বিক্রি হলো বিশ্বের সবচেয়ে দামি বার্গার

ফিচার স্পেশাল

মে ১০, ২০২২ ৮:৪০ পূর্বাহ্ণ

এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দামি বার্গারটি বিক্রি হয়েছে ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগনের এক রেস্তোরাঁয়। তার ওজন ছিল ৩৫২ দশমিক ৪ কেজি। দাম ছিল ৪ হাজার ২০০ ইউরো। এত ওজনদার বার্গারটি নিশ্চিতভাবেই একজন মানুষের জন্য তৈরি করা হয়নি। তখনই কেবল মাত্র একজন মানুষের উপযোগী করে নতুন রেসিপির সবচেয়ে দামি বার্গার তৈরির চ্যালেঞ্জ নেন রবার্ট জ্যান ডি ভিন।

করোনার অর্থনৈতিক দুর্দশার মধ্যেও টিকে থাকার নতুন এ কৌশল আবিষ্কারের পরই কাজে নেমে পড়েন নেদারল্যান্ডসের রেস্তোরাঁ মালিক ভিন। তার মতে, মহামারিতে কাজ হারিয়ে দরিদ্র হওয়া মানুষের দিকে তাকিয়ে তার কষ্ট হতো। তাই ওই বার্গারের টাকা তিনি দরিদ্র মানুষের খাদ্য সংগ্রহে দিতে চেয়েছিলেন।

কাজে নামার পর বার্গার তৈরির উপাদান চূড়ান্ত করতে পাঁচ মাসেরও বেশি সময় লেগেছে ভিনের। রেসিপি ও উপাদান চূড়ান্ত হওয়ার পর বার্গারটি তৈরি করতে প্রায় ৯ ঘণ্টা সময় লাগে। এরপরই তিনি সামনে আনেন বিশ্বের সবচেয়ে দামি হ্যামবার্গার। ৫ হাজার ৯৬৪ ডলার দামের এ হ্যামবার্গারের নাম রাখা হয়েছে দ্য গোল্ডেন বয়।

গত ২৮ জুন নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বহু সমন্বিত ব্যবসা রেমিয়া ইন্টারন্যাশনালের কাছে এটি বিক্রি করা হয়। পরে বিক্রির এ টাকা দাতব্য খাতে ব্যয়ও করেন তিনি।

বেশ কয়েক স্তরের বার্গারটিতে ছিল জাপানি ওয়াগু গরুর মাংস, বেলুগা ক্যাভিয়ার, আলাস্তার কিং কাঁকড়া ও সাদা ট্রাফল। বার্গার তৈরির জন্য যে রুটি ব্যবহার করা হয়েছে, তা মোড়ানো ছিল খাদ্যোপযোগী সোনার পাতলা আবরণ দিয়ে।

বার্গার বিক্রি করে পাওয়া অর্থ নেদারল্যান্ডসের খাদ্য ব্যাংকভিত্তিক একটি অলাভজনক সংগঠনকে দান করেছেন রবার্ট জ্যান ডি ভিন। এর মাধ্যমে দাতব্য সংগঠনটি অভুক্ত মানুষের জন্য অন্তত এক হাজারটি খাদ্যসহায়তা প্যাকেজ তৈরি করতে পারবে।

৩৩ বছর বয়সী ভিন বলেন, আমি বিশ্বের সবচেয়ে দামি বার্গারটি তৈরি করতে চেয়েছিলাম। সেই সঙ্গে এটি বিক্রি করে পাওয়া অর্থ সমাজের মানুষের প্রয়োজনে ব্যয় করতে চেয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত আমার চাওয়া পূর্ণ হয়েছে।

রবার্ট ভিন বলেন, এতে সংযুক্ত প্রতিটি উপাদানের স্বাদ একে অন্যকে পরিপূর্ণ করে। স্বাদগুলো খুবই স্বতন্ত্র। যেহেতু বার্গারের রুটিগুলোতে সোনার পাতলা আবরণ থাকে, তাই খাওয়া শেষে হাতের আঙুলগুলো সোনালি রং ধারণ করতে পারে।

বার্সেলোনাভিত্তিক ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অ্যাসোসিয়েশনে নিবন্ধনের জন্য বার্গারটির তথ্য পাঠানো হয়েছে। এটি এখনো পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ায় রয়েছে। ভিন বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল কোনো না কোনো ক্ষেত্রে বিশ্বরেকর্ড গড়ার। অবশেষে আমি সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি। গত বছর কভিড-১৯ রোগের কারণে খুবই খারাপ কেটেছে। কিন্তু ভালো সময় শুরু হয়েছে। শিগগিরই গোটা পরিষেবা শিল্প ঘুরে দাঁড়াবে।

ভিনের রেস্তোরাঁটির যাত্রা হয় ৩০ বছর আগে। তার বাবা-মা এটি শুরু করেছিলেন। এখন সফলভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভিন। এখন তার অপেক্ষা দ্য গোল্ডেন বয়ের জন্য দ্বিতীয় ক্রেতা খুঁজে বের করা। আশা করছেন শিগগিরই নতুন ক্রেতার দেখা পাবেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *