লেবাননের রাজধানী বৈরুত বা গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক অবকাঠামোর ওপর হামলা চালানো থেকে ইসরায়েলকে বিরত রাখতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। গোলান মালভূমিতে এক প্রাণঘাতী রকেট হামলার পর এই প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে।
শনিবারের (২৭ জুলাই) ওই হামলায় ১২ জন নিহত হয়। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র হিজবুল্লাহকে হামলার জন্য দায়ী করেছে, যদিও হিজবুল্লাহ দায় অস্বীকার করেছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা ইসরায়েলের পাল্টা হামলা সীমিত রাখার চেষ্টা করছেন। তারা ইসরায়েলকে বৈরুত ও হিজবুল্লাহর ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত শহরের দক্ষিণাঞ্চলে অথবা প্রধান অবকাঠামো যেমন বিমানবন্দর এবং সেতু লক্ষ্যবস্তু না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার লেবাননের পার্লামেন্টের উপ-সভাপতি ইলিয়াস বু সাব গোলান মালভূমিতে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারী আমোস হকস্টেইনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল যদি বৈরুত ও এর উপকণ্ঠে হামলা থেকে বিরত থাকে তবে বড় ধরনের উত্তেজনা এড়ানো সম্ভব হবে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানান, তারা হিজবুল্লাহকে আঘাত করতে চান। কিন্তু পুরো অঞ্চলে যুদ্ধ ছড়িয়ে দিতে চান না। তবে, ইসরায়েল বৈরুত বা তার উপকণ্ঠে হামলা না করার কোনও প্রতিশ্রুতি দেয়নি।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করেছে, তারা কূটনৈতিক আলোচনা সম্পর্কে বিশদ তথ্য প্রকাশ করবে না। তবে সীমান্তে সব ধরনের পাল্টাপাল্টি বন্ধ করতে একটি ‘টেকসই সমাধান’ খুঁজছে।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, ইসরায়েল গোলান হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অধিকার রাখে। কিন্তু কোনও পক্ষ বড় পরিসরের যুদ্ধ চায় না।
ফরাসি কূটনীতিকরা ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে উত্তেজনা কমানোর জন্য বার্তা বিনিময়ে জড়িত। ফ্রান্সের লেবাননের সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে এবং দেশটিতে প্রায় ২০ হাজার ফরাসি নাগরিক বসবাস করছেন।
ইসরায়েলের বেসামরিকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বাহিনী হোমফ্রন্ট কমান্ড এখনও কোনও নতুন নির্দেশনা জারি করেনি। যা ইঙ্গিত দিচ্ছে, হিজবুল্লাহ বা অন্য কোনও গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে বড় কোনও হামলার আশঙ্কা তারা করছে না।
রোববার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে পাল্টা হামলার কৌশল ও সময় নির্ধারণের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর ওপর ছেড়ে দিয়েছে। নেতানিয়াহুর সহকারী নেতারা একটি বড় পরিসরের যুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
গোলান হামলার পর ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মট্রিচ এবং জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতমার বেন-গভীর কঠোর প্রতিশোধের আহ্বান জানিয়েছিলেন। স্মট্রিচ বলেছেন, শিশুদের মৃত্যুর জন্য হাসান নাসরাল্লাহকে নিজের মাথা দিয়ে মূল্য দিতে হবে। পুরো লেবাননকে মূল্য দিতে হবে।
সূত্র: রয়টার্স