বুলবুল আহমেদকে হারানোর এক যুগ

বিনোদন

জুলাই ১৬, ২০২২ ৮:৩৬ পূর্বাহ্ণ

সত্তর-আশির দশকে সুদর্শন নায়ক বলতে যে কজন ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম বুলবুল আহমেদ। ব্যাংকার থেকে নায়ক হয়ে ওঠার সিড়িটা বেশ মসৃণই ছিল এই নায়কের। তাকে হারানোর প্রায় এক যুগ। কণ্ঠস্বর ছিল বলিষ্ঠ, সুদৃঢ়। উত্তম কুমার, দিলীপ কুমারের বেশ ভক্ত ছিলেন তিনি। ছোট থেকে বড় হয়েছেন তাদের স্টাইল অনুসরণ করেই। সাদাকালো দেবদাস যুগ পেরিয়ে রঙিন মহানায়ক চলচ্চিত্রের মতোই তিনি সময় থেকে সময়কে জয় করেছেন স্বমহিমায়।

বুলবুল আহমেদ। সত্তর-আশির দশকে সুদর্শন নায়ক বলতে যে কয়জন বাঙালির মন জয় করেছেন, তরুণীদের স্বপ্নের মানুষ হয়েছেন, তাদের অন্যতম ছিলেন বুলবুল।

নিপাট সাধাসিধা একজন ছিলেন, হওয়ার কথা ছিল ব্যাংকার, কাজ শুরুও করেছিলেন ব্যাংক জগতে। ব্যাংকের শাখা প্রধান হিসেবে চাকরি করেন টানা ১০ বছর। বাবা ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা তবে পরিবার ছিল সংস্কৃতিমনা। বাড়িতেই নাটকের মহড়া চলত। বাবা খলিল আহমেদ একই সঙ্গে নাটকে অভিনয় করতেন এবং নির্দেশনা দিতেন। আড়াল থেকে, কখনো জানালা কখনো বা দরজার ফাঁক দিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে এই মহড়া দেখতেন ছোট ছেলে বুলবুল আহমেদ। এই আসর থেকেই তিনি অভিনয়ের অনুপ্রেরণা পান।

অভিনয় জীবন শুরু হয়েছিল ছোটপর্দায় অভিনয়ের মাধ্যমে। টেলিভিশনে বুলবুল আহমেদের প্রথম নাটক আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘পূর্বাভাস’। ‘ইডিয়েট’ নাটকটির জন্য তিনি দর্শক হৃদয়ে আজও এক দুর্লভ স্থান অধিকার করে আছেন। যেকোনো নাটকে অভিনয়ের সময় বুলবুল আহমেদ নাটকের চরিত্রের ভেতর মিশে যেতেন। টেলিভিশন নাটক ‘এপিঠ ওপিঠ’-এর চলচ্চিত্ররূপ ছিল এই ‘ইয়ে করে বিয়ে’। রুপালি পর্দায় প্রবেশের সময় শিষ্যের নাম পাল্টে ‘বুলবুল’ রাখলেন পরিচালক আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম। দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘অঙ্গীকার’-এ নায়ক হিসেবে অভিনয়ের পাশাপাশি কার্যনির্বাহী প্রযোজক হিসেবেও কাজ করেন তিনি। এই চলচ্চিত্রেই কবরীর সঙ্গে জুটি বেঁধে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। এই জুটি পরবর্তীতে আরও অনেকগুলো কাজ করে প্রশংসিত হয়।

শখের অভিনয়, নেশা থেকে পেশায় পরিণত হতে বেশি সময় লাগেনি। ১০ বছরের ব্যাংকিং পেশা ছেড়ে দিয়ে দৃঢ় প্রত্যয়ে অভিনয়ে নেমে পড়েন বুলবুল আহমেদ। সে সময় ‘জীবন নিয়ে জুয়া’ সিনেমাটির মধ্য দিয়ে ববিতার সঙ্গে জুটি বেঁধে দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেন। কর্মজীবনের স্বীকৃতি স্বরূপ বুলবুল আহমেদ চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। সুদর্শন এই নায়কে ওপারে পাড়ি জমানোর এক যুগ। ২০১০ সালের এই দিনে তিনি পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *