ক্যারিয়ারের নানান চড়াই-উতরাই পেরোনো ফ্রেঞ্চ ফুটবলার এখন আলোচনায় ফুটবলীয় নৈপুণ্যে। পিএসজি ম্যাচের জয়ের নায়ক এখন রিয়াল মাদ্রিদ ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা। আর তাতে ভেঙেছেন ৪৫ বছর ধরে টিকে থাকা রিয়াল কিংবদন্তী ডি স্টেফানোর রেকর্ডকে। রোনালদো পরবর্তী সময়ে যিনি নিজেকে
সেক্স টেপ কেলেঙ্কারি, আইনি লড়াই কিংবা জাতীয় দলের নিষেধাজ্ঞা। বছর কয়েক আগেও এসব কারণই কেবল শিরোনামে এনেছে তাকে। এরপর ভাগ্যের পালাবদল। খোদ নিন্দুকেরাও এখন সময়ের সেরা স্ট্রাইকার হিসেবে তাকে বিবেচনায় আনতে বাধ্য হচ্ছেন।
করিম বেনজেমা দেখালেন, এভাবেও ফিরে আসা যায়। রিয়াল সমর্থকদের কাছে দুয়ো শোনা ফরোয়ার্ড এখন সেই ক্লাবেরই প্রাণভোমরা। পিএসজিকে ভস্মীভূত করার রাতে ছাড়িয়ে গেলেন ৪৫ বছর ধরে টিকে থাকা কিংবদন্তী ডি স্টেফানোর রেকর্ডকে। যদিও এমন অর্জন এখনো স্বপ্নের মতো লাগছে তার। আশা দেখেন, ক্লাব সমর্থকরা তার নামটা মনে রাখবেন আজীবন ধরে।
কিংবদন্তিকে টপকে যাওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করে বেনজেমা বলেন, ‘রিয়াল মাদ্রিদ স্টেফানোর মতো কিংবদন্তিকে টপকে যাওয়া স্বপ্নের মতো। আমি গর্বিত এবং সামনে এগিয়ে যেতে এ অর্জন সত্যিই অনুপ্রেরণা দেবে। এই ক্লাবে যোগ দেয়ার শুরু থেকেই লক্ষ্য ছিলো, যতোটা সম্ভব ট্রফি জিতবো। নামের পাশে এতো গোল থাকবে, সেটা কল্পনা করিনি। শুধু নিজের কাজটা করে গেছি। এখন আমার আশা, মাদ্রিদিস্তাদের মুখে মুখে আমার নামটা থাকবে চিরদিন।’
তারকায় ভরা পিএসজির বিপক্ষে ১৭ মিনিটের ব্যবধানে করেন তিন গোল। যা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে, তাকে বসিয়েছে বয়স্কতম হ্যাটট্রিকম্যানের আসনে। যদিও এটাই ক্যারিয়ারের সেরা রাত কিনা, তা নিয়ে নিশ্চিত নন এই নাম্বার নাইন।
ফরাসি তারকা যোগ করেন, ‘রিয়াল মাদ্রিদ রাতটা ভোলার মতো নয়। প্রেক্ষাপট, গোল, ঘুরে দাঁড়ানো আর অবিশ্বাস্যভাবে কোয়ালিফাই করা- সবকিছুর জন্যই এটা বিশেষ। কিন্তু আমি বলতে পারছি না, এটাই আমার সেরা পারফরম্যান্স কি না। ২-০’তে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় ৩ গোল করে দলকে জেতানো অন্যরকম। তবে, লিভারপুলের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের কথা ভুলে গেলে চলবে না।’
রোনালদো পরবর্তী সময়ে বেনজেমা যেন রোনালদোর চেয়েও ক্ষুরধার, ভয়ানক। পরিসংখ্যান বলছে, পর্তুগিজ তারকার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর, দুজন হেঁটেছে দুই বিপরীত মেরুতে। ৩৪ বছর বয়সী এই ফ্রেঞ্চম্যানের ম্যাচপ্রতি গোলের হিসেবের পার্থক্যটাই যা প্রমাণে যথেষ্ট।
বেনজেমার এই উড়তে থাকায় সঙ্গী হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। লিগের শীর্ষস্থান কিংবা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল- দুই টুর্নামেন্টেও ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। ব্যালনের বদলে যাওয়া নিয়মে, যা কিনা তাকে নতুন করে আশা দেখাচ্ছে, প্রথমবারের মতো সেরার স্বীকৃতি পাবার।