আমরা প্রায়ই সাধারণ শরীরের যে কোনো ব্যথা বা মাথা ব্যথার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে খেয়ে ফেলি পেইন কিলার। এতে ক্ষণিকের আরাম অনুভূত হলেও তা দীর্ঘমেয়াদী জীবনে ডেকে আনবে চরম বিপদ।
হঠাৎ এক দুটো পেইনকিলার খেলে কোনো অসঙ্গতি না হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও প্রায়ই এর ওপর নির্ভরশীল হয়ে ওঠাটাকে ভালো লক্ষণ বলে মোটেও মনে করছেন না চিকিৎসকরা।
পেইনকিলার হলো এক ধরনের ওভার দ্য কাউন্টার ড্রাগ। অর্থাৎ ওষুধের দোকানে গিয়ে চাইলেই পাওয়া যায় এই ওষুধ। তাই মানুষও সেই সুযোগে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়েই শুরু করে দিচ্ছেন এই ওষুধটি খাওয়া।
দীর্ঘদিন এমনটা হওয়ার ফলে শরীরে দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের বয়স হলে একটু একটু করে শোনার ক্ষমতা কমে। তবে পেইনকিলার খাওয়ার কারণে অনেক আগেই আপনার এই কানের সমস্যা শুরু হয়ে যাবে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, পেইনকিলারের মধ্যে এমনকিছু টক্সিন থাকে যা কানের ভেতরে সমস্যা তৈরি করতে পারে। এভাবে একদিন দুইদিনে কোনও সমস্যা দেখা না দিলেও দীর্ঘকালে তৈরি হতে পারে জটিলতা।
সম্প্রতি আমেরিকান জার্নাল অব এপিডেমিওলজিতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের করা একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, ব্যথা কমানোর ওষুধ কানের ককলিয়ারে সমস্যা তৈরি করতে পারে। এক্ষেত্রে আইবুপ্রোফেন জাতীয় ওষুধ ককলিয়ারে রক্ত চলাচল কমিয়ে ফেলতে পারে। এ কারণে কানের কোষ মারা যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের ডা. শ্যারন কুরহান এ ব্যাপারে বলেন, অ্যাসিটোমাইনোফেন জাতীয় ওষুধ খেলে এ ধরনের সমস্যায় পরার আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যায়। তিনি আরও বলেন, যারা সপ্তাহে দুবার পেইনকিলার খান তাদের এই সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেশি। পেইন কিলারের ব্যবহার আরও বেশি হলে এ আশঙ্কা আরও ২৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
গবেষকরা এর জন্য মনে করেন, ব্যথার উপশম ঘটাতে পেইনকিলার আদৌ কোনও সমস্যার সমাধান নয়। এতে সাময়িক স্বস্তি পাওয়া গেলেও সমস্যার মূল কারণটি নির্মূল করতে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।