স্বায়ত্তশাসন পুন:প্রতিষ্ঠা সহ ১১ দফা দাবিতে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে গণ-জমায়েত অনুষ্ঠিত

জাতীয়

মে ৮, ২০২৫ ৪:৪২ অপরাহ্ণ

শওকত আলী হাজারী ।।

স্বায়ত্তশাসন পুন:প্রতিষ্ঠা এবং মন্ত্রণালয়ের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও কর্তৃত্ববাদী আচরণের প্রতিবাদে ০৪ মে ২০২৫ খ্রি. রবিবার বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের সর্বস্তরের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পক্ষ থেকে গণ-জমায়েত অনষ্ঠিত হয়েছে। গণ-জমায়েত শেষে বিজ্ঞানী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি প্রতিনিধি দল দাবির স্বপক্ষে সংগ্রহকৃত গণস্বাক্ষরের কপিসহ একটি স্মারকলিপি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার নিকট দাখিল করেন।

বিদ্যমান সমস্যাদি সমাধানে কমিশনের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পক্ষ থেকে গত ১৫.১২.২০২৫ তারিখে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা মহোদয় বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। উক্ত স্মারকলিপির ব্যাপারে মন্ত্রণালয় হতে কোনো সাড়া এবং আলোচনার সুযোগ না পেয়ে গত ১০ এপ্রিল কমিশনের সকল সংগঠনের পক্ষ থেকে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে অনুরোধ জানিয়ে পুনরায় পত্র প্রদান করা হয়। এরপরও মন্ত্রণালয়ের কোন সাড়া না পাওয়ায় গত ২২ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে ঢাকার আগারগাঁও এ অবস্থিত কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে বিজ্ঞানী-কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দের পক্ষ হতে একটি সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয় এবং একই দিন হতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২৩ এপ্রিল, ২০২৫ হতে কমিশনের সকল প্রতিষ্ঠানে একযোগে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। এরপর গত ২৭-২৮ এপ্রিল ২০২৫ বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রধান কার্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত ৪০টি প্রতিষ্ঠানে একযোগে অবস্থান গ্রহণ এবং গণস্বাক্ষর গ্রহণ কর্মসূচী পালিত হয়েছে। পরবর্তীতে গত ২৯ এবং ৩০ এপ্রিল সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (বাপশক) আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (IAEA) রীতিনীতি অনুসরণ করে বাংলাদেশে পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, উন্নয়ন, প্রসার, তদ্‌সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম, সেবা ও শিক্ষা সম্পর্কিত কার্যক্রম পরিচালনা, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং এতদসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি সম্পাদনের জন্য ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় । এই কমিশনটি ১৯৭৩ সালের প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডার নং ১৫ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এবং ২০১৭ সালের আইন নং ২৩ পরিচালিত একটি বিশেষায়িত গবেষণা প্রতিষ্ঠান।

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসন আমলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট আমলারা কমিশনের আইনকে উপেক্ষা করে কমিশনের শীর্ষ পদগুলি শূন্য রেখে কমিশনকে দূর্বল করে মন্ত্রণালয়ের আজ্ঞাবহ একটি নতজানু প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিল। ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায় নিলেও সে অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি বরং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আমলাদের কর্তৃত্ববাদী আচরণ ও কমিশনের এখতিয়ারভূক্ত কাজে অযাচিত হস্তক্ষেপ দিন দিন বেড়েই চলেছে যা কমিশনের স্বায়ত্তশাসনকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং কমিশনের কর্মদক্ষতা, মর্যাদা ও মনোবলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ পরিস্থিতিতে কমিশনের গবেষণা কর্মকান্ড ও সেবা কার্যক্রম পরিচালনা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এ পেক্ষাপটে, চলমান আন্দোলন ও ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ না নেয়ায় দাবিসমূহ বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

স্মারকলিপির ১১ দফা দাবিসমূহ:

১। কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের শূন্য পদে দ্রুত স্থায়ী নিয়োগ দিয়ে পূর্ণ কমিশন গঠন।

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট আমলারা পূর্ণ কমিশন গঠন না করে কমিশনকে দূর্বল করে রেখে মন্ত্রণালয়ের আজ্ঞাবহ একটি নতজানু প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিল। বর্তমানেও কমিশনে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং একজন মাত্র সদস্য চলতি দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ কমিশন না থাকায় কমিশনের কার্যক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ভীষণভাবে ব্যহত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে এবং কমিশনের কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দ্রুত পূর্ণ কমিশন গঠন করা প্রয়োজন।

২। কমিশনের স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখার স্বার্থে কমিশনের এখতিয়ারভূক্ত কাজে মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ বন্ধ করে গবেষণাবান্ধব ও সম্মানজনক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় নীতিগত বিষয়ে বাইরে কমিশনের এখতিয়ারভূক্ত অভ্যন্তরীন কাজে অযাচিত হস্তক্ষেপ করে থাকে, যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কমিশনের গবেষণা ও সেবা কার্যক্রম এবং প্রশাসনিক কার্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় মন্ত্রণালয়ের সকল ধরণের অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করে সন্মানজনক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা আবশ্যক। সংবেদনশীল পরমাণু প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে এর সুফল যথাযথভাবে কাজে লাগাতে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনকে ভারত ও পাকিস্থানের পরমাণু শক্তি কমিশনের ন্যয় মন্ত্রণালয়ের বাইরে সরাসরি সরকার প্রধানের নিয়ন্ত্রনে নেয়ার বিষয়টি সদয় বিবেচনা করা যেতে পারে।

৩। দেশে/বিদেশে উচ্চশিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের পূর্বানুমতি এবং মনোনয়ন দেয়ার এখতিয়ার কমিশনে ফিরিয়ে দিতে হবে।

বাপশক চাকুরীবিধিমালা-১৯৮৫ এর অনুচ্ছেদ ৩৪ অনুযায়ী বিদেশে উচ্চ শিক্ষা, ফেলোশিপ, গবেষণা, ভিজিটিং এ্যাসিস্টেন্টশিপ, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ, ইত্যাদিতে অংশগ্রহণের পূর্বানুমতি ও মনোনয়ন এখতিয়ার কমিশনের। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং ৩৫১, তারিখ ২৪ আগষ্ট ২০১৬ এর মাধ্যমে বর্ণিত ইভেন্টসমূহে অংশগ্রহণের পূর্বানুমতি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রদান করার নির্দেশনা দেয়া হয়। বৈদেশিক প্রশিক্ষণের মনোনয়নও ২০১৭ সালে কমিশন থেকে মন্ত্রণালয়ে নিয়ে নেয়া হয়। মন্ত্রণালয় থেকে পূর্বানুমতি এবং মনোনয়ন প্রদানের সিদ্ধান্তে অনেক ক্ষেত্রে অনাকাঙ্খিত সময়ক্ষেপণ হয়, উপযুক্ত প্রার্থী উপেক্ষিত হয়, ফলশ্রুতিতে কমিশনের অনেক বিজ্ঞানী প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও সরকারের/কমিশনের আর্থিক সংশ্লেষ না থাকা সত্বেও উচ্চশিক্ষা বা স্বল্পমেয়াদী বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সম্প্রতি এধরণের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিজ্ঞানীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি করছে যা কমিশনের সার্বিক গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মকান্ড অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে অন্তরায়। এমতাবস্থায়, বাপশক চাকুরীবিধিমালা-১৯৮৫ এর অনুচ্ছেদ ৩৪ অনুযায়ী দেশে/বিদেশে উচ্চশিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের পূর্বানুমতি এবং মনোনয়ন দেয়ার এখতিয়ার কমিশনে ফিরিয়ে দিতে হবে।

৪। উচ্চশিক্ষা, প্রশিক্ষণ ইত্যাদির জিও প্রদানে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও বৈষম্য নিরসন করতে হবে, এবং অপ্রাসঙ্গিক তথ্য চাওয়াসহ IDSDP-তে অন্তর্ভুক্তির বাধ্যবাধকতা বন্ধ করতে হবে।

কমিশনের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত উচ্চশিক্ষা/প্রশিক্ষণের পূর্বানুমতি ও সরকারি আদেশ (জিও) কমিশন কর্তৃক ইস্যু করা হতো। কিন্তু ২০১১ সালে জিও প্রদানের ক্ষমতা মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়; তখন থেকেই চাহিদা অনুযায়ী কমিশনের জনবলের অনুকূলে জিও জারীর ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের অযাচিত হস্তক্ষেপ এতোটাই বেড়েছে যে, পূর্ণ স্কলারশিপ থাকা সত্ত্বেও বেশ কিছু বিজ্ঞানীকে বিদেশে উচ্চশিক্ষার অনুমতি প্রদান করা হয়নি। একইভাবে, অনেক বিজ্ঞানীকে বিদেশের বিভিন্ন সেমিনার/সিম্পোজিয়াম/ওয়ার্কশপ ইত্যাদিতে অংশগ্রহণের জিও প্রদান করা হয়নি। অন্যদিকে, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা শুধুমাত্র বিদেশ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞানীদের বাদ দিয়ে নিজেরা টেকনিক্যাল ট্রেনিংএ মনোনয়ন নেওয়ার মতো কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। গত এক বছরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা পরমাণু প্রযুক্তি বিষয়ক প্রায় ৩০টি বিভিন্ন বৈদেশিক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহন করেছেন বা মনোনয়ন নিয়েছেন। অতিসম্প্রতি অত্যন্ত স্বনামধন্য আমেরিকার Fulbright Fellowship এবং জাপানের JSPS Fellowship প্রাপ্ত বিজ্ঞানীদেরকে মন্ত্রণালয় থেকে Post-Doc-এর জিও প্রদান করা হয়নি। বর্তমান সরকার যখন বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণকে উৎসাহিত করছেন এবং বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও দাতা সংস্থাকে উচ্চ শিক্ষার বৃত্তি প্রদানের আহবান জানাচ্ছেন তখন মন্ত্রণালয়ের কোন অশুভ শক্তি বিদেশের স্বনামধন্য পূর্ণ বৃত্তি পাওয়া সত্ত্বেও উচ্চ শিক্ষায় বাধা প্রদান করছে তা খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এছাড়া, বিগত সরকারের আমলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সেবা প্রদানের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে Integrated Digital Service Delivery Platform (IDSDP) নামে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরী করে। সংশ্লিষ্টতা ও যৌক্তিকতা না থাকা সত্ত্বেও মনোনয়ন ও জিও প্রদানের পূর্বশর্ত হিসেবে কমিশনের বিজ্ঞানী/কর্মকর্তাদের উক্ত প্লাটফর্মে অন্তর্ভুক্ত হতে বাধ্য করা হচ্ছে। সম্প্রতি বেশ কিছু বিজ্ঞানী/কর্মকর্তা উক্ত প্লাটফর্মে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় তাদের মনোনয়ন ও জিও প্রদান করা হয়নি। কমিশনের বিজ্ঞানী/কর্মকর্তাদের নিয়োগকর্তা কমিশন, সে হিসেবে বিজ্ঞানী/কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত প্রোফাইল কমিশনের নিজস্ব ওয়েবসাইটে থাকাটাই বাঞ্চনীয়।

