অর্থায়ন সহজীকরণে প্রাইভেট ইকুইটি এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইকো-সিস্টেমের সম্প্রসারণ জরুরি : ডিসিসিআই

অর্থনীতি

নভেম্বর ৩০, ২০২৪ ১২:০৯ পূর্বাহ্ণ

শওকত আলী হাজারী ।।

জ্ঞান ভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তোলার মাধ্যমে ভবিষ্যতে দেশের আশাব্যঞ্জক প্রবৃদ্ধি এবং ব্যবসায়িক নতুন উদ্যোগের সাফল্যের জন্য একটি সহায়ক ইকোসিস্টেম প্রয়োজন বলে মনে করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
এছাড়াও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানসমূহ হতে ইক্যুইটি আকারে তহবিল সহায়তা প্রদানের বিষয়টিও এক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। নতুন ব্যবসায়িক কার্যক্রমের পাশাপাশি উদ্ভাবনী কার্যক্রমে অর্থায়নের ক্ষেত্রে প্রচলিত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার অভাব প্রায়ই পরিলক্ষিত হয়, এমতাবস্থায় উদীয়মান ব্যবসায়ী সাথে বিনিয়োগকারীদের সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে নুতন নতুন ব্যবসা সম্প্রসারণে গতি সঞ্চারের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।

সাধারণত ব্যাংকগুলো তাদের ঋণের নিশ্চয়তার লক্ষ্যে স্থাবর সম্পত্তির মূল্যের উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে, যা মেধা-ভিত্তিক ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে অনেকক্ষেত্রেই প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে। সম্প্রতি ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত প্রাইভেট ইক্যুইটি এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্মস-এর সাথে উদ্ভাবনী এসএমই ও স্টার্টআপদের যোগাযোগ স্থাপন; অর্থায়ন প্রতিন্ধকতা নিরসন শীর্ষক ফোকাস গ্রুপ আলোচনা সভায় ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ এ অভিমত জ্ঞাপন করেন।

তিনি বলেন, একজন উদ্যোক্তা হিসাবে উদ্ভাবনের জন্য অর্থায়নে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলায় নিজেদেরই এগিয়ে আসতে হবে। অর্থায়নের চ্যালেঞ্জ নিরসনে বিশেষকরে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের নিকট প্রাইভেট ইক্যুইটি (পিই) এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল (ভিসি)-এর কার্যক্রম আরো জনপ্রিয় করার উদ্যোগ গ্রহণ করা আবশ্যক। যদিও অনেকক্ষেত্রে উদ্যোক্তারা পিই ও ভিসি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে অবগত না থাকার কারণে প্রয়োজনীয় ঋণ গ্রহণ করতে পারছেন না।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ), সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, এই খাতের বিকাশের জন্য একটি সহায়ক নীতি ব্যবস্থার বাস্তবায়ন প্রয়োজন। সম্প্রতি অনেকই উদ্ভাবনী স্টার্ট-আপ ব্যবসা-বাণিজ্যে এগিয়ে আসছে, যা একটি ইতিবাচক দিক এবং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির স্বার্থে তাদেরকে শুরু থেকেই সার্বিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে টিকিয়ে রাখতে তিনি মত প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশের তরুণ উদ্ভাবনী উদ্যোক্তাদের তাদের উদ্ভাবিত পণ্যের মেধাসত্ত্বার পেটেন্ট করিয়ে রাখার আহ্বান জানান।

মসলিন ক্যাপিটাল লিমিটেডের হেড অব কমপ্লায়েন্স অ্যান্ড কোম্পানি সেক্রেটারি মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন, বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শওকত হোসেন, এক্স অ্যাঞ্জেল লিমিটেডের ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজার জসিম মোহাম্মদ মিয়া এবং ফিনেগার ফিনটেকের সিইও এমএম এহসান নিজামী অনুষ্ঠানের মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

আলোচকবৃন্দ বলেন, অর্থায়ন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান অন্তরায় হল সম্পদের মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার জটিলতা। যেহেতু ঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলো তাদের ঋণের নিশ্চয়তা ও লভ্যাংশ অর্জনের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদানক করে থাকে, তাই এসএমই ও স্টার্ট-আপদের জন্য ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং প্রাইভেট ইক্যুইটি প্রতিষ্ঠানসমূহ অর্থায়নের বিকল্প উৎস হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। প্রযুক্তি নির্ভর কোম্পানীগুলোর বেশিরভাগ সম্পদ গুলো বুদ্ধিভিত্তিক হওয়াই, এধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পদের মূল্যায়ন করতে গিয়ে নানাবিধ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

এছাড়াও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল গুলোকে লিমিটেড পার্টনার এবং অর্থের যোগানের জন্য প্রায়শই সমস্যায় পড়তে হয়। বিদেশী অর্থায়ন প্রাপ্তিতে স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তাদের আরো আকর্ষনীয় পণ্য উদ্ভাবন, সহায়ক নীতি সংষ্কার এবং যৌক্তিক এক্সিট প্ল্যান ও অর্থায়নের জন্য সহজ মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার উপর আলোচকবৃন্দ জোরারোপ করেন।

৮টি প্রাইভেট ইক্যুইটি এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান, ১৪টি স্টার্ট-আপ এবং ২৬টি ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ সহ ঢাকা চেম্বারের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ উক্ত ফোকাস গ্রুপ আলোচনায় অংশ নেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *