শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেন একটি নিরপেক্ষ দেশ হতে ইচ্ছুক, পূর্বাঞ্চলীয় দোনবাসের মর্যাদা নিয়ে আপস করতেও প্রস্তুত। রোববার (২৭ মার্চ) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এমন দাবি করেছেন।-খবর রয়টার্সের
যদিও ইউক্রেনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেছেন, উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো ইউক্রেনকে দুটো ভাগে বিভক্ত করতে চাচ্ছে রাশিয়া।
একটি ভিডিও কলের মাধ্যমে রাশিয়ার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, নিরাপত্তা জিম্মা, নিরপেক্ষতা ও আমাদের রাষ্ট্রের অপারমাণবিক অবস্থা, আমরা এসব কিছু মেনে নিতে প্রস্তুত।
নিরপেক্ষ অবস্থান মেনে নিতে রাজি হলেও এ রকম চুক্তিতে তৃতীয় পক্ষগুলোর জিম্মা ও গণভোটের আয়োজনের কথা বলছেন জেলেনস্কি।
৯০ মিনিটের এই ভিডিও কলে রুশ ভাষায় তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার অভিযানে ইউক্রেনের রুশভাষীরাও বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন। চেচনিয়ায় রাশিয়ার যুদ্ধের চেয়েও এতে আরও বড় ক্ষতি হয়েছে।
তবে দেশের বেসামরিকীকরণসহ রাশিয়ার আরও কিছু দাবি নিয়ে আলোচনা করতে অস্বীকার করেছেন ইউক্রেন বলে জানান জেলেনস্কি।
এ সময়ে পূর্বাঞ্চলীয় অবরুদ্ধ শহর মারিয়াপুলের ভাগ্য নিয়েও কথা বলেন তিনি। শহরটি কয়েক সপ্তাহ ধরে ঘিরে রেখে অব্যাহত বোমা হামলা চালাচ্ছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। এক সময় সেখানে চার লাখ জনসংখ্যা ছিল।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, শহরের সব প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্দরটি খনন করা হয়েছে। সেখানে যে মানবিক বিপর্যয় দেখা গেছে, তা স্পষ্ট। শহরটিতে খাদ্য, ওষুধ ও পানি প্রবেশ করা অসম্ভব।
এদিকে পূর্ব ইউক্রেনের দুটি বিচ্ছিন্ন প্রজাতন্ত্রের একটির প্রধান লিওনিড পেসেচনিক বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে তার প্রজাতন্ত্রটির একীভূত হওয়া উচিত কিনা, তা জানতে শিগগিরই তিনি একটি গণভোটের আয়োজনের প্রত্যাশা করছেন।
তিনি বলেন, আমি মনে করি, রুশ ফেডারেশনের সঙ্গে একীভূত হওয়ার অনুকূলেই ভোট পড়বে। কারণ তার ভাষায়, অঞ্চলটির লোকজন গেল আটবছর ধরে অব্যাহত গোলাবর্ষণের মধ্যে বসবাস করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।
সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, এই গণভোটের মাধ্যমে লুহানস্ক গণপ্রজাতন্ত্রের (এলপিআর) নাগরিকরা তাদের সাংবিধানিক অধিকার ভোগ করবেন। তারা রুশ ফেডারেশনের সঙ্গে একীভূত হবেন কিনা, সেই মত ব্যক্ত করবেন।
২০১৪ সালে দোনেৎসক ও লুহানস্ক নামের দুটি অঞ্চল স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। ইউক্রেনের তখনকার প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে দোনবাসের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন দিয়েছে মস্কো।
ইতিমধ্যে তাদেরকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যদি রাশিয়ার সঙ্গে একীভূত হতে এলপিআরে কোনো ভোট অনুষ্ঠিত হয়, তবে অঞ্চলটি ক্রিমিয়ার পথই অনুসরণ করবে। কারণ ২০১৪ সালের মার্চে এক গণভোটের মাধ্যমে উপদ্বীপটি রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।