চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাউন্ড অব ১৬-এর সেকেন্ড লেগে ফরাসি ক্লাব লিলেকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে টুর্নামেন্টটির শেষ আটে জায়গা করে নিয়েছে চেলসি।
বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) প্রতিপক্ষের মাঠে শুরুতে পিছিয়ে পড়ার পরে প্রথমার্ধের শেষ দিকে দলকে সমতায় ফেরান ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচ। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে আযপিলিকুয়েতার গোলে লিড নেয় চেলসি।
এর আগে চেলসি নিজেদের ঘরের মাঠ স্টামফোর্ড ব্রিজের রাউন্ড অব ১৬-এর প্রথম লেগে ২-০ গোলের লিড নিয়ে প্রতিপক্ষের মাঠে পাড়ি দিয়েছিল। এবার একটি গোল হজম করলেও দুটি গোল জালে জড়িয়ে ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা।
এর আগে প্রতিপক্ষের মাঠে ম্যাচের শুরু থেকে বল দখলে আধিপত্য ছিল ব্লুজদের। তবে বল দখলে পিছিয়ে থেকেও আক্রমণে নিজেদের শানিয়েছে লিলের ফুটবলাররা। ম্যাচের প্রথম তিনটি আক্রমণই ছিল লিলের। যদিও তার একটি শটও ছিল না লক্ষ্যে। বল লক্ষ্যে রাখতে স্বাগতিকদের অপেক্ষা করতে হয়েছিল ম্যাচের ৩৭ মিনিট পর্যন্ত, সঙ্গে মিলল সাফল্যটাও।
নিজেদের ডি বক্সে প্রতিপক্ষের ফুটবলারদের শট প্রতিহত করতে গিয়ে জর্নিনিয়োর হাতের স্পর্শ লাগে। পেনাল্টির আবেদন স্বাগতিকদের। ভিআর চেক করে রেফারিও স্পটকিকের অনুমতি দিলেন লিলেকে। বুরাক ইয়িলমাজের নেওয়া স্পট কিকের শটটি এতোই জোরালো ছিল যে এডওয়ার্ড মেন্ডির গ্লাভসে লাগলেও বল জালেই জড়াতো। তখন পর্যন্ত প্রতিপক্ষকে উদ্দেশ্য করে নেওয়া ৪ শটের সবটাই ছিল লিলের দখলে। যেখানে একবার প্রতিপক্ষে জালে বড় জড়াতেও সক্ষম তারা। অন্যদিকে মালিকানা ও আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত চেলসি খেলার মাঠেও যেন জর্জরিত।
তবে ইংলিশ জায়ান্টরা দমে যাওয়ার পাত্র নয়। মাঠের বাইরে কী চলছে, সেটা নিয়ে তারা বিব্রত থাকতে চাননা। মুহূর্তে তারা আক্রমণে হয়ে ওঠেন ধারালো। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে এসে প্রতিপক্ষের ডি বক্সে বাড়িয়ে দেন জর্জিনিও। অনেকটা পথ দৌড়ে লিলের রক্ষণ দেওয়ালকে ফাঁকি দিয়ে নিখুঁত শটে বল জালে জড়ান ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচ।
বিরতিতে যাওয়ার আগে ব্লুজরা যেখানে শেষ করেছিল, সেখান থেকেই যেন শুরু করল। তাদের একের পর এক আক্রমণে দিশেহারা স্বাগতিকরা। ম্যাচের ৭১ মিনিটে প্রতি আক্রমণে বল নিয়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভাগে হানা দেন ম্যাসন মাউন্ট। ডি বক্সের বাঁ পাশ থেকে বল ছুড়েন ডান প্রান্ত দখলে রাখা সিজার আযপিলিকুয়েতার উদ্দেশে।
খানিকটা এগিয়ে এসে আলতো পায়ে বল জড়ান প্রতিপক্ষের জালে। তাতে লিড পেয়ে যায় টমাস টুখেলের শিষ্যরা। শেষ দিকে ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে স্বাগতিকরা। তবে ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। প্রথম লেগ ও দ্বিতীয় লেগ মিলে ৪-১ ব্যবধানে পিছিয়ে যাওয়া লিলে শেষ পর্যন্ত আরেক ফরাসি জায়ান্ট ক্লাব পিএসজির পথেই হাটতে বাধ্য হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত চেলসি ফুটবল ক্লাবটির জন্যে, এই মুহূর্তে ইতিবাচক বলতে কেবল মাঠের পারফরম্যান্স। রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতিতে ক্লাবটির ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। এমন অবস্থাতে চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল মাঠের বাইরেও তাদের বাড়তি অনুপ্রেরণাই যোগাবে।