‘ফ্ল্যাট উইকেটে বোলিং করতে জানে না মুস্তাফিজ-তাসকিনরা’

খেলা স্লাইড

মার্চ ১২, ২০২২ ৮:২৬ পূর্বাহ্ণ

সবুজ উইকেটে বোলিং করা তুলনামূলক সহজ। কিন্তু ফ্ল্যাট উইকেটে বোলিং করাটা বেশ কঠিন। আর এ কৌশলটাই জানা নেই বাংলাদেশের পেসারদের। যে কারণে দেশের বাইরের সিরিজগুলোতে ভুগতে হয় তাদের। দায়িত্ব নেয়ার আগে বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ে এভাবেই নিজের দৃষ্টিভঙ্গির কথা জানালেন প্রোটিয়া পেসার অ্যালান ডোনাল্ড। দায়িত্বকালে চেষ্টা করবেন আইসিসি ইভেন্টের আগেই মানসিকভাবে ফিজ-তাসকিন-শরিফুলদের আরো শক্তিশালী করে তুলতে। টেলিফোনে বাংলাদেশের নতুন বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নিয়ন মুহায়মিন।

সাদা বিদ্যুৎ, প্রোটিয়া কিংবদন্তী। নামের আগে এরকম হাজারো বিশেষণ বসানো যাবে তার। কিন্তু তাতেও মিটবেনা ৯৯ বিশ্বকাপের সে রান আউটের আক্ষেপ। অ্যালান ডোনাল্ড এখনো মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন, সে ম্যাচটা জিতলে বদলে যেতো আফ্রিকান ক্রিকেটের চিত্রপট।

নিজের ক্যারিয়ারে যা পারেন নি, এখন কোচের আসনে বসে সে স্বপ্নটা পুরণ করতে চান ডোনাল্ড। তাই তো নানা দেশ ঘুড়ে এবার এসে থামলেন লাল সবুজের পতাকাতলে। নিজের আস্তিনে থাকা নানা কৌশল শেখাবেন মুস্তাফিজ, তাসকিন-শরিফুলদের।

শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব পালনের সূত্র ধরে পৃথিবীর এদিককার ক্রিকেট সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা আছে ডোনাল্ডের। তাই বাড়তি কোন চ্যালেঞ্জ অনুভব করছেন না এখনো। আর সাবেক বস রাসেলকে পেয়ে যাওয়ায় কাজটা নাকি হয়েছে আরো সহজ। ইতোমধ্যে কারা হচ্ছেন তার শিষ্য, তার একটা ধারণা পেয়ে গেছেন সেখান থেকেই।

নবনিযুক্ত পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড বলেন, ‘আমি রাসেলের সাথে কথা বলেছি। সে বেশ কয়েকজন পেসারের নাম এবং ফুটেজ দিয়েছে। আমার সেগুল দেখে বেশ ভালই মনে হল। তবে পরিকল্পনা সাজাতে হলে আমাকে ওদের সামনাসামনি দেখতে হবে। পেস বোলিংটা বেশ কঠিন, ওরা কতটা শিখতে চায় তার উপর নির্ভর করছে আমি কতটা তাদের দিতে পারব। ৯ মাস লম্বা সময়, নিজের সব অভিজ্ঞতা ওদের সাথে শেয়ার করব।’

পেস বোলিংটা তার কাছে রীতিমতো সাধনা। দিনের পর দিন কষ্ট করে নিজেকে তৈরি করেছেন হোয়াইট লাইটনিং। তাই, জানেন চাইলেই হুট করে এটাকে রপ্ত করা সহজ হবে না কারো জন্যই। তার মতে, সবুজ উইকেটে বল তো অনেকেই করতে পারে। তবে সঠিকভাবে পেস বোলিং শিখতে হলে, জানতে হবে ফ্ল্যাট উইকেট ব্যবহারের কারিশমা।

দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ফাস্ট বোলার ডোনাল্ড বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটিতে যে টেস্ট ম্যাচগুলো হয় সেখানে স্পিনাররাই ডমিনেট করে। এজন্য বাংলাদেশের পেসাররা ফ্ল্যাট উইকেটে কিভাবে বোলিং কর‍তে হয় তা জানে না। এটা একটা বিশেষ স্কিল। ভাল করতে হলে পেসারদের এটা রপ্ত করতে হবে। তবে এটা পুরো পেসা বোলিং কালচারের উপর নির্ভর করে। আমি চেষ্টা করব এ জায়গায় উন্নতি করতে। তবে শুধু জাতীয় দল নয়, ঘরোয়া আসরগুলোতেও ভালো উইকেট থাকতে হবে।’

আইসিসি ইভেন্টে বরাবরই গড়পরতা পারফরম্যান্স বাংলাদেশের। অনেকের মতে, বড় আসরের চাপ নিতে পারে না টাইগাররা। আর চাপে ভেঙে পড়ার কথা যখন আসছেই, তখন উত্তরণের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকানদের থেকে ভালো মেন্টর আর কে হবেন ? চোকার শব্দটাই যে তাদের পেটেন্ট করা।

অ্যালান ডোনাল্ড বলেন, ‘বড় ম্যাচের চাপ নিয়ন্ত্রন করা বেশ কঠিন। আমাদের সময় আমরা সেটা করতে পারিনি। এজন্যই সবাই আমাদের চোকার বলতো। বাংলাদেশের পেসারদের আগে নিজের সম্পর্কে ধারণা পরিষ্কার রাখতে হবে। তাহলেই তারা বুঝবে কোন পদ্ধতিতে আগাতে হবে।’

আফ্রিকা সিরিজে নিজের দেশকে এগিয়ে রাখলেও, নতুন শিষ্যদের নিয়ে লড়াই করতে প্রস্তুত অ্যালান ডোনাল্ড।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *