অষ্ট্রেলিয়ায় বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস এবং ২১শে আগস্টের উপর আলোচনা সভা

রাজনীতি স্লাইড

আগস্ট ২৩, ২০২২ ৪:৪২ অপরাহ্ণ

রাশিদা হক কনিকা

গত ২১শে আগস্ট রোববার বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, অষ্ট্রেলিয়া শাখার উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী (জাতীয় শোক দিবস) এবং ২১শে আগস্টের উপর “১৫ই আগস্ট থেকে ২১শে আগস্টঃ একই সূত্রে গাথা” শিরোনামে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

কোরআন তেলাওয়াত দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টে এবং ২০০৪ সালের ২১শে আগস্টে শহীদ সকলের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি মোল্লা মোঃ রাশিদুল হকের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। তিনি বঙ্গবন্ধুর জীবনী, তার মৃত্যু পূর্ববর্তী পরিস্থিতি, তার মৃত্যু, হত্যাকারীদের বিচার, ২১শে আগস্টের সাথে ১৫ই আগস্টের সম্পর্ক ইত্যাদি নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে এক গবেষণামূলক প্রতিবেদন পেশ করেন। এরপর দলের সাধারণ সম্পাদক ড. সানিয়াত ইসলামের সঞ্চালনায় শুরু হয় অনুষ্ঠানের মূল পর্ব।

অনুষ্ঠানের এই পর্যায়ে বক্তব্য রাখেন অস্ট্রেলিয়াতে নিযুক্ত বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সভাপতি ড. মশিউর মালেক, নিউজিল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশ সরকারের অনারারী কনসাল ইঞ্জিনিয়ার শফিকুর রহমান অনু এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।

এরপর অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে শুরু হয় প্যানেল আলোচনা। এই পর্বের প্যানেলিস্ট ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি মোল্লা মোঃ রাশিদুল হক, নিউজিল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশ সরকারের অনারারী কনসাল ইঞ্জিনিয়ার শফিকুর রহমান অনু, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য জাকির হোসেন মারুক এবং বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু গবেষক মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শামস রহমান। এই অংশে প্যানেলিস্টদের উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেকেই প্রশ্ন করেন এবং প্যানেলিস্টরা তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন। তথ্য ও গবেষণামূলক এই অনলাইন আলোচনায় বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে আলোচনা করা ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপট তৈরী, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে বিভিন্ন সংগঠন, ব্যক্তি এবং দেশের সম্পৃক্ততা, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। এই অংশে উইকিলিকসে প্রকাশিত বিভিন্ন দলিল, মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশ নিয়ে লিখিত বিভিন্ন গবেষণা প্রবন্ধ এবং বইয়ের রেফারেন্স দেওয়া হয়। এছাড়া এই অংশে ১৫ই আগস্ট এবং ২১শে আগস্ট হত্যাকাণ্ডে জিয়া পরিবারের সম্পৃক্ততা ছাড়াও ১৫ই আগস্টে হত্যাকাণ্ডে জড়িত নূর চৌধুরীর সাথে ২১শে আগস্টে বোমা হামলায় জড়িত মুফতি হান্নানসহ অন্যদের নিয়ে সরাসরি আলোচনা করা হয়। প্যানেলিস্টরা ১৫ই আগস্ট হত্যাকাণ্ডে মোট ৩টি বাড়িতে হত্যাকাণ্ড হলেও দুটি বাড়ির হত্যাকাণ্ড নিয়ে এখনো বিচার হয়নি বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন। এছাড়া প্যানেলিস্টরা বাকশালসহ বঙ্গবন্ধু পরিবার সম্পর্কে অনেক গুজব এবং বিভ্রান্তি নিয়ে জনমানুষের ভুল বোঝাবুঝির উপর আলোকপাত করেন। প্যানেলিস্টরা লে. জেনারেল জিয়ার বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকা ছাড়াও শত শত মুক্তিযোদ্ধা হত্যার জন্যে দায়ী করেন। এছাড়া তার সন্তান তারেক জিয়ার পরিকল্পনায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করার পরিকল্পনার উপর আলোকপাত করেন।

ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডভোকেট ড. সিরাজুল হক, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশিদা হক কনিকা, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিক ফরাজী, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সাহিত্য সম্পাদক শাহানা জেসমিন, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ভারত কমিটি সভাপতি মীর শামীম, মেলবোর্ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. মাহবুবুল আলম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোঃ শাখাওয়াত হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য নুরুল হক সজীব এবং মোনাব্বের হোসেন মোনায়েম, বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টারের আহ্বায়ক বজলুর রশীদ বুলু, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন অস্ট্রেলিয়ার সহ-সভাপতি ইশরার ওসমান, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন অস্ট্রেলিয়ার সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার ড. শামীম আলম, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন অস্ট্রেলিয়ার সদস্য পি এইড ডি গবেষক সজল চৌধুরী, মেলবোর্ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আজহারুল ইসলাম সোহাগ, কুয়েত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দ্বীন ইসলাম মিন্টু, সিঙ্গাপুর যুবলীগের সভাপতি আল আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের লেখক এবং চিত্র পরিচালক রাশেদ রাফি, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়া, মোঃ রাজু, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা পঙ্কজ মজুমদার, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মতলব (দঃ) কমিটির সহ-সভাপতি মো মিরাজ সরকারসহ আরও অনেকে।

প্যানেল আলোচনা এবং অতিথি বক্তব্যের পর ১৫ই আগস্ট এবং ২১শে আগস্টে মৃত্যুবরণকারী সকলের জন্যে দোয়া করা হয়। সবশেষে সবাইকে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্যে ধন্যবাদ দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন সংগঠনের সভাপতি মোল্লা মোঃ রাশিদুল হক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *