মস্কোর সঙ্গে বেইজিংয়ের গভীর সম্পর্ক এবং এর ক্রেমলিনপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি বিশেষ করে চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া সংকটে যা দৃশ্যমান হচ্ছে তাতে ইসরায়েলকে চীন-রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র জোটের মধ্যে যে কোনো এক পক্ষ বেছে নিতে হতে পারে। যা ইসরায়েলের জন্য একধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। সার্জিও রেস্তেলি নামে একজন গবেষক টাইমস অব ইসরায়েলে এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছেন।
টাইমস অব ইসরায়েলের ব্লগে রেস্তেলি লিখেছেন, চীন ও রাশিয়ার মধ্যে যে অকৃত্রিম বন্ধুত্ব রয়েছে তা ফেব্রুয়ারিতে পুতিন যখন বেইজিংয়ে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করেছিল তখন ভালোভাবে বোঝা যায়। এছাড়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এবং সাধারণ পরিষদে রাশিয়ার নিন্দা প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল চীন।
যাই হোক, ইউক্রেন-রাশিয়া সংকটে চীনের নীরবতার কারণ তার মূল ভূখণ্ডের অংশ হিসাবে তাইওয়ান এবং হংকংকে দাবি করার সময় অন্য দেশ যেন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে। চীন যদি সামরিক প্রভাব খাটিয়ে অঞ্চলটিকে দখলে নিতে চায়, তখন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা একইরকম কিংবা তার চেয়ে বেশি প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। চীনের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রকাশ, নিষেধাজ্ঞা প্রদান কিংবা সাংস্কৃতিক আয়োজন থেকে দেশটিকে বাদ দেওয়া হতে পারে।
উল্লেখ্য, চীন বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্পের অংশ হিসাবে ইউক্রেনের প্রকল্পগুলোতে কয়েক বছর ধরে শ্রম এবং বিনিয়োগ করেছে। যা তার বর্তমান অবস্থানের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
রেস্তেলি তার ব্লগে লিখেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার উপর যেসব নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে সেসব থেকে চীন বিরত থাকায় এবং রাশিয়ান তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলোর শেয়ার কেনা, মাস্টারকার্ড এবং ভিসা প্রতিস্থাপনের জন্য ইউনিয়নপে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া এসব কারণে বিশ্বাস অর্জনের জন্য ব্যাপক ব্যয় হচ্ছে চীনের।
তিনি আরও বলেন, যদিও এটি বারবার ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কোয়াড গঠনকে চ্যালেঞ্জ করেছে, তবে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মার্কিন স্বার্থের বিরুদ্ধে চীন-রাশিয়া-পাকিস্তান ত্রিদেশীয় জোট বিকাশের প্রচেষ্টা বলে মনে হচ্ছে।
তবে রাশিয়ার পক্ষ বেছে নেওয়ার ফলে বিশ্ব সম্প্রদায়ের উপর চীনের প্রভাব পড়তে পারে। ইউক্রেন এবং ইউরোপের বাকি অংশের সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্কের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি ‘ড্রাগন-ভালুক’ এই নতুন জোট ইসরায়েলের জন্যও একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট ইতোমধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট মধ্যস্থতার জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছেন। কারণ তার দেশের স্বার্থ অভ্যন্তরীণভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন উভয়ের সাথে জড়িত।
সূত্র: এএনআই