৫। কমিশনের নিউক্লীয় তথ্যের সুরক্ষা ও গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে, কমিশনকে iBAS++ সিস্টেমের বাইরে রেখে বাপশক আইন ২০১৭-এর ধারা ২০(১) ও ২০(২) অনুযায়ী কমিশনের তহবিল তফসিলি ব্যাংকে জমা ও বিধি অনুসারে ব্যয় নির্বাহের এখতিয়ার বলবৎ রাখতে হবে।

পারমাণবিক বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট গবেষণা, প্রকল্প ও তার ব্যবস্থাপনা ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায় iBAS++-এর মতো একটি সার্বজনীন সিস্টেমে এ ধরনের তথ্য আপলোড করা সমীচীন নয় বলে কমিশনের বিজ্ঞানীরা মনে করে। বিশ্বের অন্য কোনো দেশেই নিউক্লীয় পদার্থ, সংশ্লিষ্ট গবেষণা ব্যয় বা নিউক্লিয়ার বিজ্ঞানীদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করা হয় না। বাংলাদেশের নিউক্লীয় পদার্থ ও নিউক্লীয় স্থাপনার ভৌত সুরক্ষা প্রবিধানমালা, ২০২৪-এর অনুচ্ছেদ ৯(১) ও ৯(২) অনুযায়ী নিউক্লীয় স্থাপনার তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ, সংবেদনশীল তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা এবং তথ্যে প্রবেশাধিকার সীমিত রাখার নির্দেশনা রয়েছে। অন্যদিকে, IAEA Nuclear Security Series No. 23-G-এ পারমাণবিক নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করতে পারে এমন তথ্য (যেমন: তেজস্ক্রিয় পদার্থের ব্যবহার, সংরক্ষণ ও পরিবহণ সংক্রান্ত তথ্য; কর্মকর্তা-কর্মচারী, সরবরাহকারী ও ঠিকাদারের বিবরণ) নিরাপদ রাখার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও, বাপশক আইন, ২০১৭-এর ধারা ২০(২) অনুযায়ী, কমিশনের তহবিল কমিশনের নামে নির্দিষ্ট তফসিলি ব্যাংকে জমা রাখতে হবে এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে তা পরিচালনা করতে হবে। iBAS++-এ PL অ্যাকাউন্টে তহবিল জমা রাখলে তা উক্ত আইনের ব্যতয় হবে।

উল্লেখ্য, iBAS++ সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় মন্ত্রণালয় কমিশনের অনুকুলে অর্থ ছাড় বন্ধ করে, ফলে কমিশনের ২৫০০ কর্মচারী ঈদের আগে (মার্চ/২৫) বেতন ভাতা প্রাপ্ত হননি। কমিশনের ৫২ বছরের ইতিহাসে বেতনভাতা বন্ধ করার মতো অমানবিক, মর্যাদাহানিকর এবং অগ্রহণযোগ্য ঘটনা এই প্রথম।

এমতাবস্থায়, উপযোগিতা যাচাই ও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি (তথ্য সিকিউরিটি, হাল নাগাদ সাংগঠনিক কাঠামো তৈরী, রাজস্বখাতে সৃজিত অস্থায়ী পদ স্থায়ীকরণ, চাকুরীবিধিমালা সংশোধন ইত্যাদি) সম্পন্ন করার জন্য কমিশনকে যৌক্তিক সময় প্রদান করাসহ আপাততঃ কমিশনকে iBAS++ সিস্টেমের বাইরে রেখে বিদ্যমান ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে আর্থিক ব্যবস্থাপনা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করতে হবে।

৬। বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের অবনমনকৃত সকল পদ নির্ধারিত গ্রেডে উন্নীত করে বৈষম্য নিরসন করতে হবে।