এক এক সময় এক এক ধরনের মন্তব্য করে নিয়মিত আলোচনায় থাকছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়ার সামরিক অভিযানের মুখে দেশটিতে যখন মানবিক বিপর্যয় চরমে, তখনো থেমে নেই তিনি। কখনো সমঝোতা তো, কখনো বলছেন শঙ্কার কথা। এবার তেমনই এক শঙ্কা প্রকাশ করলেন জেলেনস্কি।
আগামী দিনগুলোতে রাশিয়া ইউরোপের অনেক দেশের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেনে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট। একই সঙ্গে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর কাছ থেকে আরও বেশি সহযোগিতা চেয়ে জেলেনস্কি বলেছেন, ন্যাটোর সামরিক সক্ষমতার অন্তত এক ভাগ দিয়ে সহযোগিতা করলেও রাশিয়াকে প্রতিহত করা সম্ভব হবে। তবে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ভলোদিমিরি জেলেনস্কির এ ধরনের মন্তব্য চলমান সংকট সমাধানের পরিবর্তে তা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। কারণ এমন উস্কানিমূলক মন্তব্য খুব সহজেই রাশিয়াকে ক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে। খবর বিবিসি’র।
এদিকে, প্রতিনিয়ত বাড়ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তীব্রতা। ইউক্রেনের খারকিভ শহরে রুশ বাহিনীর বোমা হামলায় অন্তত ৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১৫ জন। রাজধানী কিয়েভের কাছে গোলাবর্ষণেও বেশ কয়েকটি স্থাপনা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। অন্যদিকে, পাল্টা হামলায় বারদিয়ান্সক বন্দরে রুশ বাহিনীর বৃহত্তম যুদ্ধজাহাজ গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবি করেছে ইউক্রেন। কিয়েভ বলছে, ‘অর্স্ক’নামে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ওই যুদ্ধজাহাজটি ধ্বংস করে দিয়েছে ইউক্রেনীয় সেনারা। জাহাজে ২০টি ট্যাংক, ৪৫টি সাঁজোয়া যান ও চার শতাধিক সেনা বহনের সক্ষমতা ছিল বলে দাবি কিয়েভের। তবে এ হামলার পর বন্দরটির আশপাশে কয়েক হাজার ইউক্রেনীয় আটকা পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে, অভিযানের চার দিনের মাথায় অবরুদ্ধ মারিউপোলের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত বন্দর বারদিয়ান্সক নিয়ন্ত্রণে নেয় রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। সরঞ্জাম আনা-নেওয়ার ঘাঁটি হিসেবে বন্দরটি ব্যবহার করত রাশিয়া।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগুনে আরও একবার ঘি ঢাললেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে না জড়ানোর বিষয়টি স্পষ্ট করলেও, ইউক্রেনের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে বদ্ধপরিকর যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিকে অন্তত ১০০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন বাইডেন। বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর এক জরুরি সম্মেলনের আগে সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিয়ে এ ঘোষণা দেন তিনি। এর আগে, অন্তত এক লাখ ইউক্রেনীয় শরণার্থীকে নিজেদের দেশে আশ্রয় দেবে বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্র।