কক্সবাজার আল ফুয়াদ হাসপাতালে ভুল রিপোর্ট : দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

দেশজুড়ে

মার্চ ১৬, ২০২২ ৩:২৮ অপরাহ্ণ

এস এম হুমায়ুন কবির, স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

সিটি স্ক্যান প্রতিবেদন ভুলের কারণে সঠিক চিকিৎসাসেবা না পেয়ে বাবার মৃত্যু হয়েছে দাবি করে কক্সবাজারে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মিনারুল কবির আল আমিন নামের এক আইনজীবী।

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবুল মনসুর সিদ্দিকীর আদালতে এ মামলাটি দায়ের করা হয়। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিতে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।

দুই চিকিৎসক হলেন- কক্সবাজার ফুয়াদ আল খতীব হাসপাতালের পরিচালক ডা. শাহ আলম এবং রেডিওলজি বিশেষজ্ঞ ডা. ওসমানুর রশীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মিনারুল কবির আল আমিন নামের এক আইনজীবি।

মামলার বাদী আল আমিন কক্সবাজার শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের লাইট হাউজ পাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত মৌলানা আলমগীরের ছেলে। বাদীর আইনজীবী মোহাম্মদ ইমরুল কায়েস বলেন, যদি সঠিক সময়ে সঠিক সিটি স্ক্যান রিপোর্ট পাওয়া যেত তবে, অকালে আমার মক্কেলের বাবার মৃত্যু হতো না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা আর দায়িত্বহীনতা এর জন্য দায়ী।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গেল বছরের ৬ অক্টোবর সকালে তার পিতা মৌলানা আলমগীর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে সিসিইউতে ভর্তি করানো হয়। পরে বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি সিটি স্ক্যান করে রিপোর্ট দেখার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক সৌরভ। কিন্তু হাসপাতালের সিটি স্ক্যান সেবা না পেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শে ফুয়াদ আল খতীব হাসপাতালে নিয়ে সিটি স্ক্যান করা হয়। বিকেল অনুমানিক তিনটার দিকে ডা. ওসমানুর রশীদ স্বাক্ষরিত একটি রিপোর্ট দেন তারা।

রিপোর্টে বাদীর অসুস্থ পিতার গুরুতর কিছু হয়নি, ব্রেইনে কোন সমস্যা নেই বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু তারপরও বাদীর পিতার সুস্থতার কোনো লক্ষণ নেই দেখে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও আইসিইউতে ভর্তি দিয়ে সিটি স্ক্যানসহ বেশকিছু পরীক্ষা দেন চিকিৎসক। পরীক্ষার রিপোর্ট পেয়ে জানা যায় রোগীর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এরপর চট্টগ্রাম থেকে রোগীকে ঢাকা রেফার করা হলে সেখানেও একই পরীক্ষা দেয় চিকিৎসকরা। অথচ কক্সবাজারের বেসরকারি হাসপাতাল আল ফুয়াদের প্রতিবেদনে কোন অসুস্থতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এতে যথাযথ সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন রোগী।

বাদী আল আমিন বলেন, আল ফুয়াদের ভুল রিপোর্টের কারণে সঠিক সময়ে যথাযথ চিকিৎসা পাননি আমার বাবা। পরে আমার বাবাকে আরো উন্নত চিকিৎসা সেবা নিতে ঢাকার শেরে বাংলা নিউরো মেডিকেল সাইন্স হাসপাতালে রেফার করে। সেখানেও একই পরীক্ষা করা হয়। তাদের রিপোর্টেও মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। তবে যথাসময়ে এ বিষয়টি ধরা পড়লে বাবাকে বাঁচানো যেত। এটি মূলত আল ফুয়াদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর লোভের কারণে হয়েছে।

ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতালের পরিচালক ডা. শাহ আলম মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় তার সাথে কথা বলতে না পেরে তার ছোট ভাই সুলতান আহমদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ডা. শাহা আলমের অপারেশন হয়েছে। তিনি সম্পূর্ণ বিশ্রামে আছেন। সূত্র-মহানগর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *