশনটিতে এসেছিলেন। আর তারা ফিরতি যাত্রায় পৃথিবীতে ফিরে আসবেন ৪ নভেম্বর।
চীন ইতিমধ্যেই চাঁদের ওপর বিভিন্ন গবেষণা পরিকল্পনা করেছে। চীনের লক্ষ্য হলো এই অঞ্চলের সম্পদগুলোকে কাজে লাগানো। চাঁদে হেলিয়াম, ধাতু এবং অন্যান্য মূল্যবান খনিজ রয়েছে যা ভবিষ্যতে বড় অর্থনৈতিক লাভের দিকে নিয়ে যেতে পারে।