সাকিব-তাসকিনের প্রশংসায় মাশরাফী

খেলা

মার্চ ২৮, ২০২২ ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ

দেশের জন্য অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও পেসার তাসকিন আহমেদের আত্মত্যাগ দেখে মুগ্ধ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক সফল অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা।

পরিবারের বেশ কিছু সদস্য অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরও চলমান দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের শেষ ওয়ানডে খেলেছেন সাকিব। আবার দেশের আন্তর্জাতিক সিরিজ থাকায় ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) খেলা প্রস্তাবকে ‘না’ করে দেন তাসকিন। সাকিব-তাসকিনের এমন নিবেদনের প্রশংসা করেছেন মাশরাফী। দক্ষিন আফ্রিকার মাটিতে প্রথম ওয়ানডে সিরিজ জয়ে বড় অবদান ছিলো সাকিব ও তাসকিনের।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে দলের জয়ে ভূমিকা ছিলো সাকিবের। ৬৪ বলে ৭৭ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তৃতীয় ওয়ানডের আগে সাকিব খবর পান, পরিবারের বেশিরভাগ মানুষই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

অন্যদিকে, লক্ষ্মৌ সুপার জায়ান্টের  হয়ে আইপিএল খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন তাসকিন। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তাকে ছাড়তে আগ্রহী না থাকার পর, ফ্র্যাঞ্চাইজিকে ‘না’ বলে দেন তাসকিন। আইপিএলকে ‘না’ বলায় হতাশ হননি তাসকিন। শেষ ওয়ানডেতে ৩৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে দলের ৯ উইকেটে জয়ে অবদান রাখেন তিনি। শেষ ওয়ানডে জয়ে সিরিজও জিতে বাংলাদেশ।

সাকিবের ব্যাপারে মাশরাফী বলেন, ‘সাকিবের পরিবারের চার-পাঁচজন সদস্য অসুস্থ ছিলেন। সাকিবের আত্মত্যাগ দেখতে হবে। তিনি চাইলে দেশে আসতে পারতেন। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাতেই থেকে যান সাকিব। এটা অবিশ্বাস্য, কারণ একজন বা দুইজন নয়, পরিবারের প্রায় সবাই অসুস্থ ছিলেন।’

সাকিবকে ধন্যবাদ দিয়ে ম্যাশ আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা হলো, সে সিরিজ জিততে চেয়েছিলো। এটা আমার দৃষ্টিকোণ থেকে, একটু স্বার্থপর। কারণ দিন শেষে তার পরিবারের সবাই অসুস্থ ছিল। এটা সাকিবের সিদ্ধান্ত ছিল। সাকিব উভয় দিকই খুব ভালোভাবে সামলাতে পেরেছে, এজন্য সাকিবকে ধন্যবাদ।’

তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ১৮ রানে ২ উইকেট নিয়ে দলকে অনেক দূর এগিয়ে দেন সাকিব। তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচের নায়ক ছিলেন তাসকিন। দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ মার্ক বাউচার বলেছিলেন, সাকিবই তাদের ইনিংসকে সমস্যায় ফেলেন।

মাশরাফী আরও বলেন, আইপিএল না খেলা  আত্মোৎর্গের  জন্য তাসকিনকে পুরষ্কৃত করা উচিত।
তিনি বলেন, ‘তাসকিনকে অবশ্যই পুরস্কৃত করা উচিত। আপনি যদি এন্ডারসন-ব্রডের দিকে দেখেন, ইসিবি সবসময় তাদের ক্ষতিপূরণ দেয় না। আইপিএল না খেলে দেশের জন্য খেললে  তাদের পুরস্কার দেয়া হয়। যদি ক্রিকেটারদের পুরস্কৃত করা হয়, তবে তারা নিজেদের উজার করে দিতে আরও বেশি উদগ্রীব থাকবে, এই ভেবে যে, তাদের প্রয়োজন অনুধাবন করে  বোর্ড তাদের পাশে রয়েছে।’

২০১৫ সালের আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিলো মাশরাফী নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল। ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় মঞ্চে এ পর্যন্ত  এটাই দেশের সবচেয়ে বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে । তবে মাশরাফীর বিশ্বাস  ভারতে অনুষ্ঠেয় ২০২৩  বিশ্বকাপে অতীতের সাফল্যতে ছাড়িয়ে যাবেন তামিম ইকবাল ও তার দল।

ম্যাশ বলেন, এটা আমার বিশ্বাস, এই দলের সেমিফাইনালে যাবার সামর্থ্য আছে, যেহেতু বিশ্বকাপ ভারতে অনুষ্ঠিত হবে।

মাশরাফীর মতে, বিশ্বকাপের মতো ইভেন্ট জিততে হলে ভাগ্যেরও প্রয়োজন আছে’।

তিনি বলেন, ‘২০১৯ বিশ্বকাপের পর, আমি বলেছিলাম- এই দলটির কাছে বিশ্বকাপ জয়ের সব কিছু আছে। তবে সেজন্য খেলোয়াড়দের ফিট হতে হবে। বিশ্বকাপের আগে অনেক ম্যাচ ও সিরিজ রয়েছে। তাদের ভালোভাবে শেষ করতে হবে। বিশ্বকাপের আগে গুরুত্বপূর্ণ হলো, খেলোয়াড়দের ভালো অবস্থায় ও সুস্থ থাকা।’

মাশরাফী আরও বলেন, ‘অগ্রগতির কোন শেষ নেই। যখন একটি দল ভালো খেলতে শুরু করে, তখন তাদের কিছু দুর্বল পয়েন্টও থাকে। একটি বড় টুর্নামেন্টে আপনি যত কম ভুল করবেন, ততই ভালো। এই ওয়ানডে দলটি ২০১৫ সাল থেকে ভালো খেলছে। একটি ছন্দ এসেছে। দল যখন ওয়ানডে খেলতে শুরু করে তখন এই ছন্দটা মস্তিষ্কেও কাজ করে। এটা খুব ভালো সুযোগ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *