পাকিস্তানে ‘দুর্ঘটনাবশত’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, কারিগরি ত্রুটির জন্য এমন ঘটনা ঘটেছে। এটি অবশ্যই গভীর দুঃখজনক।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) এক বিবৃতিতে ভারত জানিয়েছে, ৯ মার্চ, ২০২২, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করার সময় কারিগরি ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনাবশত একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে ভারত সরকার। উচ্চ-পর্যায়ের একটি তদন্তেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা জানতে পেরেছি, ক্ষেপণাস্ত্রটি পাকিস্তানে গিয়ে পড়েছে। ঘটনাটি দুঃখজনক হলেও এখানে স্বস্তির খবর হচ্ছে, এতে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।
নিরস্ত্র সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানে গিয়ে আঘাত হেনেছে বুধবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায়। হরিয়ানার সিরসা থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি উড়ে এসে পাকিস্তানের ভূখণ্ডের ১২৪ কিলোমিটারের মধ্যে পড়েছে।
এটি ছিল চল্লিশ হাজার ফুট উচ্চতার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। এতে ভারত-পাকিস্তান দুই দেশেরই যাত্রীবাহী ফ্লাইট, বেসামরিক নাগরিক ও সম্পদ ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছিল।
পাকিস্তানের আইএসপিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল বাবর ইফতিখার বলেন, পাঞ্জাব প্রদেশের মিয়া চান্নুতে এসে ক্ষেপণাস্ত্রটি পড়েছে। এতে পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করা হয়েছে।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটির আঘাতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। যেখানে সেটি পড়েছে সেখানে কোনো স্পর্শকাতর স্থাপনা নেই।
২০০৫ সালে সই হওয়া ভারত-পাকিস্তানের চুক্তি অনুসারে, দুই দেশই কোনো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করতে চাইলে প্রতিবেশী দেশকে তা অন্তত তিন দিন আগে জানাতে হবে। উৎক্ষেপণ স্থল দুই দেশের আন্তর্জাতিক সীমারেখার চল্লিশ কিলোমিটারের মধ্যে হতে পারবে না। আর পরীক্ষার কোনো প্রভাব যাতে ৭৫ কিলোমিটারের মধ্যে না পড়ে, তাও নিশ্চিত করতে হবে।
বাবর ইফতিখার বলেন, এ দুর্ঘটনা যে কারণেই ঘটুক না কেন, ভারতকে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। এভাবে গর্হিত আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছে পাকিস্তান। ভবিষ্যতে এ রকম ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর মুখপাত্র তারিক জিয়া বলেন, ক্ষেপণাস্ত্রটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার পর আমরা জানতে পারি, এটি সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র।
এ ঘটনায় সামরিক বিশেষজ্ঞরাও ধাঁধায় পড়ে গেছেন। জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক হ্যাপিমন জ্যাকব বলেন, দুইপক্ষই ভালোভাবে বিষয়টি সামাল দিয়েছে। পরমাণু শক্তিধর দুই দেশ পরিপক্কভাবেই তাদের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করছে। কাজেই পাকিস্তানের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হলে দিল্লি উচিত ক্ষতিপূরণ দেওয়া। এরপর দুই প্রতিবেশীর উচিত হবে ঝুঁকি প্রশমনে কাজ করা।