রুশ গুপ্তচরের চমকে যাওয়া গল্প, সংসর্গের প্রস্তাবই ছিল হাতিয়ার

ফিচার

মার্চ ২৬, ২০২২ ১২:০৮ অপরাহ্ণ

গুপ্তচর মানেই যেন রোমাঞ্চকর ব্যাপার। দেশের জন্য তারা লড়েন বিদেশের মাটিতেও। নিজের দেশের সুরক্ষায় মিশন শেষ করে আবার নিজের মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন গুপ্তচরেরা। তবে শত্রু দেশের হাতে ধরা পড়লে আর রক্ষা নেই।

গুপ্তচর মানেই তো বুদ্ধিমত্তা এবং কর্মক্ষমতার পরিচয়। কিন্তু কেউ কেউ ছাড়িয়ে যান গুপ্তচরবৃত্তিকেও!  আজ যে গুপ্তচরের কথা বলা হবে, তার বিশেষ দক্ষতা অবাক করার মতোই!

গুপ্তচরের নাম আলিয়া রোজা। অবিভক্ত সোভিয়েত রাশিয়ায় তার জন্ম। ভ্লাদিমির জমানায় তিনি রাশিয়ার গুপ্তচরবৃত্তি করতেন বলে সম্প্রতি তিনি দাবি করেন। অনেকে তাকে রাশিয়ার ‘মাতা হারি’ বলে থাকেন। তবে তার পরিণতি বাস্তবের মাতা হারির মতো হয়নি।

রুশ গুপ্তচর হিসাবে মাত্র ১৮ বছর বয়স থেকেই তিনি জানতেন, কীভাবে কাউকে প্রলুব্ধ করে নিপুণভাবে নিজের কাজে ব্যবহার করতে হয়। এর জন্য তাকে শিখতে হয়েছিল, অন্যকে কীভাবে যৌন-ফাঁদে ফেলতে হয়।

মস্কোর কাছে একটি সামরিক কেন্দ্রে মাত্র ১৮ বছর বয়স থেকে তিনি গুপ্তচর হওয়ার প্রশিক্ষণ শুরু করেন। কাউকে যৌন আবেদনের মাধ্যমে প্রলুব্ধ করে কী করে নিজের কাজ হাসিল করতে হয়, মূলত সেটাই তাকে শেখানো হয়েছিল।

রোজার যখন ২০ কুড়ি বছরের কিছু বেশি বয়স, তখন তাকে প্রথম বিশেষ একটি অভিযানে পাঠানো হয়েছিল। মাদকক্র এবং মানব পাচারকারীদের ধরার জন্য তাকে পাঠানো হয়েছিল।

রোজা বলেন, ‘আমার যখন ১৮ বছর বয়স, তখন আমাকে একটি সামরিক একাডেমিতে পাঠানো হয়েছিল। সেখানেই আমি সব বিশেষ কৌশল শিখেছি। আমাকে শেখানো হয়, কীভাবে অন্যদের প্রলুব্ধ করা যায়, কীভাবে ফাঁদে ফেলে নিজের কাজে লাগানো যায়। এ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের বন্দুক থেকে গুলি করতে হয়, মার্শাল আর্টের কৌশলও শিখতে হয়েছিল।’

নিজের পরিবারের কারণেই তিনি এই সামরিক একাডেমিতে যোগ দেন বলেও রোজা জানান। রোজার দাদু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দেশের জন্য লড়াই করে জাতীয় নায়কের তকমা পান। এমনকি রোজার নাম স্তালিনগ্রাদের মনুমেন্টে খচিত আছে। এই বিষয়টি তার পরিবারের জন্য অত্যন্ত গর্বের বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

রোজা বর্তমানে আমেরিকার স্থায়ী বাসিন্দা। তবে গুপ্তচর হিসেবে কাজ করার কোনো প্রমাণ তার কাছে নেই। তবে তিনি দাবি করেছেন যে, তার ডান চোখের উপর একটি দাগ গুপ্তচর হিসেবে কাজ করার প্রমাণ। গুপ্তচর পরিচয় ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর একদল অপরাধীর সঙ্গে হাতাহাতি করার সময় চোট লেগে এই ক্ষতটি তৈরি হয়।

রোজা আমেরিকার বাসিন্দা হলেও তার পরিবার এখনও রাশিয়াতেই বসবাস করে। তবুও রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে কিভের সমর্থনে এসেই দাঁড়িয়েছেন রোজা। রোজার দাবি, আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অতি সত্বর ইউক্রেনের আকাশে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত।

রাশিয়ার পেট্রল এবং গ্যাসেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিৎ বলেও তিনি উল্লেখ করেন। রাশিয়ার অধিকাংশ জনগণ যুদ্ধের বিপক্ষে থাকলেও তারা সরাসরি সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন বলেও তিনি দাবি করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *