শেরপুর জেলার বন্যার্তদের পাশে সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠান ও ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গকে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন শেরপুর জেলা উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মহিউদ্দিন আহমেদ ও যুগ্ম সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান (শাশ্বত মনির)।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত দু’দিন যাবত শেরপুর জেলার শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী উপজেলার প্রায় দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রায় তিন লক্ষ নাগরিক চরম অমানবিকতার মধ্যে দিন যাপন করছে। মানবেতর জীবন যাপন করছেন বন্যায় প্লাবিত অসহায় মানুষ। ফসল আবাদের এবং গবাদিপশু বিলীন হয়ে গেছে বন্যায়। পর্যাপ্ত নৌকা এবং খাদ্য সামগ্রী না থাকায় আটকে পড়ে আছে হাজারো মানুষ। এ পর্যন্ত বন্যায় ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মৃত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে অতিবৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতী,শ্রীবরদী উপজেলার মহারশি, সোমেশ্বরী ও ভোগাই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। নদীর পানি দু’কূল উপচে ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের ঝিনাইগাতী বাজার, রামেরকুড়া, খৈলকুড়া, দীঘিরপাড়, বনকালি, চতল, আহম্মদনগর, বৈরাগীরপাড়া, সুরিহারা, কালীনগর; ধানশাইল ইউনিয়নের বাগেরভিটা, দক্ষিণ দাড়িয়ারপাড় ও কান্দুলী; নলকুড়া ইউনিয়নের শালচূড়া, হলদীগ্রাম; গৌরীপুর ইউনিয়নের গৌরীপুর এবং হাতীবান্ধা ইউনিয়নের দুটি গ্রামসহ অন্তত ৫০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এসব এলাকার আমন ধান ও সবজি পানিতে নিমজ্জিত হয় এবং মাছের খামার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এছাড়া ঢলের পানির প্রবল চাপে অনেক কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে ঝিনাইগাতী সদর বাজারের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ আছে এবং নালিতাবাড়ী থেকে ঢাকা ও শেরপুর যোগাযোগের মহাসড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এদিকে ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের খৈলকুড়া, দীঘিরপাড় ও পূর্ব দীঘিরপাড় এলাকায় মহারশি নদীর বাঁধের প্রায় ১৫০ মিটার অংশ ভেঙে যাওয়ায় পানি প্রবল বেগে উপজেলা পরিষদ চত্বর ও ঝিনাইগাতী সদর বাজারে ঢুকে পড়ে। পানি কমে গেলে জরুরি ভিত্তিতে বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করা হবে।
ঝিনাইগাতী উপজেলার ৪ হাজার ৩০০ হেক্টর জমির আমন আবাদ সম্পূর্ণ ও ১০০ হেক্টর জমির সবজি আবাদ পাহাড়ি ঢলের পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। পানি সরে গেলে ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ পাওয়া যাবে। ঢলের পানিতে উপজেলার শতাধিক অধিক মৎস্য খামারের মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রাথমিক হিসেবে খামারের অবকাঠামোসহ প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সরকারি সহায়তা সামান্য কিছু থাকলেও বেসরকারি পর্যায়ে কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।