মণিপুরে জাতিগত সংঘর্ষে ঘরছাড়া ২৩ হাজার মানুষ

মণিপুরে জাতিগত সংঘর্ষে ঘরছাড়া ২৩ হাজার মানুষ

আন্তর্জাতিক স্লাইড

মে ৯, ২০২৩ ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ

ভারতের মণিপুর রাজ্যে চলছে ব্যাপক অস্থিরতা। এর আগে মণিপুরে মেতিস গোষ্ঠীকে স্কেজিউলড ট্রাইবে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেয় আদালত। সেই রায়কে কেন্দ্র করেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের মণিপুর রাজ্য।

মণিপুরে জাতিগত সংঘর্ষে প্রাণহানির পরে ২৩ হাজারেরও অধিক মানুষকে বাড়িঘর থেকে সরিয়ে অস্থায়ী আশ্রয়স্থলে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। এই হামলায় মানুষকে নিরাপদে রাখতে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

গত সপ্তাহে আদিবাসী সম্প্রদায়গুলো রাজ্যের প্রধান জাতিগোষ্ঠীর উপজাতীয় মর্যাদার দাবির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে একটি সমাবেশ করার পর সহিংসতা শুরু হয়। এ সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৫৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

সোমবার ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দাবি করে জনগণকে শান্তি বজায় রাখার আহবান জানিয়েছেন। মণিপুর সরকার এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সমস্ত স্টেকহোল্ডারদের সাথে পরামর্শ করবে বলে তিনি জানান।

মণিপুরের জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশ নিয়ে গঠিত মেতিস সম্প্রদায়ের সদস্যরা বছরের পর বছর ধরে তফসিলি উপজাতি বিভাগে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়ে আসছে। এটি হলে, তাদের বনভূমিতে প্রবেশাধিকার দেবে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি চাকরিতে জায়গা পাওয়ার নিশ্চয়তা দেবে।

এরইমধ্যে তফসিলি উপজাতি হিসাবে স্বীকৃত সম্প্রদায়গুলো, বিশেষ করে পার্বত্য জেলাগুলোতে বাসকারী কুকিরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, মেতিসদের দাবি মেনে নেয়া হলে তারা তাদের পূর্বপুরুষের বনভূমির উপর নিয়ন্ত্রণ হারাবে।

শৃঙ্খলা বজায় রাখতে রাজ্যে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে এবং ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাপক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে রাজ্য সরকার।

গত সপ্তাহে রাজ্যের গভর্নর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ‘চরম ক্ষেত্রে’ ‘দেখামাত্র গুলি করার’ আদেশ জারি করেন। রোববার সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, ২৩ হাজারেরও বেশি বেসামরিক নাগরিককে উদ্ধার করে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, সৈন্যরা ‘সকল সম্প্রদায়ের বেসামরিক নাগরিকদের উদ্ধার করতে, সহিংসতা রোধ করতে এবং স্বাভাবিক পরিস্থিতি পুনরুদ্ধার করতে গত ৯৬ ঘণ্টা ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করার পর’ লড়াইয়ে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। তবে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় এখনও উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

স্থানীয়রা বলছেন, তারা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। স্থানীয় বাসিন্দারা সেনাবাহিনীর আশ্রয়ে থাকলেও, অন্যান্য রাজ্য তাদের লোকদের মণিপুর থেকে বের করে আনতে উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে।

সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *