ফসলি জমি থেকে মাটিকাটা বন্ধের দাবি কৃষকদের

ফসলি জমি থেকে মাটিকাটা বন্ধের দাবি কৃষকদের

দেশজুড়ে

ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩ ৭:১৭ অপরাহ্ণ

মুরাদ শাহ জাবাল, ঝিনাইগাতী (শেরপুর)

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার দীঘিরপাড় এলাকায় ফসলি জমি বালুমহাল ঘোষিত এলাকা থেকে মাটি কাটা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন এলাকার কৃষকরা।

নদীতে বালু নেই। ইজারাদারের লোকজন নদীর পাড়, কৃষকদের ফসলি জমি ও সমতল ভুমি কেটে বালু ও মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন অর্ধশতাধিক কৃষক। তারা ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা বন্ধের দাবিতে ২০২২ সালের ৮ নভেম্বর শেরপুরের জেলা প্রশাসক বরাবর এলাকার অর্ধশতাধিক কৃষক সাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু গত দুই মাসেও ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা বন্ধ হয়নি।

ফলে অর্ধশতাধিক কৃষক পরিবার পরেছেন চরম বিপাকে। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে দেশ স্বাধীনের পর মহারশি নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েন দীঘিরপাড় এলাকার অর্ধশতাধিক কৃষকের রেকর্ডীয় জমি। ফলে ভুমিহীনে পরিনত হয় অনেকেই। জমিগুলো কৃষকদের নামে সিএস, আরও আর থাকলেও নদী ভাঙ্গনের কারনে বিআরএস রেকর্ডে নদী দেখানো হয়েছে।

কৃষকরা জানান, পরবর্তীতে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হলে ভাঙ্গন কবলিত এলাকার জমিগুলো পুনরায় জেগে উঠে। ফলে কৃষকরা জেগে উঠা জমিগুলো আবারও চাষাবাদ শুরু করে। গত প্রায় ২০ বছর ধরে এসব জমি চাষাবাদ করে পরিবারের সদস্যদে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। অনেকেই ওইসব জমিতে ঘর-বাড়ি নির্মান করেছেন। কেউ কেউ কাঠবাগানসহ বিভিন্ন ফলমূলের বাগান গড়ে তুলেন।

কিন্তু সম্প্রতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই জমির গাছপালা কেটে দিয়ে সমতল ভুমির কৃষকদের ফসলি জমি বালুমহাল হিসেবে ঘোষনা করেন। সেখানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাল নিশান ও বালু মহাল আখ্যা দিয়ে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয়া হয়েছে। আর ওই জমি খেকে মহারশি নদীর বালুমহালের ইজারাদারের লোকজন অবধে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। ভেকু দিয়ে অবাধে মাটি কেটে ইটভাটাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছেন। কৃষকরা জানান, ফসলি জমি থেকে ৮/১০ফুট গর্ত করে অবাধে মাটি কেটে নেয়ায় জমিগুলো অনাবাদি হয়ে পরেছে।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষদের আবাদি জমি ক্ষতবিক্ষত হয়ে পরেছে। শুধু তাই নয় উত্তোলনকৃত মাটি মাহিন্দ্র যোগে পরিবহনের ফলে দীঘিরপাড় থেকে ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর পর্যন্ত ২ কিলোমিটার কাচা রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরেছে। হুমকির সম্মুখিন হয়ে পরেছে পরিবেশের ভারসাম্য। আগামী বর্ষায় এলাকার ঘরবাড়ি রাস্তা নদী ভাঙ্গনের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ সালের ৬২ নং আইনে ৫ (১) ধারায় বলা হয়েছে, পাম্প বা ড্রেজিং অথবা অন্যকোন মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। (২) বলা হয়েছে নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলনের ক্ষেত্রে যথাযথ ঢাল সংরক্ষণ সাপেক্ষে সুইং করে নদীর তলদেশ সুষম স্তরে খনন করা যায় এইরুপ ড্রেজার ব্যবহার করে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

রাস্তা ও আবাসিক এলাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি বে সরকারি স্থাপনার এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। কিন্তু ইজারাদারের লোকজন নিয়মবহির্ভূতভাবে ফসলি জমি থেকে মাটি মাটি ও বালু উত্তোলন করে আসছে। এ বিষয়ে বালু মহালের ইজারাদার আসাদুজ্জামান স্বপন বলেন টাকা দিয়ে মহাল ইজারা নিয়েছি। আমাকে এড়িয়া করে দেয়া হয়েছে। তাই আমি বালু মাটি উত্তোলন করছি।

এব্যাপারে শেরপুরের জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার কথা হলে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *