এপ্রিল ২৪, ২০২২ ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ
সাভারের আলোচিত রানা প্লাজা ট্রাজেডি আজ রোববার (২৪ এপ্রিল)। দেশের পোশাক শিল্পের ইতিহাসে এক শোকাবহ দিন। রানা প্লাজা ট্রাজেডির নয় বছরেও বিচার না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আহত শ্রমিক ও নিহত শ্রমিকদের স্বজনেরা।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে ধসে পড়ে সাভারের রানা প্লাজা ভবন। ওই ঘটনায় এক হাজার ১৩৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আহত ও পঙ্গু হন প্রায় দুই হাজার শ্রমিক। জীবিত উদ্ধার করা হয় দুই হাজার ৪৩৮ জনকে। বাংলাদেশ তো বটেই গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দেয় এই শিল্প দুর্ঘটনা।
দেশের ইতিহাসে ভয়াবহ এ ট্রাজেডিতে নিহত এবং আহত শ্রমিকেরা বিচারের দাবিতে এখনও প্রতিদিন ভিড় করেন ঘটনাস্থলে। হারানো স্বজনরা বিলাপ করেন বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে নির্মিত রানা প্লাজার স্মৃতিস্তম্ভের সামনে। এ ঘটনার মূল মামলার ছয় বছর আগে বিচার শুরু হলেও এখনও কোনো সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।
রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় এ পর্যন্ত ভবনের মালিক রানা, তার পরিবার, সাভার পৌরসভার তৎকালীন মেয়রসহ বিভিন্ন জনের নামে পাঁচটি মামলা হয়।
সাভার মডেল থানার তৎকালীন এসআই ওয়ালী আশরাফ ভবন নির্মাণে ‘অবহেলা ও ত্রুটিজনিত হত্যার’ অভিযোগ এনে মামলা করেন।
২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে রানার বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়।
২০১৬ সালের ১৮ জুলাই ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এসএম কুদ্দুস জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এরপর প্রায় ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। থমকে আছে মামলার বিচার কার্যক্রম। রানা প্লাজা ধস হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ৪১ আসামির মধ্যে বর্তমানে কারাগারে আছেন কেবল ভবনের মালিক সোহেল রানা। বাকি আসামিদের মধ্যে জামিনে আছেন ৩২ জন, পলাতক ছয়জন ও মারা গেছেন দুজন।
ধ্বংসস্তূপ অপসারণের পর ১৮ শতাংশ জমির উপর নির্মিত ভয়াল সেই ঘটনাস্থলের চারপাশটা কাঁটাতার ও টিনের বেড়া দিয়ে রেখেছে জেলা প্রশাসক। এর সামনেই বিভিন্ন সংগঠন তৈরি করেছে শহীদ বেদি।
ভয়াবহ এই শিল্প দুর্ঘটনায় হতাহতদর স্মরণে নানা কর্মসূচি নিয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন। শোকাবহ দিনটি ঘিরে রানা প্লাজায় আহত, নিহত আর নিখোঁজ স্বজনের আনাগোনা বেড়েছে শহীদ বেদির সামনে। ক্ষতিপূরণসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন তারা।