অতিরিক্ত মানসিক চাপ উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা ডেকে আনে। কর্মক্ষেত্র, সম্পর্ক বা অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যদি দীর্ঘ মেয়াদে উদ্বেগজনক হয় তবে এ ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপের ফলে মানসিক ফলে অনিদ্রা, অস্থিরতা, অবসাদ, আকস্মিক ক্রোধ, ক্লান্তি ও মাথা ব্যাথার মতো উপসর্গ দেখা যায়।
যাইহোক, সব মিলিয়ে মানসিক চাপ হৃদযন্ত্র ও সংবহনতন্ত্রের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে। তবে এই প্রভাব ঠিক কতটা, সেটি জানতে ২০২১ সালে একটি গবেষণা করা হয়। গবেষণায় দেখা যায়, অতিরিক্ত মানসিক চাপ হৃদ্যন্ত্রের স্বাস্থ্য ও কার্যকারিতার উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
৫২টি দেশের ২৪ হাজারেরও বেশি রোগীর উপর করা একটি পূর্ববর্তী গবেষণাতেও একই তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। এই সমীক্ষায় দেখা যায়, পাঁচ বছর সময়কালের মধ্যে মানসিক চাপে ভোগা মানুষদের হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অন্যদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষকেরা দেখতে পেয়েছেন- মস্তিষ্কের যে অংশ থেকে মানসিক চাপের প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় তার নাম অ্যামিগডালা। এই অ্যামিগডালা মস্তিষ্কের ‘ভয় কেন্দ্র’ নামেও পরিচিত। কেউ যখন উদ্বিগ্ন বোধ করেন, তখন অ্যামিগডালা সক্রিয় হয় এবং শরীরকে স্ট্রেস হরমোন উৎপাদন করতে উদ্দীপিত করে। এর প্রভাবে হৃৎপিণ্ডে রক্তের প্রবাহ কমে যেতে পারে। হঠাৎ বিপদে এই ঘটনা জীবনরক্ষায় ভূমিকা রাখে। কিন্তু এটি যদি দীর্ঘ মেয়াদে হয় তবে রক্তনালীর প্রদাহ, স্থূলতা, ইনসুলিনের কাজের পথে বাধা সৃষ্টি হওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। আর এসবের প্রভাবেই শরীরে হৃদরোগ বা স্টোকের মতো গুরুতর ঘটনা ঘটতে পারে।