স্বপ্ন পূরণে আর মাত্র এক ধাপ। প্রথমবার প্রোটিয়াদের মাটিতে সিরিজ জয়ের হাতছানি টিম টাইগারদের সামনে। প্রথম ম্যাচের মতো দলগত নৈপুণ্যে আস্থা টাইগার অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজের। জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে শুরু রোববার (২০ মার্চ) দুপুর ২টায়।
আফ্রিকান প্রাইড আইরিন লজের হোটেলে এ সকাল যে বাংলাদেশের জন্য অন্যরকম। প্রথম ওয়ানডে জয়ের কীর্তি এখনও জোগাচ্ছে রোমাঞ্চ। দ্বিতীয় ম্যাচের আগে অনুশীলন নয় কিছুটা খোশ মেজাজে টিম টাইগার্স। সেঞ্চুরিয়ান থেকে জোহানেসবার্গ। বাসে মোটে মিনিট চল্লিশের পথ। তবে ডমিঙ্গো শিষ্যদের দূরত্ব ঘুঁচিয়ে এক বিন্দুতে নেয়ার সংকল্প। প্রথম ওয়ানডেতে দাপুটে জয়ে প্রত্যাশা বেড়েছে আরও।
পেস আক্রমণে রয়েছে তাসকিন-শরিফুল-মোস্তাফিজ। এই ত্রয়ীতে বিপর্যস্ত প্রোটিয়া টপ অর্ডার। সাকিবের সঙ্গে মিরাজের স্পিন ভেল্কি তো আছেই।
সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে নিজের প্রথম ৪ ওভারে ৩৮ রান খরচ করেছিলেন মেহেদি মিরাজ। পরে তাকে আবার আক্রমণে আনা হয় ৩৯তম ওভারে। যখন উইকেটে ছিলেন আক্রমণাত্মক ব্যাটার ডেভিড মিলার। তবুও নিজের শেষ স্পেলে ম্যাচটি পুরোপুরি বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে এনে দেন মেহেদি মিরাজ। টানা পাঁচ ওভার বোলিং করে মাত্র ২৩ রান খরচায় নেন ৪টি উইকেট। অফস্পিনার হিসেবে ডানহাতির বিপক্ষে বোলিং করা কঠিনই ছিল তার জন্য। তবু ডানহাতির অনসাইডে ছোট বাউন্ডারি রেখেই টানা পাঁচ ওভার বোলিং করেন তিনি। যেখানে মিলারের বিপক্ষে ৮ বলে খরচ করেন মাত্র ৫ রান নিয়ে নেন মূল্যবান উইকেটটি।
নিজের শেষ ওভারে একটি করে চার-ছয় হজম করে ১১ রান না দিলে শেষ স্পেলে আরও কিপটে থাকতো মিরাজের বোলিং ফিগার। তা না হলেও দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এ তরুণ স্পিনিং অলরাউন্ডার। ওই সময় অধিনায়কের কাছ থেকে মূলত মিরাজই বল ছেয়ে নেন।
তামিমের ভাষ্য, আমি মনে করি, সব দলে মিরাজের মতো ক্যারেক্টার প্রয়োজন আছে। কারণ প্রথম ৪ ওভারে ৪০ রান দেওয়ার পর সে আমার কাছে এসে বলে, আমাকে বল দিন, আমি খেলা বদলে দিবো। সে খুবই আত্মবিশ্বাসী ছিল। এটি অধিনায়কের কাজ সহজ করে দেয়, যখন আপনার খেলোয়াড়রা আত্মবিশ্বাসী থাকে।
শনিবার এক ভিডিওবার্তায় নিজের আত্মবিশ্বাসের রহস্য জানিয়ে মিরাজ বলেন, যখন আমি দ্বিধায় থাকি বা চাপে থাকি তখন নিজেকে প্রশ্ন করি আর বলতে থাকি, আমি এটা করতে পারবো। একবার না অনেকবার বলতে থাকি। আমার এই জিনিসটা খুব ভালো লাগে। যখন হতাশ হয়ে যাই বা আমার কোনো কিছু হতে থাকে না, তখন নিজেকে নিজে উজ্জীবিত করতে থাকি। কারণ এতে মানসিকভাবে অনেক সাপোর্ট পাওয়া যায়।
এদিন মুশফিকের ব্যাটিংই পাওয়া হয়নি। ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে টাইগার ভক্তরা তাকিয়ে থাকবে তার চওড়া ব্যাটে। তবে শুধু এ ম্যাচই নয়, মেহেদী মিরাজের দৃষ্টি আরও সুদূরে।
মিরাজ বলেন, আমাদের চিন্তা ভাবনাও অমন বিশ্বকাপ জিততে পারি, এশিয়া কাপ জিততে পারি, দেশের বাইরে সিরিজ জিততে পারি। সেভাবেই আমরা পরিকল্পনা করছি প্রসেস করছি। আমরা কীভাবে ভালো ক্রিকেটে খেলে ভালো খেলে জয় অর্জন করতে পারি, সে পথে এগোচ্ছি।
দক্ষিণ আফ্রিকার অনুশীলন কভারের অনুমতি নেই বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীদের। তাইতো জানা যায়নি তাদের গেমপ্ল্যান। তবে সিরিজে ফিরতে যে তেতে আছে স্বাগতিকরা তা তো বলাই বাহুল্য।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, এ ম্যাচেও আছে বৃষ্টির চোখ রাঙ্গানি। গুরুত্বপূর্ণ হবে টস। তবে সব ছাঁপিয়ে এক্সফ্যাক্টর হতে পারেন আফ্রিকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের অকুণ্ঠ সমর্থন।