শেরপুরের সব চেয়ে দৃষ্টি নন্দিত ও বড় মসজিদ মাইসাহেবা

দেশজুড়ে

জানুয়ারি ২৫, ২০২৫ ৯:১১ অপরাহ্ণ

ছামিউল আলম সোহান, শেরপুর জেলা প্রতিনিধি

শেরপুর জেলার সব চেয়ে বড় ও প্রায় ২৫০ বছরের পুরাতন মাসজিদ ‘মাই সাহেবা’ । এ মসজিদটি খুবই দৃষ্টি নন্দিত। এটি শহরের কেন্দ্রস্থল কলেজ মোড়স্থ শেরপুর সরকারি কলেজের পার্শ্বে অবস্থিত।

মসজিদটির নামকরণ নিয়ে প্রচলিত রয়েছে একটি ঘটনা। শেরপুরের তিনআনি জমিদার মুক্তাগাছার ষোল হিস্যার জমিদারকে দাওয়াত করেন। দাওয়াতের উত্তরে মুক্তাগাছার জমিদার শেরপুরে একটি জায়গা চান যেখানে তিনি বিশ্রাম করবেন। সে সময় এখানে জমিদারের খাজনা আদায়ের ঘরসহ পাশে আরেকটি ঘর ছিলো, জমিদার এলাকাটি মুক্তাগাছার জমিদারকে দেবেন বলে মনস্থির করেন এবং হাতি দিয়ে ঘরগুলো ভেঙে দেওয়ার আদেশ করেন। কিন্তু হাতিটি ঘর ভাঙতে ঘরের কাছে যায়, তখনই সালাম দিয়ে বসে যায়। অদ্ভুত এ খবর শুনে তিনআনি জমিদার এসে দেখেন ঘরের ভেতরে একজন নারী ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন। জমিদার বিষয়টি বুঝতে পারেন এবং ক্ষমা চেয়ে ফেরত যান। সেই নারীর নাম ছিল মাইসাহেবা। মাই সাহেবার মৃত্যুর পর জমিদার এখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করে মাইসাহেবা জামে মসজিদ নামকরণ করেন। এবং সেই মাইসাহেবার কবর দেওয়া হয় সেই মসজিদেই।

মাইসাহেবা জামে মসজিদটি ৩ তলা। নীচতলায় রয়েছে নামাজের ব্যবস্থা ও  ওযুর ব্যবস্থা। দোতলা নামাজের ব্যবস্থা এবং ধর্মীয় পাঠাগার রয়েছে। বর্তমানে মূল মসজিদে ১০ হাজার মুসল্লী একত্রে নামায আদায় করতে পারেন।  মসজিদের প্রবেশ পথে দুইটি দৃষ্টি নন্দিত গেইট রয়েছে বড় গেইট এবং মসজিদের দুটি সুউচ্চ মিনার রয়েছে,এখানে মহিলাদের নামাজের স্থান রয়েছে ও সমগ্র মসজিদ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত করার কাজ চলছে। নিরাপত্তা জন্য রয়েছে সিসি ক্যামেরা।মাইসাহেবা মসজিদে বয়স্কদের বিনামূল্যে কোরআন শেখানোর ব্যবস্থা রয়েছে। অসংখ্য বয়স্ক মানুষ প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর ২ ঘন্টা করে সহিহ-শুদ্ধভাবে কোরআন ও তাজভিদ শেখেন।

মসজিদটি পাহারা দেওয়ার জন্য দু’জন লোক রয়েছেন। একজন মসজিদ কর্তৃপক্ষের অন্যজন পৌর কর্তৃপক্ষের। মসজিদসহ মসজিদ সংলগ্ন এলাকা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা দিয়ে নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রতি শুক্রবারে দূরদুরান্ত থেকে অনেক মানুষ আসে এই মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করতে। অনেক দেশি-বিদেশি পর্যটক মাইসাহেবা জামে মসজিদ দর্শন করতে আসে প্রতিদিন।মাইসাহেবা মসজিদে বয়স্কদের বিনামূল্যে কোরআন শেখানোর ব্যবস্থা রয়েছে। অসংখ্য বয়স্ক মানুষ প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর ২ ঘন্টা করে সহিহ-শুদ্ধভাবে কোরআন ও তাজভিদ শেখেন।

মাইসাহেবা মসজিদে লোকজন প্রচুর দান করেন। এমনকি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরাও এখানে দান করেন নিয়মিত। দিনমজুর থেকে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রী, ভিক্ষুকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এখানে দান করে তৃপ্তিবোধ করেন। বিশেষ করে এ রোডে চলাচলকারী পাবলিক পরিবহনের ড্রাইভাররা দিনের শুরু এবং শেষভাগে নিয়মিত দান করেন।এ মসজিদের নামে বিভিন্ন যানবাহন ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।