যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় নির্বাচনি জনসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে বিশ্বজুড়ে। শনিবারের ওই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসসহ বিশ্ব নেতারা।
আমেরিকাকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র উল্লেখ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এ ধরনের একটি রাষ্ট্রে একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর ওপর এমন হামলা দুঃখজনক। তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই তার ওপর এই ধরনের হামলার নিন্দা জানাচ্ছি। আমেরিকা সব সময় তাদের গণতন্ত্র নিয়ে গর্ববোধ করে। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, আমেরিকার মতো সভ্য দেশ ও গণতান্ত্রিক দেশে কীভাবে একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ও আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্টের ওপর এমন হামলা হলো? তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প আক্রমণ থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন।’ তবে তিনি কানে আঘাত পেয়েছেন।
ডেমোক্রেটিক পার্টি হামলার জন্য সরকারকে দায়ী করেনি। তবে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হামলার নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিষয়গুলো ভিন্ন হতো।
এ ঘটনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ট্রাম্পের ওপর হামলা অনভিপ্রেত ও আইনবিরোধী। আমাদের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। রাজনীতিতে আমরা কোনো সংঘাত চাই না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে সংঘাত সেভাবে ছিল না। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর যে হামলা, অবশ্যই আমরা গভীর উদ্বেগ এবং এর নিন্দা জানাই। রাজনীতিতে কোনো সংঘাতের স্থান থাকা উচিত নয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘চীন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।’
জাতিসংঘ প্রধান অ্যান্তোনিও গুতেরেস ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যা প্রচেষ্টা চালানোর ‘দ্ব্যর্থহীনভাবে’ নিন্দা জানিয়েছেন। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গুতেরেস দ্ব্যর্থহীনভাবে রাজনৈতিক সহিংসতার এমন কাজের নিন্দা করেন। তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে তাকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন।’
ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেন, ‘গণতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করে এমন যে কোনো ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার বলেন, আমাদের সমাজে কোনো প্রকার রাজনৈতিক সহিংসতার স্থান নেই।
হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ বলেন, হামলার এ ঘটনা ছিল উদ্বেগজনক।
হামলার ঘটনার ভিডিও দেখে অসুস্থ বোধ করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক সহিংসতা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।’
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা ট্রাম্পের ওপর গুলির এ ঘটনাকে অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন। ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও।
ট্রাম্পকে বন্ধু বলে অভিহিত করে তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এছাড়াও এ হামলার ঘটনায় অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, কানাডা, হাঙ্গেরি, ভেনেজুয়েলাসহ বিভিন্ন দেশের নেতারা ইতোমধ্যে নিন্দা ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।