দৈনন্দিনের নানা প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রোগের বিস্তারও। এ সব রোগের ভিড়ে যে রোগটির কথা প্রায়ই আমাদের শুনতে হয় তা হলো হৃদরোগ। অনিয়ন্ত্রিত খাবার আর জীবনযাপনে যেন এ রোগটির কাছে আমরা নিরূপায় হয়ে পড়ছি। বিশ্বের প্রতিটি দেশেই এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছেই।
বাংলাদেশের নারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিজেদের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার তেমন সুযোগ পান না। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিজের উচ্চতা অনুযায়ী আদর্শ ওজন সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। পাশাপাশি নিয়মিত মাপতে হবে নিজের রক্তচাপ, রক্তে শর্করার মাত্রা এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা। এ ছাড়া কার্যকরী কিছু পদক্ষেপ মেনে চললে হৃদরোগের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারে নারীরা।
হৃদরোগ থেকে দূরে থাকতে নারীরা নিয়মিত শরীরচর্চা করতে পারেন। ব্যায়ামের আলাদা করে সময় না পেলে অন্তত হাঁটাচলা বাড়িয়ে দিন। দিনের কোনো এক সময়ে প্রতিদিন ৪০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ভালো রাখে হার্টকেও। প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো নিশ্চিত করুন। পাশাপাশি হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করুন। হাসলে শরীরে এক ধরনের হরমোনের নিঃসরণ হয় যা রক্তচাপ কমায় ও রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় যা হার্টকে সুরক্ষিত রাখে।
মানসিক চাপের কারণে হৃদরোগের আশঙ্কা অনেকটা বেড়ে যায়। দৈনন্দিন জীবনযাপনের ছন্দ, কাজের চাপের মতো নানা কারণে মানসিক চাপ বাড়তে পারে। তবে এ বিষয়ে কিছুটা সচেতন থাকলে খানিকটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে হৃদরোগকে।
নারীরা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে তেলযুক্ত খাবার অতিরিক্ত খাবেন না। বিশেষ করে লাল মাংস ও এতে থাকা চর্বি। এগুলো হার্টের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। স্যাচুরেটেড ফ্যাট আছে এমন তেল যেমন এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল মাসে ১ লিটার খেতে পারেন। এ ছাড়া ডায়েট মেন্যুতে রাখতে পারেন প্রচুর সবুজ শাক সবজি আর রঙির ফলমূল। হার্টকে ভালো রাখতে বিভিন্ন ধরনের বাদামও খেতে পারেন।
হৃদরোগ থেকে বাঁচতে নিয়মিত রক্তচাপ, ওজন, রক্তের পরীক্ষা, কোলেস্টেরলের মাত্রা, কিডনি, লিভার এবং থাইরয়েড ফাংশনসহ রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা এবং ইসিজি নিয়মিত করা উচিত। পরীক্ষায় হৃদরোগ ধরা পড়লে দেরি না করে প্রশিক্ষিত একজন কার্ডিওলজিস্টের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
সূত্র: আনন্দবাজার