‘কেজিএফ’-এর রকির মতো বিখ্যাত হতে একের পর এক নিরাপত্তারক্ষী হত্যা!

‘কেজিএফ’-এর রকির মতো বিখ্যাত হতে একের পর এক নিরাপত্তারক্ষী হত্যা!

ফিচার

ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩ ১২:০৭ অপরাহ্ণ

ভারতীয় চলচ্চিত্রের বক্স অফিসে যে সব ছবি ঝড় তুলেছে, তার মধ্যে অন্যতম ‘কেজিএফ’। কন্নড় এই সিনেমার সাফল্য নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। ছবির মূল চরিত্র রকির ভূমিকায় অভিনয় করে রাতারাতি জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছেছেন যশ। এরপর থেকেই ঘরে ঘরে তার ভক্তের সংখ্যা বাড়ছে।

‘কেজিএফ’ ছবিতে রকি চরিত্রটি দাগ কেটেছে অনেকের মনে। অভাবকে সঙ্গী করে বড় হয়ে ওঠা রকি অপরাধ জগতের ত্রাস হয়ে ওঠে। রকির চরিত্রে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনিও গ্যাংস্টার হতে চেয়েছিলেন। খুন করে ‘বিখ্যাত’ হতে চেয়েছিলেন। আর এই মনোবাসনা থেকেই একের পর এক খুন করে অপরাধ দুনিয়ায় হাত পাকান ভারতের মাত্র ১৯ বছরের এক তরুণ।

২০২২ সালের মে মাস। ভারতের মধ্যপ্রদেশে এক নিরাপত্তারক্ষীর দেহ উদ্ধার করা হয়। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। এই ঘটনার ৩ মাস পর সাগর জেলায় আরও ৪ নিরাপত্তারক্ষী খুন হন। ধারাবাহিকভাবে একের পর এক নিরাপত্তারক্ষীকে খুনের ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় সে রাজ্যে।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, একই কায়দায় ওই নিরাপত্তারক্ষীদের খুন করা হয়েছে। রাতে ঘুমের মধ্যে নিরাপত্তারক্ষীদের মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেছে ওই তরুণ। একের পর এক খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ‘স্টোনম্যান’ আতঙ্ক ছড়ায় মধ্যপ্রদেশে।

তদন্তে নামে পুলিশ। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তরুণকে চিহ্নিত করেন তদন্তকারীরা। গত সেপ্টেম্বরে নিরাপত্তারক্ষীদের তদন্তে করা হয়। ভোপাল থেকে গ্রেফতার করা হয় সেই আততায়ীকে। তরুণকে দেখে বিস্মিত হয়ে যান তদন্তকারীরা। মাত্র ১৯ বছর বয়সি এক তরুণ কিনা একের পর এক খুন করেছেন! শিবপ্রসাদ ধ্রুবে নামে ওই তরুণকে গ্রেফতারের পর এমন প্রশ্নই তাড়া করেছিল তদন্তকারীদের মনে।

পুলিশ জানায়, সাগর জেলারই কেসারি এলাকার বাসিন্দা শিবপ্রসাদ। ভোপালের লাল ঘাটি এলাকায় এক নিরাপত্তারক্ষীকে খুন করেন ওই তরুণ। তার পরই তাকে গ্রেফতার করা হয়।

মাত্র ১৯ বছর বয়সে কেন খুন করলেন ওই তরুণ? এই প্রশ্নের উত্তর জেনে হতবাক হয়ে গিয়েছে পুলিশ মহল। জেরায় ওই তরুণ জানান, ‘কেজিএফ’-এর রকি চরিত্রটি দেখে অনুপ্রাণিত হয়েই তিনি এই কাজ করেছেন। পুলিশ সূত্রের দাবি, গ্যাংস্টার হতে চেয়েছিলেন শিবপ্রসাদ। ‘বিখ্যাত’ হওয়াই তার আসল উদ্দেশ্য ছিল। সে কারণেই হত্যালীলা চালিয়েছেন ওই তরুণ।

নিরাপত্তারক্ষীদের হত্যার পর তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে নিতেন শিবপ্রসাদ। তার পর সেই ফোন ব্যবহার করতেন। আর এর জেরেই পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মোবাইল ফোনের লোকেশন খতিয়ে দেখেই শিবপ্রসাদকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে খুনের কথা স্বীকার করেন শিবপ্রসাদ।

অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন শিবপ্রসাদ। কর্মসূত্রে ভারতের গোয়ায় থাকতেন তিনি। পুলিশ সুপার তরুণ নায়েক জানান, ওই তরুণ স্বাভাবিক। সিনেমা দেখে অনুপ্রাণিত হয়েই এই কাজ করেছেন ওই তরুণ। তার মানসিক কোনো সমস্যা নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *