পরকীয়ায় জড়িয়েছেন বুয়েট শিক্ষক, অভিযোগ পেয়েও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন

দেশজুড়ে স্পেশাল

সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২ ৪:২৯ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

একের পর এক নীতিবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে বিতর্কিত হয়ে উঠছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে তিনি ভেঙেছেন ভুক্তভোগী তানভীর মাহমুদের সাজানো সংসার। শুধু তাই নয় তানভীর মাহমুদ এর বিচার চাওয়ায় মাহফিজুর রহমান দিচ্ছেন হত্যার হুমকি। এ ঘটনায় থানায় জিডি হয়েছে।

বুয়েট প্রশাসনের কাছে বিচার চেয়েছেন ভুক্তভোগী ব্যক্তি। কিন্তু অভিযোগ পাওয়ার পর শুধুমাত্র হাতে লেখা কাগজে প্রাপ্তিস্বীকার করে দায় সেরেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শুধু পরকীয়া নয়, শিক্ষার্থী অশালীন প্রস্তাব দেওয়া, পছন্দের ব্যক্তিগত জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার মতো অভিযোগও রয়েছে শিক্ষক মাহফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। একের পর এক চাকরির শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড করলেও চাকরিতে বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাবশালী শিক্ষক হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

ভুক্তভোগী তানভীর মাহমুদ জানান, ২০১৭ সালে পেট্রোবাংলার উপ-ব্যবস্থাপক মুসলিমা আকতারকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পরই চলে যান ফিনল্যান্ডে। স্ত্রী রয়ে যান ঢাকায়। এই সুযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে মুসলিমা আকতারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বুয়েটের অধ্যাপক ড. মাহফিজুর রহমানের। বিষয়টি বুঝতে পেরে মাহফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি জিডিও করা হয়।

এ ছাড়া ড. মাহফিজুর রহমানের নীতিবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের প্রতিকার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে আবেদন জানান তানভীর মাহমুদ। ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর এই আবেদন করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

অভিযোগ পাওয়ার পর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. দেলোয়ার হোসেন বলেছিলেন, অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে মাননীয় উপাচার্য অবগত আছেন। বিষয়টি থানা পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায়। পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

স্ত্রীর পরকীয়া থামাতে না পেরে ভুক্তভোগী তানভীর মাহমুদ অভিযোগ দেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের। স্বামী তানভীরের সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে মুসলিমা আকতার ফিনল্যান্ডের নাগরিকত্বও নিয়েছেন। কিন্তু সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা না দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী তানভীর মাহমুদ অপু বলেন, ‘বুয়েটের ওই শিক্ষকের কারণে আমার সংসার ভেঙে গেছে। আমি শুনেছি ওই শিক্ষক প্রভাবশালী। এই কারণে আমি বিচার পাচ্ছি না।’

তার প্রাক্তন স্ত্রী মুসলিমা আকতার সরকারি চাকরিতে বহাল থেকেই ফিনল্যান্ডে নাগরিকত্ব নিয়েছেন- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তানভীর বলেন, ‘আমি জ্বালানি মন্ত্রণালয়েও অভিযোগ দিয়েছি। সরকারি চাকরি করেই মুসলিমা আকতার আমার মাধ্যমে ফিনল্যান্ডে নাগরিকত্ব নিয়েছে। এটি নিয়ে ঝামেলা হয়ে আছে। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কমিটিও হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে আর কোনো সুরাহা হয়নি। এই কারণে আমি হতাশাগ্রস্ত।’

‘আমি চাই ড. মাহফিজুর রহমানের উপযুক্ত সাজা হোক। তার মতো নীতিভ্রষ্ট শিক্ষক বুয়েটের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার ঠিক নয়’ বলেন তানভীর মাহমুদ।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অধ্যাপক ড. মাহফিজুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ফলে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *