সরকারি প্রতিষ্ঠানেও চালু হচ্ছে ইন্টার্নশিপ

সরকারি প্রতিষ্ঠানেও চালু হচ্ছে ইন্টার্নশিপ

জাতীয় স্পেশাল

জানুয়ারি ১৫, ২০২৩ ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ

বেসরকারির মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানেও ইন্টার্নশিপ চালু হচ্ছে। বস্ত্র মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এ কার্যক্রম শুরু করবে। একজন শিক্ষার্থী একটির বেশি মন্ত্রণালয়ের প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন না।

প্রশিক্ষণের মেয়াদ হবে ৩ থেকে ৬ মাস। স্নাতক অথবা সমমানের ডিগ্রিধারীরা এ কোর্সে ভর্তির যোগ্য। ইন্টার্নশিপ চলাকালে জরুরি প্রয়োজনে ২ মাসের ছুটি পাওয়া যাবে। ছুটিতে থাকার সময় তিনি কোনো ভাতা পাবেন না। শিক্ষা জীবন শেষের ২ বছরের মধ্যেই ইন্টার্নশিপ করতে হবে।

৫ বছর কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নবম গ্রেডের কর্মকর্তাকে সুপারভাইজার হিসাবে নিয়োগ দেবে সরকার। এসব বিধিবিধান রেখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত নীতিমালার খসড়া তৈরি করেছে। যা সরকারি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ নীতিমালা-২৩ নামে অভিহিত হবে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

ইন্টার্নশিপ নীতিমালা তৈরির বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ক্যারিয়ার প্ল্যানিং ও প্রশিক্ষণ (সিপিটি) অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. সহিদউল্যাহ শনিবার বলেন, দেশে দক্ষ প্রশিক্ষকের অভাব। দক্ষ প্রশিক্ষক অর্থাৎ রিসোর্সফুল পারসন তৈরি করা এবং শিক্ষার্থীদের সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দিতেই এই নীতিমালা হচ্ছে।

সরকার প্রশিক্ষণ খাতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে কিন্তু প্রশিক্ষক না থাকায় ফলাফল শূন্য। সে ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে বিশ্বমানের প্রশিক্ষক তৈরি করার পরিকল্পণা রয়েছে। সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব এবং যুগ্ম সচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে দুটি প্রশিক্ষক শ্রেণি তৈরি করা হবে। আইন ও বিধিবিধান, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা, সরকারি ক্রয় ইত্যাদি বিষয়ে তারা প্রশিক্ষণ দেবেন। সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করা যাবে।

শিক্ষার্থী বা ইন্টার্ন বাছাইয়ের বিষয়ে খসড়ায় বলা হয়, একমাত্র মেধার ভিত্তিতে শিক্ষার্থী বাছাই করা হবে। বিষয় নির্ধারণ করবে মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। দপ্তর সংস্থাগুলো মন্ত্রণালয়ের কাছে ইন্টার্নশিপ প্রদানের অনুমতি চাইবে। অনুমতি পাওয়ার পর তারা বহুল প্রচারিত মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করবে। ৩ থেকে ৫ সদস্যের একটি বাছাই কমিটি থাকবে।

যোগ্যতাসম্পন্ন নারী, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন জনগোষ্ঠীর আবেদনকারীদের উৎসাহিত করা হবে। ব্যয় নির্বাহের জন্য অর্থবিভাগের পূর্বানুমোদন নিয়ে ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ আলাদা অর্থনৈতিক কোড চালু করবে।

শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত হারে ভাতা পাবে। ভাতা ছাড়া অন্য কোনো সুবিধা পাবে না। সুপারভাইজারের কাছ থেকে সন্তোষজনক প্রত্যয়ন ছাড়া ভাতা পাওয়া যাবে না। বিশেষ করে পাঠদান কক্ষে নিয়মিত উপস্থিতি সন্তোষজনক হতে হবে। সফল ভাবে কোর্স সম্পন্ন হলে শিক্ষার্থীকে সনদ দেওয়া হবে। ইন্টার্নশিপ কোনো ভাবেই স্থায়ী, অস্থায়ী বা অন্য কোনো চাকরির ক্ষেত্রে প্রাধিকার বা অগ্রাধিকার হিসাবে গণ্য হবে না।

ভর্তির সময় শিক্ষার্থীকে শিক্ষাসনদ, মৌলিক যোগ্যতা বা গুণাবলীর প্রত্যয়ন, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি এবং কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ করলে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়ন জমা দিতে হবে। যদি কর্তৃপক্ষ মনে করে তাহলে প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে যোগদানের আগে পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে পারবে।

কাজের মান সন্তোষজনক না হলে, আচরণ সরকারি সেবা প্রদানের রীতি বিরুদ্ধ হলে, রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হলে, অপরাধে জড়ালে, পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে কাজে অনুপস্থিত হলে এবং ইন্টার্ন কর্তৃপক্ষের আইনসঙ্গত কোনো আদেশ অমান্য করলে একজন শিক্ষার্থীর ইন্টার্নশিপ বাতিল হতে পারে। এছাড়া যে কোনো শিক্ষার্থী যখন-তখন ইন্টার্নশিপ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করতে পারবেন। কোনো প্রকার কারণ দর্শানো ছাড়াই ইন্টার্ন কর্তৃপক্ষ ইন্টার্নশিপ বাতিল করতে পারবে।

অসুস্থতা কিংবা ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে ইন্টার্নশিপ করতে না পারলে সর্বোচ্চ ২ মাসের ছুটি পাবেন। তবে ২ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর আর ওই কোর্সে অংশ নিতে পারবেন না। ছুটিতে থাকাকালীন শিক্ষার্থী কোনো ভাতা পাবেন না।

সুপারভাইজারের দায়িত্বের বিষয়ে নীতিমালায় বলা হয়, দাপ্তরিক কাজের সঙ্গে প্রশিক্ষণ কোর্সের সমন্বয় করা, প্রশিক্ষণ পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করা, আচরণ পর্যবেক্ষণ ও প্রশিক্ষণের মানোন্নয়নের জন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করে পরামর্শ প্রদান করা। এ নীতিমালা বাস্তবায়নে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সার্বিক সহযোগিতা করবে। সব মন্ত্রণালয় ইন্টার্নশিপের যাবতীয় তথ্য ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে বাৎসরিক প্রতিবেদন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। ইন্টার্নশিপ বাস্তবায়নের সুবিধার্থে একটি ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম চালু করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *